একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার আর মাত্র একদিন বাকি। আগামীকাল তথা ২৮ নভেম্বর প্রত্যেকটি দলের মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে নির্বাচন কমিশনের কাছে। কিন্তু ড. কামাল হোসেন এর নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এখনো নিজেদের মধ্যে আসন ভাগাভাগি নিয়ে সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেনি।
নিয়মিত রুদ্ধদ্বার বৈঠক চলছে। দাবি-দাওয়া সামনে আসছে। বিতর্ক হচ্ছে। আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু সিদ্ধান্ত পৌঁছানো যাচ্ছে না। ফলে নির্বাচন কমিশনের কাছে দলীয়ভাবেই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
এবিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ড. কামাল হোসেন এর বাসায় মঙ্গলবার সকালে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৈঠক শেষে ড. কামাল হোসেন বলেন, সময় স্বল্পতার কারণে এখন জোটগতভাবে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে না। দলীয়ভাবে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে।
ড. কামাল বলেন, এটা জোটগতভাবে হচ্ছে না। আলাদা আলাদা হচ্ছে। পরে বসে এগুলোকে সমন্বয় করা যাবে।’
তিনি আরো বলেন, সময় স্বল্পতার জন্য এখন দলীয়ভাবে হচ্ছে। তবে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আগেই সব ঠিক হয়ে যাবে।
নির্বাচন কমিশন ছয়টি আসনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত ঐক্যফ্রন্ট মেনে নেবে কিনা প্রশ্নে ড. কামাল হোসেন বলেন, না মেনে নিলে কী করা যাবে? সংসদ নির্বাচন তো এ কারণে আমরা বাদ দেব না। ইভিএম নিয়ে তাদের প্রতিবাদ থাকবে বলেও তিনি জানান।
ঐক্যফ্রন্টের আসন বণ্টন নিয়ে গণফোরাম মহাসচিব মোস্তফা মহসীন মন্টু বলেন, আমাদের মধ্যে কোনো জটিলতা নেই। ৩ ডিসেম্বর এর মধ্যে ঐক্যফ্রন্টের কে কোন আসনে নির্বাচন করবে তা সমাধান হয়ে যাবে। এর আগে দলীয়ভাবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হবে নির্বাচন কমিশনে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের মধ্যে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। যে দলের প্রার্থী যোগ্য সেই দলের প্রার্থীর জন্য আমরা ছাড় দিবো। আমাদের প্রার্থী যোগ্য হলে ওদের বলব ছাড় দিতে। খুব সমাধান হয়ে যাবে।
জানা যায়, ইতোমধ্যে নিজ নিজ দলের মনোনয়ন প্রার্থীদের নিজেদের মনোনয়নপত্র ফাইল করতে বলা হয়েছে। দলীয়ভাবে সকল মনোনয়নপত্র জমা দেয়া হবে।
ঐক্যফ্রন্ট এর সূত্র থেকে জানা যায়, ঐক্যফ্রন্ট এবং ২০ দল মিলিয়ে ৬০টার মতো আসন ছেড়ে দেবে বিএনপি। ঐক্যফ্রন্টকে ২০-২৫টি আসন দেওয়া হতে পারে। তবে কে কোন আসনে নির্বাচন করবে সেটি নিয়ে রয়েছে জটিলতা।
গণফোরামের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, আসন নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে।
বিএনপি প্রথম বলেছিলো অনেক কথা। এই করবে সেই করবে। কিন্তু কথা থাকছে না। এখন যতো সময় যাবে আমাদের আসন সংখ্যা বাড়তে থাকবে। আমাদের অনেক শীর্ষ নেতার আসন এখনো নিশ্চিত হয়নি। যেমন মোস্তফা মহসীন মন্টুর আসনটিও এখনো নিশ্চিত হয়নি। আমাদের মূল নেতাদের আসনগুলোও এখনো ক্লিয়ার হয়নি। যেহেতু ক্লিয়ার হয়নি। এগুলো না হওয়া পযন্ত কোনো সমাধানে আসা যাবে না।
এদিকে নাগরিক ঐক্যকে ৯টি আসন বিএনপির পক্ষ থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
নাগরিক ঐক্যের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, নয়টি আসনের বিষয়ে আমাদের বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। গতকাল রাতে নয়টি আসনের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়।
নাগরিক ঐক্য থেকে মনোনয়ন প্রাপ্তরা হলেন— বগুড়া-২ আসনে মাহমুদুর রহমান মান্না, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে এস এম আকরাম, চাঁদপুর–৩ আসনে ফজলুল হক সরকার, ময়মনসিংহ–২ আসনে এড নজরুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া–৩ আসনে মোবারক হোসেন, সাতক্ষীরা–২ আসনে রবিউল ইসলাম, রংপুর–১ আসনে শাহ মো. রহমতউল্লাহ, রংপুর–৫ আসনে মোফাখখারুল ইসলাম নবাব, বরিশাল–৪ আসনে কে এম নুরুর রহমান ।