চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

আবার সুপার ওভার, আবারও হারা দলটি নিউজিল্যান্ড

কিছুতেই সুপার ওভারের ভাগ্য বদলাতে পারছে না নিউজিল্যান্ড। ভারতের বিপক্ষে টানা দুটি টি-টুয়েন্টিতে সুপার ওভারে গিয়ে হেরে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশের মুখে পড়েছে কিউইরা। শুক্রবারের হারটি ওয়েলিংটনে।

হারানোর সামান্যই বাকি। দুই ম্যাচ হাতে রেখেই তো সিরিজ হাতছাড়া হয়ে গেছে। নিউজিল্যান্ডের পাওয়ার অবশ্য ছিল অনেককিছুই। ঘরের মাটিতে সিরিজ, সিরিজ হেরেও কিছুটা মান-সম্মান তো উদ্ধার করা যেতই। চতুর্থ টি-টুয়েন্টিতে এসে সেটির সুযোগ জাগিয়ে আবারও হারা দলটি তারাই।

ফিট থাকতে সবার আগে চিনি বাদ দিন, প্রাকৃতিক ও নিরাপদ জিরোক্যাল-এর মিষ্টি স্বাদ নিন।

টানা তিন টি-টুয়েন্টি হেরে পাঁচ ম্যাচ সিরিজ বিরাট কোহলির হাতে তুলে দিয়েছে উইলিয়ামসনের দল। এদিন অবশ্য নিয়মিত অধিনায়ককে পায়নি স্বাগতিকরা, কারণ চোটজনিত। সফরকারীরা বসিয়ে রেখে নেমেছিল রোহিত শর্মাকে।

ওয়েলিংটনে পরে মনিষ পান্ডের অপরাজিত ফিফটিতে নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেটে ১৬৫ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি জমায় ভারত। জবাব দিতে নেমে সুপার ওভারে গড়ানোর আগে একই রান তুলতে ৭ উইকেট খোয়ায় নিউজিল্যান্ড।

টাই হওয়ার আগে মনেই হয়নি আবারও নাটক জমতে যাচ্ছে। শেষ ওভারে ৬ বলে মাত্র ৭ রান দরকার ছিল স্বাগতিকদের, হাতে ৭ উইকেট। প্রথম পাঁচ বলে ৩ উইকেট হারানোর পর শেষ বলে ২ রান দরকার পড়ে। সেই বলে দৌড়ে ২ রান নিতে যেয়ে দ্বিতীয় রানের সময় রানআউট স্যান্টনার। ম্যাচ টাই।

তার আগে ওই ওভারের প্রথম বলে শার্দুল ঠাকুর ফেরান রস টেলরকে, শ্রেয়াসের ক্যাচ বানিয়ে। পরের বলে ড্যারেল মিচেলের কাছে ৪ হজম করেন। পরের বলে সেইফার্ট রানআউট রাহুলের থ্রোতে। চতুর্থ বলে ১ নেন স্যান্টনার। পঞ্চম বলে মিচেলকে দুবের ক্যাচ বানান শার্দুল। শেষ বলে এক রান পূর্ণ হওয়ার পর স্যান্টনারের রানআউটে নাটক সুপার ওভারে।

শার্দুল ঠাকুর

সুপার ওভারে নামেন মুনরো ও সেইফার্ট। কিউইদের পরীক্ষা নিতে বল হাতে বুমরাহ। আগের ম্যাচেও যিনি একই দায়িত্ব সামলেছিলেন। প্রথম বলে ড্রপ ক্যাচের সঙ্গে ২ রান নেন সেইফার্ট, পরের বলে হাঁকান চার। তৃতীয় বলে ২ রান। চতুর্থ বলে সেইফার্টকে সাজঘরে পাঠান বুমরাহ।

প্রথম চার বলে সংগ্রহ ৮ রান। নিউজিল্যান্ডের পরের ২ বলে বিশেষ কিছুই দরকার ছিল। পঞ্চম বলে মুনরো আদায় করে নেন বাউন্ডারি। কিন্তু ওভারের শেষ বলে কেবল এক রানই নিতে পারেন তিনি। সুপার ওভারে ভারতের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৪। গত ম্যাচে ১৮ রানের লক্ষ্য দিয়েও রোহিতের দুই ছয়ে ভাগ্য পুড়েছিল কিউইদের।

এদিনও ব্যতিক্রম কিছু হয়নি। ভারতের হয়ে জবাব দিতে আসেন লোকেশ রাহুল ও বিরাট কোহলি, বল হাতে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক সাউদি। প্রথম বলেই উড়িয়ে বল বাউন্ডারি ছাড়া করেন রাহুল। পরের বলে হাঁকান ৪। তৃতীয় বলে অবশ্য বাউন্ডারির কাছে ক্যাচে ধরা পড়েন এ ডানহাতি।

কিন্তু কাজের কাজটা করে ফিরতে ফিরতে কোহলিকে স্ট্রাইকে রেখে আসেন রাহুল। ভারত অধিনায়ক চতুর্থ বলে চড়াও হননি। স্ট্রেইটে আলতো করে বল ঠেলে নেন ২ রান। পঞ্চম বলে ৪ মেরে ম্যাচ শেষ করে দেন কোহলি।

এই নিয়ে টি-টুয়েন্টিতে ৭বার সুপার ওভারে ম্যাচ নিয়ে ৬বারই হেরে বসল নিউজিল্যান্ড। টানা দুবার। গত ছয় মাসে তিনবার। ২০০৮ সালে অকল্যান্ডে প্রথমবার সুপার ওভারে টেনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হেরেছিল কিউইরা। পরে ২০১০ সালে ক্রাইস্টচার্চে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জেতে।

সেই শেষ, ২০১০ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাল্লেকেলেতে, ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেই পাল্লেকেলেতেই, ২০১৯ সালে অকল্যান্ডে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দেখে হার। সবশেষ দু-ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে হ্যামিল্টন ও ওয়েলিংটনে হারল।

নিউজিল্যান্ড আরও একবার সুপার ওভারে হেরেছে। সেটা ওয়ানডেতে। যে ম্যাচটার কথা তারা আজীবনেও ভুলতে পারবে না। সেই ম্যাচের কথা অবশ্য ভুলতে পারবে না বিজয়ী ইংল্যান্ড, পরাজিত নিউজিল্যান্ড, বা কোনো ক্রিকেটপ্রেমীই। লর্ডসে গত ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে টাই করে সুপার ওভারে ম্যাচ টেনে, সুপার ওভারেও টাই করে, তখনকার আইন বাউন্ডারি সংখ্যার হিসেবে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে বিশ্বকাপ শিরোপা ছোঁয়া হয়নি কিউইদের। পরে যে আইন বাতিল করে দিয়েছে আইসিসি!

ম্যাচে যা ঘটেছিল
শুরুতে এলোমেলো ভারত দেড়শ পেরোয় মনিষ পান্ডের ফিফটিতে। কেবল ৩ চারে ৩৬ বলে ৫০ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। বাকিদের মধ্যে বলার মতো রান ওপেনার রাহুলের ৩৯ ও ইনিংসের শেষ ওভারের নায়ক পেসার শার্দুলের ১৫ বলে ২০ রান।

স্বাগতিকদের হয়ে ইশ সোধি ৩টি, বেন্নেট ২টি, সাউদি-কুগ্গেলেঝিন ও স্যান্টনার ১টি করে উইকেট নিয়েছেন।

জবাব দিতে নেমে কলিন মুনরোর ৬ চার ও ৩ ছয়ে করা ৪৭ বলে ৬৪, টিম সেইফার্টের ৪ চার ৩ ছক্কায় করা ৩৯ বলে ৫৭ রানে লড়াই জমিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। কিন্তু টেলর ২৪ রানে ফেরার পর বাকিরা গড়বড় করে ফেললে টাই, সুপার ওভারে যেয়ে সেই জয় অধরাই থাকল স্বাগতিকদের। সিরিজের পঞ্চম ম্যাচে হারলেই এখন হোয়াইটওয়াশ!