মিশা সওদাগর, ৩১ বছর ধরে দাপটের সঙ্গে ঢালিউড আলোকিত করা এই অভিনয়শিল্পী সম্প্রতি এসেছিলেন আব্দুর রহমানের উপস্থাপনায় চ্যানেল আই এর কিউট নিবেদিত ‘সাময়িকী’ অনুষ্ঠানে। সেখানেই আলোচনা করেছেন অভিনয় জীবনের নানা বিষয়ে-
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির গত নির্বাচনে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মিশা সওদাগর। কিন্তু বহু বছরের পারিবারিক বন্ধু ওমর সানি ও মৌসুমি ছিলেন ভিন্ন প্যানেলে। সেই নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে আদালত অব্দি গেছেন শিল্পীরা। সদস্য নির্বাচিত হয়েও পরবর্তীতে পদত্যাগ করেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী। এসব সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে মিশা জবাবে জানান, তিনি নিজে খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে নির্বাচনের হার-জিতকে খেলার ফলাফলের মতই ভাবেন। আর একারণেই কোন কিছু মনে না রেখে ওমর সানীর জন্মদিনে কেক নিয়ে সানী-মৌসুমীর বাসায়ও গেছেন।
স্পষ্টভাবেই বললেন, তাঁর দৃষ্টিতে ওমর সানী-মৌসুমি এখনও তাঁর ভালো বন্ধুই।
১৩ বছর ধরে শিল্পী সমিতিতে যুক্ত থাকা মিশা নির্বাচন করেছেন বেশ কয়েকবার। জানালেন, এবারের কমিটি যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র আইন যেন মেনে চলা হয় সে ব্যাপারে কঠোর দৃষ্টি রাখছে।
অভিনয় থেকে হঠাৎ কেন অবসরে গেলেন, কোন ধরনের অভিমান এর পেছনে লুকানো আছে কি না, এই প্রশ্নে মিশা বারবার বলেছেন একান্তই পারিবারিক ও ব্যক্তিগত কারণে অভিনয় থেকে একটু দূরে থাকার চেষ্টা করছেন।
৩১ বছরের ক্যারিয়ারে টানা ২৬ বছর কাজ করে যাওয় মিশা প্রচণ্ড ভাবে নব্বইয়ের দশকের পরিচালকদের অভাব অনুভব করেন। ভাল কাজ করা অনেকেই বিভিন্ন মান অভিমান থেকেই দূরে সরে গেছেন। ভাল ও মানসম্মত প্রোডাকশন হাউসের অভাবকে এই ক্ষেত্রে দায়ী করলেন তিনি।
১৯৮৬ সালে এফডিসির ‘নতুন মুখের সন্ধানে’র মাধ্যমে এসে প্রথমে কাজ শুরু করেছিলেন নায়ক হিসেবেই। তারপর কালকের পরিক্রমায় হয়ে ওঠেন খলনায়ক। ৫১ বছর বয়সী মিশা সওদাগর ৩১ বছরের ক্যারিয়ারে কাজের প্রতি এতটাই নিষ্ঠাবান ছিলেন যে, নিজের অ্যাকশন দৃশ্যগুলোতে নিজেই অংশ নিতেন। আর একারণেই ক্ষত-বিক্ষত তাঁর নিজের শরীর। কিন্তু সেসব আঘাতকে কখনই পাত্তা দেন নি কাজের কথা ভেবে।
পুরানো ঢাকার ছেলে মিশা সওদাগরের আরেক প্রতিভার কথা অনেকেই জানেন না। তিনি নিজে কবিতা লেখেন এবং আবৃত্তিও করেন।
মানুষ হিসেবে নিজেকে ১০০ তে ৬০ নম্বর দেন মিশা। ৪০ নম্বর কম দেয়ার কারণ তাঁর হঠাৎ রেগে যাওয়া। ১১ বছর প্রেম করে বিয়ে করা মিশা স্বামী হিসেবেও নিজেকে ৬০ শতাংশ রোমান্টিক বলেই দাবি করেছেন।
ভক্তদের আশা, এত আগেই ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর মায়া পুরোপুরি ত্যাগ করবেন না বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম জনপ্রিয় খলনায়ক মিশা। শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেবেন মিশা তা অবশ্য এখনও জানা যায় নি।