সোমবার (১২ মার্চ) ঢাকা থেকে ৭১ জন আরোহী নিয়ে কাঠমান্ডুতে নামার সময় নেপালে বিধ্বস্ত হয়েছে ইউএস বাংলার বিমান। বিমান দুর্ঘটনায় নিভে গেছে সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের তরুণ বৈমানিক প্রিথুলা রশিদের জীবন প্রদীপ। কিন্তু জীবনের বিনিময়ে বীর ওই নারী পাইলট বাঁচিয়ে গেছেন ১০ নেপালি যাত্রীর প্রাণ। এই প্রসঙ্গে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। তিনি লিখেছেন-
“প্রিথুলা রশিদ” কাঠমুন্ডুতে বিধ্বস্ত হওয়া বিমানের #নারী সহকারী বৈমানিক। ইউ এস বাংলা-এর প্রথম নারী বৈমানিক। আমরা খুব সহজেই #নারী শব্দটা বলে ফেলি তাই না? প্রিথুলা আপনার আমার মতোই মানুষ ছিল, আপনার মৃত্যুর সময় যেমন কষ্ট হবে ওর ও ঠিক তাই হয়েছে! কিন্তু ওর আর আপনার মধ্যে একটা পার্থক্য রয়েছে, ও শুধু বৈমানিক নয় একজন সাহসী নারীও বটে।
ভেবে দেখুন তো আপনি কয় তলা উঁচু পর্যন্ত দাড়িয়ে সহসা কাজ করতে পারবেন? ১০/২০/৩০? এই মেয়ে আকাশে ভেসে বেড়ানোর কলিজা রাখে, যেটার যোগ্যতা আপনার আমার নেই। যে মেয়ে তেলাপোকা দেখে ভয় পায় সে মেয়ে একসময় সন্তানের জন্য আগুনে লাফ দিতেও পারে, এটা একটা নারীই পারে।
পাইলটদের সম্পর্কে কতটুকু জানেন আপনি? একটা কেবিন ক্রু এর জীবন কেমন হয় জানেন? একটা মেয়ে নিত্য তার জীবন হাতে নিয়ে যাত্রীদের সেবা করে নিজের পরিবারকে রেখে দেশান্তর হয়,একটা অনিশ্চয়তা এই হয়তো দুর্ঘটনায় শেষ হতে পারে জীবন,ভেবে দেখেছেন? একটা পাইলট কতটা মানুষিক চাপ মাথায় রাখে যখন সে আকাশে ওড়ে প্রত্যেকটা যাত্রীর জানমালের দায়িত্ব তার হাতে থাকে, কখনো ২ জন মানুষের জীবন এর দায়িত্ব নিয়ে দেখেছেন?
প্রিথুলা চাইলে হয়তো নিজে বাঁচতে পারতো, পাইলটদের সে ব্যাকআপটা থাকে। কিন্তু যাত্রীদের কথা ভেবে একটা পাইলট সর্বাত্মক চেষ্টা করে প্রত্যেকটা জীবন বাঁচাতে। প্রিথুলা নিজের জীবন বাজি রেখে ১০ জন যাত্রীর জীবন বাঁচিয়েছেন, জ্বী হ্যাঁ, তিনি একজন নারী! একজন নারী বলেই নিজেকে বিসর্জন দিতে পেরেছেন। নেপাল তাকে “ডটার অফ বাংলাদেশ” বলে সম্মান দিচ্ছে আর আমাদের দেশের লোক জনের মন্তব্য! #নারী শব্দটা উচ্চারণ করার আগে যোগ্যতা অর্জন করে তারপর উচ্চারণ করবেন। #নারী যদি আপনার মতো কাউকে জন্ম দিতে পারে, নারী সব পারে। ভারতের নির্জা একজন সাহসী নারী এর ঘটনাটা হয়তো খুব কম সংখ্যক মানুষ জানে,
দয়া করে জেনে নিবেন একজন পাইলটের জীবন কেমন, একজন কেবিন ক্রু কিভাবে কাজ করে।মৃত্যুর মুখোমুখি এরা প্রতিনিয়তই হয়। হয়ত বলতে পারেন সবখানেই রিস্ক আছে, তা আছে তবে বৈমানিক হওয়া টা মুখের কথা নয়।
বাংলাদেশে খুব কম সংখ্যক নারী পাইলট আছে, আমাদের গর্ব হওয়া উচিত,এসব মেয়েরা আকাশ ছুঁতে পারছে। এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে দেশটাকে। কিছু বললেই নারীবাদী মন্তব্য করার আগে ভাবুন ১০ বার, কতটা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে একটা নারী ওসব কর্মক্ষেত্রে পদার্পণ করে।
বাংলাদেশ এবং বিশ্বের সমস্ত বৈমানিকদের কেবিন ক্রু দের তাদের সাহসিকতার জন্য সালাম জানাই। সালাম জানাই সাহসী নারী প্রিথুলা রশিদ কে…..! দ্যা ডটার অফ বাংলাদেশ।