লিওনেল মেসি যেমন বার্সেলোনায়, রিয়াল মাদ্রিদে সার্জিও রামোসের প্রভাব তারচেয়ে কোনো অংশে কম নয়! সম্ভবত এমন বলাই যায়, অন্তত রিয়ালের দিক থেকে দেখলে। শুধু মাঠের খেলাতেই নয়, নেতা রামোসের অনুপস্থিতি রিয়াল যে অনুভব করে প্রবলভাবে, শাখতার দোনেৎস্কের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নতুন মৌসুম শুরুর পর প্রতিযোগিতাটির সর্বোচ্চবারের চ্যাম্পিয়নরা সেটি বুঝল আবারও।
আলফ্রেডো ডি স্টেফানো স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে রিয়ালকে ৩-২ গোলে হারিয়ে গেছে শাখতার। ইউক্রেনের ক্লাবটির কাছে হারের পর কোচ জিনেদিন জিদান থেকে শুরু করে ক্লাব রিয়ালকে পর্যন্ত ফের ভাবতে হচ্ছে রামোসের বয়স তো ৩৪ হয়ে গেল, তার বিকল্প দাঁড়াল কই!
২০১৮-১৯ মৌসুম থেকে ইউরোপ সেরার মঞ্চে রামোসকে ছাড়া খেলে সর্বশেষ ৮ ম্যাচের ৭টিতেই যে হারতে হয়েছে রিয়ালকে।
ঘরের মাঠে শেষ লিগ ম্যাচে কাদিজের কাছে হারের স্মৃতি নিয়ে নামা রিয়াল প্রথমার্ধেই পিছিয়ে পড়ে ৩-০ ব্যবধানে। সেই ২০০৫ সালে লিওঁর বিপক্ষে সবশেষ প্রথমার্ধে তিন গোল হজম করেছিল তারা, দেড়দশক পর আবারও স্মৃতির ধুলোঝাড়া। আর ঘরের মাঠে প্রথমার্ধে তিন গোল হজম করার স্মৃতি তো আরও আগের, সেই ২০০০ সালে।
মধ্যবিরতির পর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে তিনটি গোল দিলেও রিয়ালের একটি বাতিল হয়ে যায় ভিএআরের সাহায্যে, তাতে সান্ত্বনার ড্রটাও মেলেনি। ম্যাচ শেষে হারের বিশ্লেষণ করতে হচ্ছে কোচ জিদানকে, সঙ্গে দিতে হচ্ছে রামোসকে না খেলানোর যুক্তি।
জিদানের যুক্তির অবশ্য দাম আছে। শনিবার মৌসুমের প্রথম এল ক্ল্যাসিকো। পয়েন্ট টেবিলের সাথে আত্মমর্যাদারও লড়াই বার্সার বিপক্ষে। তাতে যে খুব করে রামোসকে দরকার জিজুর। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তো সবে গ্রুপপর্ব শুরু, ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ থাকে সবসময়ই। কিন্তু লা লিগায় বার্সার কাছে হেরে বসলে বিরাট ক্ষতি। পয়েন্ট তো যাবেই, সঙ্গে বার্সার বিপক্ষে হার সামলে নিতে আরও কয়েকটি ম্যাচে বাজে অবস্থা যায় রিয়াল খেলোয়াড়দের মনোজগতে। বহুমুখী ক্ষতি!
শেষ লিগ ম্যাচে কাদিজের বিপক্ষে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়া রামোসকে তাই বিশ্রামে রেখেছিলেন জিদান। এল ক্ল্যাসিকোর আগে ঝুঁকি নিতে চাননি। ফলাফল, রামোস নেই, রামোস ছাড়া হারের তালিকাটা তাই লম্বা হল আরও একপ্রস্ত।
২০১৮-১৯ মৌসুমে গ্রুপপর্বে সিএসকে মস্কোর বিপক্ষে স্প্যানিশ ডিফেন্ডার ও নেতা রামোসহীন হার দিয়ে যে শুরু রিয়ালের, পরে আয়াক্স, পিএসজি, ম্যানচেস্টার সিটি ঘুরে চলতি মৌসুমে শাখতারের বিপক্ষে সেই বিবর্ণতা বহাল থাকল বার্নাব্যুর রাজাদের।