জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় মৃদু শীতল বাতাসে পাকা সোনালি ধান দোল খাচ্ছে মাঠে মাঠে। পাকা ধানের গন্ধে কৃষকদের মনে এখন বেশ প্রফুল্লতা। পাকা ধান কাটতে হাতে কাচি নিয়ে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। অন্যদিকে মাঠ থেকে নতুন ধান বাড়িতে তোলার জন্য আঙ্গিনা পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন কৃষাণীরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ১২ হাজার ১৮০ হেক্টর জমিতে ৫৯ হাজার ৯৮৪ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও অধিক জমিতে আমন ধানের চাষাবাদ হয়েছে। এবার আবহাওয়ার অনুকূলে থাকায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো ফলন পেয়ে কৃষক এবার বেশ খুশি।
কৃষক আইনুল হক বলেন, রোপনের পর ধান গাছে নানা পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছিল। এতে চিন্তায় পরেছিলাম। অনেকবার কীটনাশক স্প্রে করার ফলে ফসলকে পোকামাকড় থেকে রক্ষা করতে পেরেছি। ফলন খুব ভাল হয়েছে। নতুন ধান পেয়ে আমি আনন্দিত।
কৃষক আঃ কাদের বলেন, এ বছর ফসলে ব্যপক পোকামাকড়ের আক্রমন হওয়াতে খরচা পরিমাণে বেশি হয়েছে। মাঝামাঝির দিকে খরায় ক্ষতি করলেও শেষের দিকে বৃষ্টি হওয়াতে ধানের খুব উপকার হয়েছে ফলে, অনেক ভালো ফলন হয়েছে।
গ্রামতলা গ্রামের কৃষক ইসমাইল বলেন, ধানের যা ফলন হয়েছে তাতে আমি অনেক খুশি। কৃষক বাঁচলে বাঁচবে দেশ কথাটি সরকারকে মনে রাখা দরকার। তাই কৃষকদের ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে সরকারের নিকট আবেদন জানান তিনি ।
সড়াইল গ্রামের কৃষক তাজুল ইসলাম বলেন, আমি ৮ বিঘা জমিতে মামুন এবং ৪৯ জাতের ধান লাগিয়েছি। আশানুরূপ ফলনের আশা করছি। উতপাদিত ফসলের সঠিক মূল্য না পেলে বরাবরের মতো এবারও ক্ষতিগ্রস্ত হতে হবে। তাই নায্যমূল্য নিশ্চিত করার দাবিও জানান তিনি।
দেওগ্রানের রফিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন থাকায় বাহির থেকে কাজের লোকজন চাহিদামত না আসায় শ্রমিকের মজুরি এবার একটু বেশি। যার ফলে প্রতি শতক ৮০-৯০ টাকা দরে ধান কাটতে হচ্ছে।
কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নীলিমা জাহান বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই আমন ধান কাটা-মাড়াই চলছে। এ পর্যন্ত ৫০ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। এ অঞ্চলের কৃষকরা ধান কেটে আলুর চাষাবাদ করেন এ জন্য দ্রুত ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকেরা এবার অনেক খুশি। ধানের দামও ভালো আছে।