ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডিয়ান ফেসবুক ব্যবহারকারীদের চেহারা চেনার প্রযুক্তি ব্যবহারের আহ্বান জানাচ্ছে ফেসবুক। নতুন এই প্রযুক্তির উদ্দেশ্য, যাতে কোনো ছবি বা ভিডিওতে সহজেই তাদের চিহ্নিত করা যায়।
২০১১ সালে কানাডার বাইরের ব্যবহারকারীদের জন্য ফেসবুক ফেস-ম্যাচিং প্রযুক্তি ব্যবহার করতে শুরু করে। কিন্তু তখন ইইউ দেশসমূহে এটি ব্যবহার বন্ধ করে দেয়া হয় নিয়ম ও নিরাপত্তা প্রচারকদের কারণে।
নতুন তথ্য নিরাপত্তা আইন করার আগেই ব্যবহারকারীদের জন্য নতুন এই অপশন নিয়ে আসলো ফেসবুক। এই পদক্ষেপও বেশ সমালোচনার শিকার হবে বলে মনে করছেন অনেকে।
সম্প্রতি কিছু তথ্য নিরাপত্তা স্ক্যান্ডালে জড়িয়ে পড়েছে ফেসবুক। সেখানে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য রাজনৈতিক পরামর্শক সংস্থা ক্যাম্ব্রিজ অ্যানালাইটিকার হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহারকারীদের অনুমতি ছাড়া চেহারা চিহ্নিতকরণ প্রযুক্তি ব্যবহার করে আবারও মামলার মধ্যে পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা গ্রুপ বিগ ব্রাদার ওয়াচের ডিরেক্টর সিল্কি কার্লো মন্তব্য করেন, এভাবে বায়োমেট্রিক পরিচিতি ও ট্র্যাকিং করার পদ্ধতি ফেসবুক ব্যবহারকারীদের আরো তথ্য ঝুঁকিতে ফেলবে। ফেসবুক যে আইনের শ্রদ্ধা করা শিখেছে সেটাই এখন তাদের প্রমাণ করতে হবে। তাদের নজরদারি দক্ষতা আর কত গভীরে যেতে পারে সেটা প্রমাণ করা তাদের কাজ নয়।
ইইউ এবং কানাডার বাইরের ফেসবুক ব্যবহারকারীরা আগামী কয়েক মাস একই ধরনের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে দিয়ে যাবে। তারা যতক্ষণ না পদ্ধতিটি থেকে বেরিয়ে যাবে ততদিন এই চেহারা চিহ্নিতকরণ প্রযুক্তির অধীনে থাকবে তারা।
চেহারা চিহ্নিতকরণ প্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের প্রত্যেককে একটি করে টেমপ্লেট দেয়া হবে। এটা নির্ধারণ করা হবে তারা প্রোফাইল পিকচারে যে ছবিটি দিয়েছে সেটা এবং অন্যান্য যেসব ছবিতে তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে সেসব ছবি বিচার বিশ্লেষণ করে।
কোনো ট্যাগ না করা ছবিগুলোতেও তখন টেমপ্লেট বিশ্লেষণ করা হবে। এবং কোনো মিল পেলে ফেসবুক যে ছবিটি পোস্ট করেছে এবং যার সঙ্গে মিলছে তাদের সম্পর্কযুক্ত নাম ট্যাগ করে দিবে। এই প্রযুক্তি যখন কেউ কারো ছবি চুরি করে নিজের প্রোফাইলে ব্যবহার করতে যাবে সেটা নির্ধারণ করতে সাহায্য করবে বলেই দাবি সংস্থাটির।
এই প্রযুক্তি ফেসবুকে নতুন বন্ধু পরামর্শ দিতেও সাহায্য করবে বলে মনে করছে ফেসবুক। এর প্রযুক্তিতে ব্যবহারকারীকে আরো বেশি বিজ্ঞাপনও দেখানো হবে। যেটা ভবিষ্যতে তাকে তার পছন্দসই বিজ্ঞাপন দেখাতে সাহায্য করবে।
শুধু মাত্র ‘অ্যাকসেপ্ট অ্যান্ড কন্টিনিউ’তে ক্লিক করলেই নতুন এই পদ্ধতি কাজ করা শুরু করবে তবে পদ্ধতিটি বন্ধ করতে হলে বেশ গভীরভাবে ‘ম্যানেজ ডাটা সেটিং’য়ে কাজ করতে হবে।
আগের সমস্যার কারণে ফেসবুকের এবার সিদ্ধান্ত ১৮ বছরের কমবয়সী কেউ এই প্রযুক্তিতে যুক্ত হতে পারবে না। আর ব্যবহারকারী যদি তাদের মন বদলে ফেলে তাহলে দ্রুতই তাদের ফেস ডিটেকশন টেমপ্লেট বন্ধ করে দেওয়া হবে।