আমীরের নির্দেশে টার্গেট কিলিংয়ের অংশ হিসেবেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের অধ্যাপক ড. রেজাউল করিমকে হত্যা করে শরীফুল ইসলাম।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রেজাউল করিম হত্যায় অন্যান্যদের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে শরীফ।
শুক্রবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল থেকে হলি আর্টিজান মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রেজাউল করিম হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি জেএমবির শীর্ষ নেতা শরীফুল ইসলাম ওরফে খালিদ ওরফে নাহিদ ওরফে সাইফুল্লাহ ওরফে রাহাত ওরফে আবু সুলাইমানকে এক অভিযানে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
শনিবার দুপুরে কারওয়ান বাজরে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান।
তিনি বলেন, অধ্যাপক রেজাউল করিম হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী শরীফুল ইসলাম, তিনি রেজাউল করিমকে হত্যার এক মাস আগ থেকে তার ওপর নজর রেখেছিলেন।
আমীর ও সংগঠনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক অধ্যাপক রেজাউলকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে স্থানীয় জঙ্গি সদস্যদের মাধ্যমে রেকি ও তথ্য উপাত্ত যেমন ঠিকানা, ফোন নাম্বার সংগ্রহ, অবস্থান গতিবিধি ইত্যাদি নজরদারি করা হয়েছিল। যার নেতৃত্বে ছিল শরীফুল ইসলাম।
মুফতি মাহমুদ বলেন, শরীফুলকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, স্থানীয় জঙ্গি রিপন আলী ওরফে রকি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষকদের ক্লাসের রুটিন মোবাইলে ক্যামেরা দ্বারা ছবি তুলে শরীফুলকে দিয়েছিল। রেজাউল হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটর সাইকেল সংগ্রহ করে জঙ্গি ওসমান মিলু ও মাসকাওয়াত ওরফে আব্দুল্লাহ।
মুফতি মাহমুদ আরো জানান, অধ্যাপক রেজাউল করিম হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি জেএমবির শীর্ষ নেতা শরীফুল ইসলামের নেতৃত্বে হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়।
হত্যাকাণ্ড শেষে হাসান ওরফে বাইক হাসান মোটর সাইকেলে করে শরীফুল ও খাইরুল ইসলাম ওরফে পায়েলকে নিয়ে রওনা দেয়। পায়েলের কাছে চাপাতি ও রক্তমাখা জামাকাপড় ছিল, তাকে খরখড়ি বাইপাসে নামানোর পর হাসান তার নাটোরের ভাড়া করা বাসায় শরীফুলকে নিয়ে ওঠে। পরদিন সকালে শরীফুল ঢাকায় চলে আসে এবং আমীরের নির্দেশে পার্শ্ববর্তী দেশে পালিয়ে যায়।
এক প্রশ্নের জবাবে মুফতি মাহমুদ বলেন, শরীফুল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থী হলেও অধ্যাপক রেজাউলের সঙ্গে তার কোনো ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব ছিল না, শুধুমাত্র আমীর ও সাংগঠনিকভাবে টার্গেট কিলিংয়ের অংশ হিসেবে তাকে হত্যা করা হয়।
২০১৬ সালের ২৩ এপ্রিল সকালে রাজশাহী নগরের শালবাগান এলাকায় নিজের বাড়ির পাশে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয় রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে।