পথশিশুদের নিয়ে কাজ করা ‘মজার স্কুলে’র স্বেচ্ছাসেবক আরিফ-জাকিয়াদের জামিনের জন্য আগামীকাল সোমবার উচ্চ আদালতে আবেদন করবেন তাদের মুক্তিকামী সাধারণ মানুষের একটি দল।
আইনজীবী জোতির্ময় বড়ুয়ার নেতৃত্বে ‘মজার স্কুলে’র চার স্বেচ্ছাসেবকের মুক্তির জন্য আবেদন করবেন তারা। এই বিষয়ে ফেসবুকে একটি পোষ্ট দেন উপস্থাপক আশীফ এন্তাজ রবি। নিচে তার স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো।
‘আমরা নিরুপায় হয়ে ফেসবুককে বেছে নিয়েছিলাম। অদম্য বাংলাদেশের ৪ তরুণ আজ এক মাসের উপর কারাবন্দী।
আমাদের ক্ষোভ, দুঃখ আর বঞ্চনার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে একটি খোলা চিঠি লিখেছিলাম।
আশার কথা হলো, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সচিব জনাব আবুল কালাম আজাদ সেই স্ট্যাটাসে কমেন্ট করে আমাদের দেখা করার আমন্ত্রণ জানান। উনার শত ব্যস্ততার মধ্যেও ধৈর্য সহকারে আমাদের কথা শুনেছেন, আমাদের ব্যাপারে যথা সম্ভব খোঁজ খবরও নিয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের উপ প্রেস সচিব জনাব আশরাফুল আলম খোকনও দারুণ সহযোগিতা করেছেন। তাদেরকে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা আমার নেই।
জনাব আবুল কালাম আজাদ স্যারকে শুধু এইটুকু বলবো, আরিফ আর জাকিয়ার মা গত একমাস নির্ঘুম কাটিয়েছেন। এই ঘটনার পর তারা একটু ঘুমাতে পারছেন। দুর্বিসহ যন্ত্রণায় ভুগতে থাকা দুই জননীর মনে আপনারা স্বস্তি দিয়েছেন, পরম করুণাময় নিশ্চয়ই আপনাদের কল্যাণ করবেন।
এখন এই চার তরুণের জামিনের ব্যাপারে আগামীকাল আমরা যাচ্ছি উচ্চ আদালতে। ব্যারিষ্টার জোর্তিময় বড়ুয়ার নেতৃত্বে আমরা আদালতের কাছে আবেদন করবো, এর প্রতিকার চাইবো।
আমরা আশাবাদী আদালত আমাদের নিরাশ করবেন না। আগামীকাল সকাল ১০ টায় আমরা সুপ্রিম কোর্টে থাকবো। আমাদের যারা শুভাকাঙ্খী আছেন তাদের প্রতি অনুরোধ; সময় থাকলে আমাদের পাশে এসে একটু দাঁড়াবেন। আমাদের চোখের জল, আমাদের বুকের কষ্ট একটুও হলেও ভাগাভাগি করে নেবেন।
আমরা সত্যিই বড় ক্লান্ত।
গত ১২ সেপ্টেম্বর রামপুরার বনশ্রীতে অদম্য বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ১০ শিশুকে ‘উদ্ধার’ করে পুলিশ। এ সময় আশ্রয়কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা চার তরুণ-তরুণীকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ বলছে, সেখানে থাকা মোবারক নামে এক শিশুর চাচা অভিযোগ করেন, তার ভাতিজাকে জোর করে আশ্রয়কেন্দ্রে আটকে রাখা হয়েছে। এই অভিযোগে তিনি মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে একটি মামলা করেন।
এরই ভিত্তিতে চারজনকে গ্রেফতারের পর দু’দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
মোবারককে তার চাচার কাছে এবং অন্য ৯ শিশুকে পাঠানো হয় টঙ্গীর শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে। এরপর থেকেই সেই চার স্বেচ্ছাসেবকের মুক্তির দাবীতে সোচ্চার হয়ে উঠে পুরো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম।