কোপা লিবার্তোদোরেসের ফাইনাল নিয়ে নাটক আগেই চরমে পৌঁছেছিল। বোকা জুনিয়র্স কর্মকর্তারা তাদের বাসে ভয়ঙ্কর হামলার জন্য রিভার প্লেটকে টুর্নামেন্ট থেকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছিলেন। তার মধ্যেই খবর আসে, হামলার ঘটনায় দারুণ চাপে লাতিন আমেরিকার ফুটবল সংস্থা-কনমেবল। এই মহাদেশের চ্যাম্পিয়ন দলেরই ১৮ ডিসেম্বর খেলার কথা বিশ্ব ক্লাব কাপের সেমিফাইনালে।
এবারের বিশ্ব ক্লাব কাপ হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। আর্জেন্টিনায় যেহেতু ঝামেলা হচ্ছে, সেখানে এক সময় রটে যায় লিবার্তোদোরেসের ফাইনাল মরুর দেশেই করা হতে পারে।
আরব আমিরাতে না হলেও অন্তত নিজ দেশে হচ্ছে না আর্জেন্টাইন সেই সুপারক্ল্যাসিকো। দুদলের ফাইনাল হবে আর্জেন্টিনার বাইরে। আমেরিকান ফুটবল কনফেডারেশন (কনমেবল) জানিয়েছে এ তথ্য।
আগামী ৮ অথবা ৯ ডিসেম্বর গড়াবে ম্যাচটি। কোন ভেন্যুতে ম্যাচ হবে তা এখনো জানায়নি কনমেবল। ম্যাচের ভেন্যু ও সময় খুব দ্রুতই জানানো হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। ইএসপিএন এফসি অবশ্য জানাচ্ছে, সম্ভাব্য ভেন্যুর তালিকায় সবার উপরে আছে প্যারাগুয়ে।
প্যারাগুয়ের রাজধানী আসুনসিয়নে আটকে থাকা ম্যাচটি হতে পারে সেটা আঁচ পাওয়া গেছে দেশটির পুলিশ প্রধানের কথায়ও। ওয়াল্টার ভাসকুয়েজ জানিয়েছে, শহরের ডিফেন্সোরেজ ডেল সাগো স্টেডিয়ামের নিরাপত্তার জন্য তাদের কাছে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
প্যারাগুয়ের এবিসি কার্ডিনাল এম৭২০ রেডিওকে ভাসকুয়েজ বলেছেন, ‘আমরা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলছি, কীভাবে এই কাজটা করা যায়।’
মঙ্গলবার দুই দলের সভাপতির সঙ্গে দেখা করেন সাউথ আমেরিকান ফুটবল কনফেডারেশন সভাপতি আলেকজান্দ্রো ডমিনিগুয়েজ। ফাইনাল লেগের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পূর্ণ মাত্রার সাহায্য করবে কনমেবল কর্তৃপক্ষ, সেখানে এমন আশ্বাস দেন ডমিনিগুয়েজ।
প্যারাগুয়ের আগে ভেন্যু হিসেবে যুক্তরাস্ট্রের মিয়ামির হার্ডলক স্টেডিয়ামের নাম শোনা যায়। তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাতে ইএসপিএন এফসি জানাচ্ছে, কনমেবলের বৈঠকে মিয়ামির নিয়ে আলোচনা হলেও পরে তা বাতিল হয়ে যায়।
গত রোববার বোকা জুনিয়র্সরের খেলোয়াড়দের বহন করা বাসে হামলা করে রিভার প্লেট সমর্থকেরা। ওই বাসে থাকা বোকার খেলোয়াড়রা আহত হন। যার মধ্যে আছেন বোকার তারকা ফরোয়ার্ড কার্লোস তেভেজও। আর্জেন্টিনার পত্রিকাগুলো জানাচ্ছে, এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত ৩০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
রিভার প্লেটের সমর্থকরা পিপার স্প্রে ছুঁড়ে মারে বোকার খেলোয়াড়দের চোখে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে স্থানীয় পুলিশ। তাৎক্ষণিকভাবে ম্যাচ এক ঘণ্টা পিছিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। বোকার পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের পক্ষে খেলা সম্ভব নয়। পরে ম্যাচ একদিন পিছিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বোকার খেলোয়াড়রা সুস্থ না হওয়ায় ম্যাচ অনির্ধারিত সময়ের জন্য পিছিয়ে যায়।
বোকার মাঠে হওয়া ফাইনালের প্রথম লেগ ২-২ গোলে ড্র হয়। প্রবল বৃষ্টিতে মাঠে পানি জমে যাওযায় ওই ম্যাচও ২৪ ঘন্টা পিছিয়ে দেয়া হয়েছিল।
সহিংসতার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কায় ২০১৩ থেকেই আর্জেন্টিনার ক্লাব ফুটবল ম্যাচে স্বাগতিক সমর্থকরা স্টেডিয়ামে ঢোকার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞায় আছেন।