চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

আমার ৯০ শতাংশ গল্পে সামাজিক বার্তা থাকে: বান্নাহ

ভালোবাসা দিবসে পাঁচ নাটক নির্মাণ করেছিলেন মাবরুর রশিদ বান্নাহ। ‘ব্রাদার্স ৩’, ‘হাফ হানিমুন’, ‘ছোটবেলার প্রেম’, ‘বেয়াদ্দব’, ‘বদমাশ পোলাইন সিজন ২’ নাটকগুলো দিয়ে এ নাট্যনির্মাতা বরাবরের মতো তার নামের সুবিচার করেছেন। দর্শকের বিরাট অংশ মনে করছেন, ভালোবাসা দিবসে প্রচারিত শতাধিক নাটকের ভীড়ে বান্নাহর প্রতিটি নির্মাণে অন্যরকম স্বাদ পাওয়া গেছে। বিশেষ করে বান্নাহর ‘ব্রাদার্স ৩’ নাটকটি সবচেয়ে বেশি প্রসংশিত হয়েছে। কাজগুলো নিয়ে চ্যানেল আই অনলাইনের সাথে কথা বলেন বান্নাহ…

ভালোবাসা দিবসের পাঁচ নাটক, প্রচারের পর অভিজ্ঞতা কেমন?
পাঁচটি কাজেই ভিন্নতা ছিল। তাই অন্যরকম অভিজ্ঞতা হয়েছে। বিশেষ দিন উপলক্ষে করা কাজগুলো নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণির দর্শকের মতামত পাওয়া হয়ে ওঠে না। কিন্তু এবার কাজে বৈচিত্র্য থাকায় অন্যরকম সাড়া পেয়েছি। তবে সামান্য আফসোস হচ্ছে, ‘ব্রাদার্স ৩’ যতোটা আলোচিত হয়েছে, ততোটা ভিউস হয়ে ওঠেনি। এছাড়া বাকি সব পারফেক্ট। তবে ‘ব্রাদার্স ৩’ এর জন্য এতো মানুষের প্রশংসা পেয়েছি সত্যি এটা আমার পরের কাজগুলোর জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে লাগবে।

সংখ্যায় কম হওয়াই কী আপনার এবারের কাজে বৈচিত্র্য হওয়ার কারণ?
কোনো নাটকের সাথে কোনোটার মিল রাখিনি বলে দর্শকের অদ্ভূত প্রতিক্রিয়া পেয়েছি। সচেতনভাবেই বৈচিত্র্য রেখেছি বলে বিভিন্ন ইতিবাচক সাড়া পাওয়া সম্ভব হয়েছে। তাছাড়া ভ্যালেন্টাইন হচ্ছে আমাদের বছরের প্রথম অকেশন। আলহামদুলিল্লাহ বছরের শুরুটা খুব চমৎকার হয়েছে।

শতশত ইতিবাচক মন্তব্য, অসংখ্য রিভিউয়ের পরেও ‘ব্রাদার্স ৩’-এ কেন ভিউস হলো না?
প্রথম কারণ যে ইউটিউব চ্যানেলে রিলিজ হয়েছে সেটা একেবারে নতুন। তাই প্রথম দুদিনে যে পরিমাণ আলোচনা হয়েছে সেই পরিমাণ ভিউস হয়নি। কিছু নির্দিষ্ট কনটেন্টে ভিউস আসছে কিন্তু ওভারঅল কনটেন্টে ভিউস কম। জোভান, শাওন ট্রিমেন্ডাস অভিনয় করেছে। ইভানা এবং মনিরা মিঠু আপাও সাপোর্টিং হিসেবে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন। ‘ব্রাদার্স’ নাটক দিয়েই বুঝেছিলাম জোভান শাওন ভালো অভিনেতা। আগামী তিন বছর পর ওরা দুজন অভিনেতা হিসেবে আরও উচ্চতায় পৌঁছুবে।

অন্যান্য কাজগুলো নিয়ে আপনি সন্তুষ্ট?
তাহসান ভাই- তিশা আপুকে নিয়ে ‘হাফ হানিমুন’ ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে আছে। শামীম হাসান সরকারকে নিয়ে বানানো ‘বেয়াদ্দব’ ওটাও ভালো ফিডব্যাক আসছে। ‘বদমাশ পোলাপাইন সিজন ২’ দুটো এপিসোড ইউটিউবে এসেছে। যেখান থেকে প্রথম সিজন শেষ করেছি সেখান থেকে নতুন করে আবার শুরু করেছি। এতো অল্প সময়ে এতো রেসপন্স ‘বদমাশ পোলাপাইন’র দ্বারাই সম্ভব হয়েছে। এককথায় দর্শক ভালোভাবেই নিচ্ছেন। ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ‘সি ফর কোচিং’ নামে একটি ছোট সিরিজ প্রচার হচ্ছে। আশা রাখি ওটাও ভালো হবে।

অনেকের অভিযোগ, ‘বদমাশ পোলাপাইন’ পরিচালনা করে আপনি সমালোচিত হচ্ছেন…
আলোচনা সমালোচনা দুটোই আছে। নতুনদের নিয়ে কাজ করতে গেলেই এক শ্রেণির দর্শক বলে থাকে, আমার সঙ্গে নাকি যায় না! তিনবছর পরে দেখা যায় ওই সমালোচনাকারী দর্শকরাই ফেসবুকে ওইসব শিল্পীদের ফ্যান ক্লাব খোলে। এটা আমার নিজের অভিজ্ঞতা। বর্তমানে হচ্ছেও তাই। হেটার্সরাই একটা সময় ফ্যান হয়ে যায়, এটাই হচ্ছে প্রাপ্তি। আমার প্রচুর হেটার্স ছিল যারা এখন আমার ফ্যান। তাছাড়া সব কাজ ভালো লাগবে এমন কোনো কথা নেই। এদেশে মাশরাফি, সাকিব আল হাসানেরও হেটার্স আছে। তারা পুরো ক্যারিয়ারে দেশের জন্য যে সুনাম বয়ে এনেছেন এতে কী হেটার্স ডিজার্ভ করেন? সেখানে আমি তো একজন ক্ষুদ্র নির্মাতা।

সমালোচনাকে আপনি কীভাবে দেখেন?
সমালোচনা হওয়া ভালো। তবে সেটা গঠনমূলক হতে হবে। এতে করে কতটুকু ভুল হচ্ছে বোঝা যায়। সমালোচনার বিষয় হওয়াও একধরনের যোগ্যতা। যে আলোচিত তার কাজেই সমালোচনা হয়। সবমিলিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে একহাজার পরিচালক আছেন। আলোচনা হচ্ছে কজনকে নিয়ে? তার মানে আমার সেই যোগ্যতাটা অবশ্যই আছে। এই জন্য সমালোচনাকে আমি পজিটিভলি দেখি।

সামাজিক বার্তা থাকে, সাধারণত এমন গল্পের নির্মাণ দর্শক দারুণ প্রশংসা করেন। এমন নাটক বানাচ্ছেন না কেন?
প্রশ্নটা আমি রাখলাম- এখনও পর্যন্ত আমার চেয়ে বেশি সচেতনার বার্তা দেয়া কাজ কে নির্মাণ করেছেন? ক্যারিয়ারের শুরু থেকে আমি যেসব সচেতন বার্তা দেয়া কাজ করেছি, সেই জিনিসগুলো এখন বেশি হচ্ছে। এটা আমার জন্য নতুন কিছু না। সব গল্পে বার্তা থাকে না, তবে আমার ৯০ শতাংশ গল্পে সামাজিক বার্তা থাকে। যেখানে আমি দর্শকের ভাবনার মধ্যে ফেলেই দেই যে, বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিত।