আগামী ম্যাচেই দলে ফিরতে পারেন অলরাউন্ডার নাসির হোসেন। এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।অধিনায়ক জানান, সামনেই সুযোগ আসতে পারে নাসিরের।
ঘরের মাঠের এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব মিলিয়ে টাইগারদের খেলা সর্বশেষ ৯টি টি-২০ ম্যাচের মাত্র দুটিতে মূল একাদশে ছিলেন নাসির। এশিয়া কাপের ফাইনালের পর বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে দলে ছিলেন তিনি।
দলের অন্যতম সেরা ‘ফিনিশার’ নাসির দলে না থাকায় প্রশ্ন ক্রিকেট ভক্তদের। তাদের একটাই প্রশ্ন, নাসির হোসেন কেনো মূল একাদশে নেই? ভক্তদের অনেকেই বলছেন, আমরা কোচের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করছি না। সানির জায়গায় সজিব খেলবেন ঠিক আছে। ভ্রমণের কারণে ক্লান্ত হইলেও বিকল্প নাই। কিন্তু, ক্লান্ত শুভাগত হোম কেনো? যেখানে নাসির আগের থেকেই দলের সঙ্গে আছেন।
সোমবার ব্যাঙ্গালুরুতে অস্ট্রেলিয়া বিপক্ষে হারের পর সংবাদ সম্মেলনেও নাসিরকে দলে না রাখা নিয়ে প্রশ্ন আসে। জবাবে অধিনায়ক মাশরাফি জানান, সামনেই সুযোগ আসতে পারে নাসিরের।
মাশরাফি বলেন, ‘নাসির অবশ্যই আমাদের কম্বিনেশনে আছে, সব সময় থাকবেও। একাদশে রাখা হচ্ছে না কারণ কম্বিনেশন। বিভিন্ন ভাবে কম্বিনেশনের ভাবনায় শেষ পর্যন্ত সুযোগটা হয়ে উঠছে না। আশা করি, সামনেই সুযোগ পাবে। আর পেলে ভালো খেলবে।’
স্পিন বলের সাথে দুরন্ত এক ফিল্ডার নাসির। দলের ব্যাটিং অর্ডারে সাত নম্বরের উপরে খুব কম সময়ই ব্যাট হাতে নামতে পেরেছেন। যে পজিসনে নামলে বড় স্কোর গড়ার সময় থাকে না। তার পরও ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে অসাধারণ ফিনিশিংয়ের জন্য নাসিরকে অনেকেই অস্ট্রেলিয়ার মাইকেল বেভান, মাইকেল হাসি, সাউথ আফ্রিকার ল্যান্স ক্লুজনার, ভারতের আছে মহেন্দ্র সিং ধোনি, পাকিস্তানের আবদুল রাজ্জাক, উমর আকমলের সঙ্গে তুলনা করেন।
তাকে বলা হয় বাংলাদেশের রান তাড়ার ‘আনসাং হিরো’ও। আর এই ক্ষেত্রে পরিসংখ্যানে ওপরে উল্লেখিতদের চাইতে একটা জায়গায় এগিয়ে নাসির। ফিনিশারের ভূমিকায় এগিয়ে আছেন ওপরের সব কটি নাম থেকেই। তিনি দলে ছিলেন এবং বাংলাদেশের জেতা ম্যাচে দ্বিতীয় ইনিংসে নাসিরের ব্যাটিং গড় ১১৭। ধোনির গড় এখানে ১০১ দশমিক২৮। যেখানে আকমলের ৮৯ দশমিক ৮০, মাইকেল বেভানের ৮৬ দশমিক ২৮ ও মাইক হাসির ৭৪ দশমিক ১০।
২০১২ এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে ৫৮ বলে ৫৪, পরের ম্যাচেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৬১ বলে অপরাজিত ৩৬, এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের ম্যাচে অপরাজিত ৩৯, পাল্লেকেলেতে শ্রীলঙ্কাকে হারানোর ম্যাচে ২৭ বলে অপরাজিত ৩৩ রান। এরকম ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ আরো ইনিংস রয়েছে নাসিরের।
শুধু জাতীয় দল নয়, এই কাজে তিনি অভ্যস্ত বলে এর আগে নিজেই জানিয়েছিলেন নাসির। ‘অনূর্ধ্ব-১৩ বা অনূর্ধ্ব-১৫ দলে থাকতেও এই ভূমিকা পালন করেছেন তিনি।
যে ব্যাঙ্গালুরুতে নাসিরকে মাঠে নামায়নি বাংলাদেশ। গত সেপ্টেম্বরেই বাংলাদেশ ‘এ’ দলের ম্যাজিক দেখিয়েছিলেন তিনি। ৯৪ বলে সেঞ্চুরি তুলে ৯৬ বলে অপরাজিত ১০২ রানের পর বল হাতে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন। তার অলরাউন্ড পারফর্মেন্সে ভারতকে ৬৫ রানে হারিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ।
চেন্নাস্বামীর সেই ম্যাচের পর ‘উইজডেন ইন্ডিয়া’ এক প্রতিবেদনে নাসিরকে তুলনা করেছিল স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস, গ্রায়েম হিক, পল কলিংউড, শহীদ আফ্রিদি, সৌরভ গাঙ্গুলি, স্কট স্টাইরিস আর আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে।