‘আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা সবসময়ই অনুপ্রেরণার, আছে এবং সবসময়ই থাকবে। তাদের একটি বিশেষ জায়গা আছে। এছাড়া সমর্থকদের কাছ থেকেও আমি অনুপ্রেরণা নিয়ে থাকি।’ -টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়াকে দেয়া সাক্ষাতকারে এভাবেই কথাগুলো বলেছেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা।
সোমবার ইংল্যান্ডের স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় সাক্ষাতকার দেন মাশরাফী। সেই সাক্ষাতকারে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য ভারতকে ধন্যবাদ জানান। নিজের নাম ‘মনে রাখার’ জন্য ভারতের সঙ্গে মাশরাফী ধন্যবাদ জানিয়েছেন দেশটির সাবেক অধিনায়ক কপিল দেবকেও।
বিশ্বকাপের আগে অধিনায়কদের নিয়ে কথা বলার সময় নিজের পছন্দের দলে মাশরাফীকে রেখেছিলেন ভারতের হয়ে প্রথম বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। কপিল বলেছিলেন, ‘মাশরাফী যেভাবে খেলেন তার জন্য গর্বিত হওয়া উচিত। তিনি হাঁটুর ইনজুরিতে ভুগলেও কিন্তু খেলা অব্যাহত রাখছেন এবং ওয়ানডে দলটাকে একসঙ্গে ধরে রাখছেন। মাশরাফীর প্রতি সম্মান না জানিয়ে উপায় নেই।’
সেই প্রসঙ্গ তুলে মাশরাফী তার সাক্ষাতকারে বলেছেন, ‘নাম মনে রাখা বড় কথা। আমি অবশ্যই খুশি।’
মঙ্গলবারের ম্যাচ সামনে রেখে টেলিগ্রাফকে দেয়া সাক্ষাতকারে স্পষ্ট এবং সোজাসাপ্টা কথা বলেন মাশরাফী।
মাশরাফীর সাক্ষাতকার
বাংলাদেশের অবস্থান কী আপনাকে অবাক করছে?
মোটেই না। আমরা এখনো সেমিফাইনালের দৌঁড়ে আছি। বিশ্বকাপের মতো একটি টুর্নামেন্টে অন্য দলগুলো কোথায় আছে তা দেখার কোনো সুযোগ নেই, তবে আমাদের সেরা খেলা খেলতে হবে। এটা জরুরি।
বাংলাদেশের টপ পারফরর্মার…
সাকিব আল হাসান। আমি আশা করি, এ পর্যন্ত সে যা করেছে, সেভাবেই চালিয়ে যাবে। সাকিব সবই করছে।
ভারত নিয়ে চিন্তাভাবনা…
সব বিভাগেই আমাদের সেরাটা করতে হবে। ভারত খুবই শক্তিশালী। আমরাও কঠিন ক্রিকেট খেলব। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে ১০০% দেব। ২০০৭ বিশ্বকাপের চেয়ে ভারত এখন অনেক ভালো দল। আমাদের মাথায় তেমন চাপ নেই। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের যদি কিছু কমতি হয়, সেটা একমাত্র দক্ষতার কারণে হবে। মনস্তাত্ত্বিক কারণে নয়। আমাদের ইতিবাচক হতে হবে এবং ২০১৫ সালে (রোহিত শর্মাকে নিয়ে বিতর্ক) কী ঘটেছিল সেদিকে ফিরে তাকাব না।’
ভারতের বিরুদ্ধে তো কিছু চিত্তাকর্ষক পারফরম্যান্স হয়েছে…
ভালো লাগছে, কিন্তু আমি অন্য বিশ্বকাপে ভারত বিরুদ্ধে খেলতে না পেরে আবেগপ্রবণ নই। আমি অন্যান্য খেলোয়াড়দের মতোই অবদান রাখতে চাই। আশা করি, আমাদের পরিকল্পনাগুলো যেন ঠিকঠাক হয়।
বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি কি?
আমরা জয়ের জন্য খেলি। চাপ মোকাবেলা করতে হবে।
একটি দীর্ঘ সপ্তাহের বিরতি, শেষ সপ্তাহের পর কোনো সুবিধা বা অসুবিধা হবে?
এটি সাহায্য করতে পারে। জানি না, আমরা ২৪ জুনের পরে খেলছি না, আমরা ভাবছি যে, আমাদের সামনে কী আছে। এটাই আমাদের মনে ফিরে ফিরে আসছে।
ইংল্যান্ডের কাছে পরাজয়ের পর ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি এজবাস্টনের একদিকের ছোট বাউন্ডারি ইস্যু নিয়ে কিছু একটা বলেছেন।
উইকেট এবং বাউন্ডারি উভয় দলের জন্য একই হবে।
রোববারের একই (ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ) উইকেটে ম্যাচ হবে…
অধিকাংশই মনে করেন যে, ব্যবহৃত উইকেটে প্রথমে ব্যাট করতে হবে, তবে ভারত রান তাড়ায় ভালো হিসাবেই পরিচিত। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তারা ৩৩৮ রানে পৌঁছায়নি, তবে তখনো পাঁচ উইকেটে ৩০৬ রান করে, যা মোটেই ছোট নয়।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ৫ ওভারে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি!
আমি মহেন্দ্র সিং ধোনির মতো (এবং কেদার যাদব) অভিজ্ঞদের নিয়ে মন্তব্য করব না। শুরু থেকে ৪০ ওভার পর্যন্ত ভারতের একটা সুযোগ ছিল। কিন্তু ৪৫তম ওভারে হার্দিক পান্ডিয়া আউট হওয়ার পর কঠিন হয়ে যায়। এটা কঠিন ছিল এবং ইংল্যান্ডও জায়গা মতো বল ফেলেছে। পুরো এশিয়াই ওই ম্যাচে ভারতের জয় চেয়েছিল। এটাই ক্রিকেটের শক্তি, সবাইকে সে এক করতে পারে।
ভারতকে হারাতে কি করতে হবে?
আমাদেরকে দ্রুত ভারতের টপঅর্ডার সেটে ফেলতে হবে, শান্ত থাকতে হবে এবং প্রচারেরমাধ্যম থেকে দূরে থাকতে হবে, আমাদের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, ভুল থেকে শিখতে হবে এবং সেটা কমিয়ে আনতে হবে।
আপনি কি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন?
একটি (হাসি) আপনি আমাকে হত্যা করতে চান? কখনোই না।