সোমবার রাতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের আত্মসম্মান থাকলে ডিজিএফআইএর দেয়া খবর প্রচারের জন্য তিনি পদত্যাগ করতেন। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মাহফুজ আনাম। তাকে আইসোলেটেড (বিচ্ছিন্ন) করার জন্যই এসব বলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে মাহফুজ আনাম ওইসময়ের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে জানিয়েছেন, ডিজিএফআইয়ের সরবরাহ করা যে সংবাদ ডেইলি স্টার ছেপেছিলো, সেই সময় ওই খবর অন্যরাও ছেপেছিলো। এছাড়া ওইসব খবরের সত্যতা নিশ্চিত করতে টিভিতে রেকর্ডিং বাজিয়েও শোনানো হয়েছিলো বলেও জানান তিনি।
তার উপরে অভিযোগ করার মাধ্যমে সৎ সাংবাদিকতার ওপর একটা বিরাট অন্যায় অভিযোগ আনা হচ্ছে বলেও মনে করেন মাহফুজ আনাম।
বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, আমি মনে করেছিলাম যে স্বত:প্রণোদিতভাবে জনসমক্ষে ভুল স্বীকার করে আমি একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করছি। কিন্তু এর প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হচ্ছে যেন ভুল স্বীকার করাটাও আমার একটা ভুল হয়েছে। এর ফলে দেখা যাবে সাংবাদিকরা নিজের ভুল স্বীকার করার আর কোনো রকম উৎসাহ পাবেন না।
এসময় মাহফুজ আনাম আরো বলেন, ওই খবরগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই না করে ছাপানোর ফলে আমি যথাযথ সম্পাদকীয় বিবেচনাবোধের পরিচয় দিতে পারিনি – আমার এই আত্ম-উপলব্ধিমূলক মন্তব্য থেকে সাংবাদিকতার একটা বিরাট দুর্বল জায়গা উন্মোচিত হয়েছে। আমরা যে সেনা গোয়েন্দা সংস্থার চাপে থাকি- সেটা বেরিয়ে এসেছে। ভবিষ্যতে যেন পরিস্থিতি এদিকে না যায়- আলোচনাটা সেদিকে গেলে দেশের সাংবাদিকতা লাভবান হবে। এখনো তো আমরা র্যাবের ক্রসফায়ারে মৃত্যুর খবর ওরা যেভাবে দেয়- সেভাবেই ছেপে যাচ্ছি। এটা তো একটা বিরাট ইস্যু- যা গভীরভাবে দেখা দরকার।
মাহফুজ আনাম ডেইলি স্টারের আরো লেখার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, মাত্র তিনটি রিপোর্ট নিয়ে কথা হচ্ছে। অথচ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় ছিল দু বছর, সেসময় ডেইলি স্টার প্রায় দুশো সম্পদকীয় লিখে নির্বাচন এবং জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলেছে।