চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

আবার দুই সপ্তাহ সময় পেল সরকার

নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকুরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশে আবার দুই সপ্তাহ সময় পেল সরকার। এর আগে গত ৩০ আগস্ট আদালত এক সপ্তাহ সময় মঞ্জুর করেন। তার আগে বহুবার সময় দেন আদালত।

রোববার অ্যাটর্নি জেনারেলের চার সপ্তাহ সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ দুই সপ্তাহ সময় মঞ্জুর করেন।

এসময় আদালত অ্যাটর্নি জেনারেলকে এ সংক্রান্ত খসড়ায় নিয়ে পূর্ব ঘোষিত আলোচনায় বসার তাগিদ দেন। তখন অ্যাটর্নি জেনারেল আইনমন্ত্রী অসুস্থ আছেন বলে জানান।

এর আগে আইনমন্ত্রীর দেয়া এ সংক্রান্ত খসড়ায় আদালতের সুপারিশের বিষয়গুল না থাকায় গত ৩০ অাগস্ট ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এসময় অ্যাটর্নি জেনারেলকে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘খসড়ার বিষয়ে আইনমন্ত্রীর সাথে আলাপকালে আমি যে বিষয়গুলো খসড়ায় রাখার কথা বলেছিলাম, এই খসড়ায় তার কিছুই নেই। এখানে তো পুরো উল্টো।’

প্রধান বিচারপতি অ্যাটর্নি জেনারেলকে আরো বলেন, ‘আমরা চাই সুন্দর একটা আইন হোক। তাই আসুন আমরা বসি। আপিল বিভাগের আমরা সব বিচারক, আপনি, মাননীয় আইনমন্ত্রী ও আইন মন্ত্রণালয় চাইলে সেই বৈঠকে তাদের পক্ষ থেকে এক্সপার্ট রাখতে পারবে। আজ থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত যেকোন দিন দুপুর ২ টার পর থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত আমাদের বসতে সমস্যা নেই।’

প্রধান বিচারপতির আহ্বানের পর বৈঠকে বসার আগ্রহের কথা জানিয়ে গত সোমবার (৩১ জুলাই) আইনমন্ত্রী বলেন  ‘আমাদের সদিচ্ছা আছে।বৃহস্পতিবার আমরা বসব।’

কিন্তু গত ১ অগাস্ট সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। ওই রায়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে ১১৬ (নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত) অনুচ্ছেদের যে সংশোধন আনা হয় তা সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক।

রায় প্রকাশের পর গত বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) সাংবাদিকদের আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমি খুবই অসুস্থ। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে জানিয়ে দিয়েছি, বৃহস্পতিবার আসতে পারছি না।’

১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেন মামলায় (বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ) ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেওয়া হয়। ওই রায়ে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল।

আপিল বিভাগের নির্দেশনার পর ২০১৫ সালের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় শৃঙ্খলা সংক্রান্ত একটি খসড়া বিধি প্রস্তুত করে সুপ্রিমকোর্টে পাঠায়। কিন্তু গত বছরের ২৮ আগস্ট আপিল বিভাগ খসড়ার বিষয়ে বলেন, শৃঙ্খলা বিধিমালা সংক্রান্ত সরকারের খসড়াটি ছিল ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার হুবহু অনুরূপ, যা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী।

এরপর সুপ্রিম কোর্ট একটি খসড়া বিধিমালা করে আইনমন্ত্রণালয়ে পাঠায়। একই সঙ্গে ৬ নভেম্বর ২০১৬ এর মধ্যে খসড়া বিধিমালা প্রণয়ন করে প্রতিবেদন আকারে আদালতকে জানাতে আইন মন্ত্রণালয়কে বলা হয়। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ থেকে খসড়া বিধিমালা প্রকাশের জন্য বার বার সময় নেয়া হয়।

এরপর ২৭ জুলাই প্রধান বিচারপতির সাথে সাক্ষাৎ করে আইনমন্ত্রী প্রধান বিচারপতিকে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালার একটি খসড়া দেন। তবে সে খসড়া বিধিমালা নিয়ে আদালতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি।