চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

আসতে পারে দীর্ঘ অবরোধের ঘোষণা

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জনসভা আজ

ক্ষমতাসীন জোটের সঙ্গে সংলাপ চলার মধ্যেই রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জনসভা হচ্ছে আজ। আত্মপ্রকাশের পর ঢাকার বাইরে দুটি জনসভা করা ছাড়া আর কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি দেয়নি তারা। ধারণা করা হচ্ছে, এ জনসভা থেকেই দাবি আদায়ে চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।        

এরই মধ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, এ জনসভা থেকে বড় ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

কোন ধরনের কর্মসূচি দেয়া হতে পারে – এমন প্রশ্নে ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা সুলতান মুহাম্মদ মনসুর চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, সরকারকে দাবি মানতে হবে। তাই বড় ধরনের কর্মসূচি আসবে।

তবে হরতাল, অবরোধের মতো কোনো কর্মসূচি কি আসতে পারে – এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কোনো কর্মসূচি আসবে বলে মনে হয় না। ড. কামাল হোসেন যেখানে আছেন সেখানে এ ধরনের কোনো কর্মসূচি আসবে না। আপনারা আগামীকালই সব জানতে পারবেন। তবে ব্যতিক্রমী কর্মসূচিই আসবে।’

এরই মধ্যে সোমবার ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছেন কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি, বঙ্গবীর খ্যাত কাদের সিদ্দিকী।

তিনি ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘আজ থেকে সকল মেধা, সাহস, শক্তি নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে থাকব৷ একাত্তরে ইয়াহিয়া খান যেভাবে আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলে তেমনিভাবে আজকের স্বৈরাচারকেও আত্মসমর্পণ করতে হবে।’

একই মঞ্চে ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা আ স ম আব্দুর রব হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আমাদের দাবি মেনে নিতে হবে। আপনাদের পায়ের তলায় মাটি নাই। কিসের ইভিএম? ভোট চুরির জন্য? ইভিএম ব্যবহার করা যাবে না। নির্বাচন করতে চাইলে দাবি মানতে হবে। আর যদি নির্বাচন না করতে চান এবং দেশকে সংঘাতের দিকে নিয়ে যেতে চান, তাহলে সকল দায় সরকারকে নিতে হবে।’

এ সময় কাদের সিদ্দিকীর হাত ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা দুই ভাই এক হয়েছি। একসাথে লড়াই করব আমরা৷ এই লড়াই গণতন্ত্রের লড়াই৷ এই লড়াই চলবে।’

রব বলেন, ‘আমরা ঢাকায় জনসভা করব। দেশের সব বিভাগ, জেলায় যাব। মানুষকে নিয়ে লড়াই করব।’

এর কিছুদিন আগে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক প্রশ্নের জবাবে চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেছিলেন, ‘সংলাপে সমাধান না আসলে এমন কঠোর আন্দোলন দেয়া হবে যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা থাকবে না সরকারের।’

এসব বক্তব্য থেকে ধারণা করা হচ্ছে যে, ঐক্যফ্রন্ট লংমার্চ-রোডমার্চের মতো কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে। এমনকি দীর্ঘ অবরোধেরও ঘোষণা দিতে পারে৷

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐক্যফ্রন্টের এক নেতার মতে, রাজশাহীতে জনসভার কর্মসূচিটি পরিবর্তন করে রোডমার্চের ঘোষণা দেয়া হবে এবং একই কর্মসূচি দেয়া হবে বরিশালেও, সেটি লংমার্চও হতে পারে। সংলাপ ব্যর্থ হলে ৭ নভেম্বরের পর হরতাল-অবরোধের মতো দেশ অচলের কর্মসূচিও দেয়া হতে পারে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং বৈঠকে আন্দোলন নিয়ে বড় আকারে রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে বলে জানান ওই নেতা।

কাদের সিদ্দিকী ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয়ায় আন্দোলনের শক্তি বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন ঐক্যের অনেক নেতা। আজকের জনসভায় বিপুল লোক সমাগম হবে বলে আশা করছেন তারা।

আজকের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন ড. কামাল হোসেন। জনসভায় অংশ নেয়ার কথা রয়েছে কাদের সিদ্দিকীরও।

এছাড়া বিএনপি মহাসচি মির্জা ফখরুল ইসলাম অন্যান্য জনসভার মতো প্রধান বক্তব্যর বক্তব্য রাখতে পারেন। বক্তব্য রাখবেন আ স ম আব্দুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, ড. জাফরউল্লাহ চৌধুরী, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গণফোরামের মোস্তফা মহসীন মন্টুসহ অনেক শীর্ষ নেতা।

গত ১৩ অক্টোবর ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপি, গণফোরাম, জেএসডি এবং নাগরিক ঐক্যের সমন্বয়ে আত্মপ্রকাশ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

এরই মধ্যে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনসহ ঘোষিত ৭ দফা দাবি ও ১১টি লক্ষ্যে আন্দোলন করছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

সম্প্রতি এ জোট আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়ে সংলাপে অংশ নেন

গত বৃহস্পতিবার গণভবনে সেই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সেই সংলাপের পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট দাবি করে, বিশেষ কোনো সমাধান হয়নি। আন্দোলন চলবে।

এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় সংলাপের জন্য বুধবার দিন নির্ধারণ করা হয়েছে