বাংলাদেশের সিনেমার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় পুরষ্কারপ্রাপ্তির হাতছানি! আর সেটা জানা যাবে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর। ভূমধ্যসাগর তীরে বসা কান চলচ্চিত্র উৎসবের পালে দ্য ভবনে ঘোষিত হবে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ এর ভাগ্য।
আনসার্টেন রিগার্ড [ভিন্ন দৃষ্টিকোণ] বিভাগে কারা পাচ্ছেন পুরস্কার, এ বিভাগের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে জানা যাবে তা। অনুষ্ঠানটি শুরু হবে শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টায়। চ্যানেল আই অনলাইনকে এমনটাই জানিয়েছেন ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ এর কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করা আজমেরী হক বাঁধন।
দেশবাসীর কাছে চেয়েছেন শুভ কামনা। বাঁধনের ভাষ্য, এখন পর্যন্ত ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ মানুষের কাছে যে ভালোবাসা পেয়েছে এটা যেকোনো পুরস্কারের চেয়ে কম নয়, তবু কানের আনুষ্ঠানিক পুরস্কার নিয়েও আমরা আশাবাদী।
এরআগে নির্মাতা আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদও কথা বলেছেন একই সুরে। গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সাদ জানিয়েছেন, “যেটা পেয়েছি সেটা অনেক বেশি হয়ে গেছে আমার জন্য। আমার ধারণা, ওটা ডিল করতেও টাইম লাগবে আমার। আমার জন্য এটা অলরেডি টু মাচ। কিন্তু, মানুষ তো পাইলে আরো পাইতে চায়। সেক্ষেত্রে অ্যাওয়ার্ড পেলে ডেফিনেটলি আমার ভালো লাগবে।”
গত ৭ জুলাই কানের ডুবসি থিয়েটারে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ এর উদ্বোধনী প্রদর্শনীর পর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বাংলাদেশের এই সিনেমাটির যেভাবে প্রশংসা করেছে, তাতে শুধু সিনেমা সংশ্লিষ্টরাই নয়- আট হাজার কিলোমিটার দূর থেকে ছবিটি নিয়ে আশাবাদী বাংলাদেশের সিনেমাপ্রেমীরাও। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
‘আনসার্টেন রিগার্ড’ বিভাগে বিচারকদের সভাপতি হিসেবে থাকছেন ব্রিটিশ নির্মাতা অ্যান্দ্রেয়া আর্নল্ড। বিচারক দলে আরও থাকছেন মার্কিন নির্মাতা মাইকেল কোভিনো, ফরাসী অভিনেতা এলসা জিলবারস্টেইন। আর্জেন্টিনার নির্মাতা ড্যানিয়েল বারম্যান এবং আলজেরিয়ান নির্মাতা মউনিয়া মেডৌর।
‘আনসার্টেন রিগার্ড’ (ফরাসি উচ্চারণে: আঁ সার্তেইন রিগার্দ) কান চলচ্চিত্র উৎসবের অফিশিয়াল সিলেকশনের একটি বিভাগ। উৎসব কমিটির সভাপতি গিলেস জ্যাকব ১৯৭৮ সালে এই বিভাগটির সাথে সিনেমাপ্রেমীদের পরিচয় করিয়েছেন।
নির্দিষ্ট মানদণ্ডের ভিত্তিতে প্রতিবছর প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য থেকে নির্বাচিত প্রায় ২০টি চলচ্চিত্র নিয়ে ‘আনসার্টেন রিগার্ড’ বিভাগটির আয়োজন করা হয় সেল ডেবুসি থিয়েটারে।
‘আনসার্টেন রিগার্ড’ মানে ‘ভিন্ন দৃষ্টিকোণ’। প্রচলিত ধারার বাইরের গল্পের সিনেমাগুলো এই বিভাগে নির্বাচিত হয়। ২০০৫ সাল থেকে এই বিভাগে যিনি বিজয়ী হন, তার হাতে গ্রৌপামা জিএএন ফাউন্ডেশনের তরফ থেকে তুলে দেয়া হয় ৩০ হাজার ইউরো, যা বাংলাদেশি টাকায় ৩১ লাখ টাকা। ‘আন সার্টেন রিগার্ড’ বিভাগে সেরার পুরস্কার ছাড়াও জুরি, স্পেশাল জুরির মতো রয়েছে আরো কিছু পুরস্কার।
‘আনসার্টেন রিগার্ড’ বিভাগের বিচারকরা এবছর ২০টি ফিচার ছবির মধ্যে থেকে বেছে নেবেন একটি সেরা ছবিকে। ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ ছাড়াও এই বিভাগে নির্বাচিত আরও কিছু উল্লেখযোগ্য ছবি হলো তুরস্কের সেমিহ কাপলানোগলুর ‘কমিটমেন্ট হাসান’, রাশিয়ার নির্মাতা অ্যালেকসে জার্মান জুনিয়রের ‘হাউজ অ্যারেস্ট’ এবং ইসরায়েলের এরান কলিরিনের ‘লেট দেয়ার বি মর্নিং।