২৬ এপ্রিল মুক্তি পেল ইমপ্রেস টেলিফিল্মের প্রযোজনা ও নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর পরিচালনায় বহুল প্রতীক্ষিত ছবি ‘আলফা’। ‘একাত্তরের যীশু’ ও ‘গেরিলা’র পর এটি নির্মাতার তৃতীয় ছবি। এরইমধ্যে ছবিটি নিয়ে কথা বলছেন চলচ্চিত্র আলোচক, নবীন-প্রবীন নির্মাতা, কবি-সাহিত্যিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা। বেশির ভাগই ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ‘আলফা’র।
রাজধানীতে তিনটি প্রেক্ষাগৃহ ও চট্টগ্রামে একটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ‘আলফা’। শুক্রবার ছবিটি দেখার পর আলফা নিয়ে সোশাল মিডিয়াতে নিজের অনুভূতির কথা জানিয়েছেন অভিনেতা আনন্দ খালেদ। আলফা নিয়ে তার অনুভূতি হুবুহু দেয়া হলো চ্যানেল আই অনলাইনের পাঠকদের জন্য:
‘আলফা’ দেখলাম। অত্যন্ত সাহসী একটি স্বাধীন চলচ্চিত্র। প্রধান চরিত্র চিত্রশিল্পী আলফার নির্লিপ্ত গভীর চাহনি ও যোগীদের মত আসন করে ধ্যান করা দেখে প্রথমে ভেবেছিলাম এই কঠিন পৃথিবীর অসহনীয় আঘাতগুলো তাকে স্পর্শ করবে না। কিন্তু ধ্যানী শিল্পী শেষ পর্যন্ত নির্বিকার থাকতে পারেননি। বেওয়ারিশ মানুষ, হারিয়ে যাওয়া মানুষের জন্য তার পরম মমতা। তার হৃদয়ের রক্তক্ষরণ দর্শকদের হৃদয়েও মমতা তৈরী করেছে সেই মানুষগুলোর জন্য। যাদের কথা সবাই ভুলে যেতে চায়। অফ-স্ক্রিন সাউন্ড এর দারুণ বুদ্ধিদীপ্ত ব্যবহার দেখলাম/শুনলাম এই সিনেমায়। যা বাংলা সিনেমায় বিরল। অত্যন্ত সূক্ষ্ণভাবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ দেওয়া হয়েছে অফ-স্ক্রিন সাউন্ড ব্যবহার করে। সিনেমাটোগ্রাফি অসাধারণ। বিশেষ করে সিনেমার শেষ দৃশ্যগুলি একেবারে মাথায় গেঁথে গেছে। কিছুতেই নামাতে পারছি না মাথা থেকে। আলফা চরিত্রে আলমগীর কবীরের চোখের চাহনিটা আমাকে ভীষণ আলোড়িত করেছে। কী নির্লিপ্ত , কী গভীর , কী স্থির। মনে ঘোর সৃষ্টি করে। সিনেমায় অল্প উপস্থিতি ইশরাত নিশাতের। কিন্তু ঐ অতি অল্প সময়েই। ‘সোলায়মানের মা’ চরিত্রে উনার অভিনয়টা খুব ভাল লেগেছে। বাংলার সেই চিরন্তন মা। যাকে সবার ‘মা’ ডাকতে ইচ্ছা করবে।
মহররমের মিছিল থেকে শুরু করে কীর্তন, বাংলার লোক সংস্কৃতির উপাদানগুলোর উপস্থিতি সিনেমায় একেবারেই আরোপিত মনে হয় নি বরং সিনেমাটির মূল যে সুর ‘মানবতা – সহমর্মিতা – মানবপ্রেম – জীবপ্রেম’ এগুলোর সাথে ঐ লোকজ উপাদানগুলো কোথায় যেন মিশে যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত এই সিনেমা সম্পর্কে একটা কথা বলতেই হবে, এই সিনেমাটি এই সময়ের অন্যতম একটি সাহসী সিনেমা…। আশা করি , আপনারা সিনেমাটি দেখলে, আমার সাথে এই ব্যাপারে সবাই একমত হবেন।ব্যক্তিগতভাবে আমি এই সিনেমাটি দেখে মুগ্ধ হয়েছি। পরিচালক নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু ভাই ও উনার টিম কে জানাই উষ্ণ অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। প্রত্যাশা করি, এই স্বাধীন ও সাহসী সিনেমাটি সবাই দলে বলে সিনেমা হলে গিয়ে দেখবেন।