বাজারে কোরবানির পশুর ব্যাপক সংকট, দেশে ভারতীয় পশু আসছে না- বহুল প্রচারিত এই তথ্য মোটেই ঠিক নয়। চ্যানেল আইয়ের অনুসন্ধানে দেখা গেছে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তের বহু পয়েন্ট দিয়ে হাজার হাজার গবাদি পশু প্রবেশ করছে বাংলাদেশ সীমানায়। ভারতীয় ব্যবসায়ীরাই পশু পৌঁছে দিচ্ছে বাংলাদেশ সীমান্তে।
রাজশাহী সীমান্ত এলাকায় পশুর কারবার দেখার পর এবারের লক্ষ্য ছিলো চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত। শেষ বিকেলে প্রথমে গন্তব্যস্থল সীমান্ত শহর চাঁপাইনবাবগঞ্জ। পথে পথেই সন্ধ্যা গড়ায়, রাতের মহাসড়কে শুধুই গরু বোঝাই ট্রাক। শহর শেষে বাকের আলী সীমান্তে পৌঁছাতে পৌঁছাতে সুনসান নিশুতি রাত, প্রায় পৌনে ১টা।
দু’টো পর্যন্ত কোনো মতে এগিয়ে যায় গাড়ি। তারপর আর গাড়ি চলার পথ নেই, পা চালিয়েই এগিয়ে যেতে হলো পদ্মা পাড়ের দিকে। এ এক অভাবনীয় দৃশ্য, চারিদিকে সুনসান নীরবতা। ঘুটঘুটে অন্ধকারে শ্যালো নৌকার আওয়াজ কানে আসতে লাগলো। ক্যামেরার আলো ফেলতেই দেখলাম গন্তব্যে পৌঁছে গেছি।
নদীতে গরুভর্তি নৌকা, ধীরে ধীরে একের পর এক এসে থামছে পাড়ের কাছে। ব্যবসায়ীদের হাঁকডাকে গরুর দল একের পর এক ঝাঁপিয়ে পড়ছে নদীতে পাড়েরই কাছে, তারপর একে একে উঠে আসছে পাড়ে। সেগুলো জড়ো করা হয় খাটালে। মধ্যরাতে এই দৃশ্য দেখায় আমাদের সঙ্গী ছিলো বিজিবি।
ওই রাতের আঁধারে গরু ব্যবসায়ীরা খুব একটা কথা বলতে চাইলেন না। এটুকুই জানালেন, সীমান্ত থেকেই ভারতীয় ব্যবসায়ীরা গরু পৌঁছে দিচ্ছে এবং প্রচুর ভারতীয় গরু বাংলাদেশে আসছে। কখনো তার সংখ্যা ৩০, কখনো ৪০, কখনো বা ৫০।
সেই রাতেই কথা হল চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিজিবি’র শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিজিবি’র ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর মিন্নাত আলী জানান, কোরবানি নিয়ে আশংঙ্কার কোন কারণ নেই।
তিনি বলেন, ভারত থেকে গরু আসতে বাধা দেওয়া হবে না। কিন্তু বাংলাদেশের রাখাল বা অন্য কোনো ব্যক্তি যেন সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে।
ভারত থেকে কোরবানির ঈদের আগ পর্যন্ত গরু আসতে থাকবে বলেই জানান ভারপ্রাপ্ত বিজিবি অধিনায়ক।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন করিডোর দিয়ে আসা সীমান্তের খাটালগুলোও ভর্তি ভারতীয় গবাদী পশুতে।