বাংলাদেশের বিপদে জাগল শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের গ্যালারি। মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকের প্রতিটা সিঙ্গেল, ডাবলসে প্রাণভরে সমর্থন যুগিয়ে গেলেন মাঠে আসা দর্শকরা। ২২ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর আশারপ্রদীপ হয়ে জ্বলছিল তাদের জুটিটা। তাতে জমেও ওঠে বাঘ-সিংহের লড়াই। কিন্তু মুশফিকের (২২) বিদায়ে ৫৮ রানের জুটি ভাঙতেই সব শেষ! স্বপ্নের পালে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে হাওয়া দিতে পারলেন না কেউ। মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান রিয়াদের একার লড়াই (৭৬) হয়ে থাকল কেবলই সান্ত্বনা।
২২২ রানকে বাংলাদেশের জন্য দূরের পথ বানিয়েছেন শ্রীলঙ্কান বোলাররা। আগের ম্যাচে ৮২ রানে স্বাগতিকদের ধসিয়ে দিয়ে যে জ্বালানি পেয়েছিলেন, সেটি আগুন হয়ে ঝরালেন ফাইনালে। ৭৯ রানের জয়ে লঙ্কানদের গৌরবগাঁথায় যোগ হল অভিষেকে শিহান মাদুশাঙ্কার হ্যাটট্রিক। শেষ তিন উইকেট নিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ জেতাতে সময়টা কমিয়ে দিলেন ২২ বছর বয়সী এই পেসার। তাতে বড় হারেই বহুজাতিক আসরে স্বাগতিকদের শিরোপা জয়ের স্বপ্নভঙ্গ হল আবারও।
এই স্বপ্নভঙ্গের যেন শেষ নেই! শিরোপা উঁচিয়ে ধরার স্বপ্নযাত্রায় বাংলাদেশ প্রথম নাম লেখায় ২০০৯ সালে। ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার মারুফ-মুরালির ব্যাটে হয়েছিল স্বপ্নভঙ্গ। ২০১২ সালের এশিয়া কাপের ফাইনালে দ্বিতীয় সুযোগ, পাকিস্তানের বিপক্ষে সেই ম্যাচেও জুটেছে জিততে না পারার দুঃসহ স্মৃতি। ২০১৬ সালে টি-টুয়েন্টি ফরম্যাটে হওয়া এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের কাছে হার।
এসব দুঃখের উপাখ্যান মিরপুরে আগে লেখা হয়েছে বলেই এবার শিরোপা ‘চাই-ই-চাই’ পর্যায়ে চলে গিয়েছিল চাওয়াটা। যে কারণে এবারের হারের বেদনা আরও বেশি! সবাই যে খুব করে চাইছিলেন ট্রফিটা এবার উঠবে মাশরাফীদের হাতে।
মিরপুরে অনেক সাফল্যের গল্প যেমন আছে তেমনি বাড়ছে স্বপ্নভঙ্গের বেদনাও। দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জেতার অনেক সুখস্মৃতি থাকলেও বহুজাতিক আসরে হাত শুন্যই থাকল বাংলাদেশের। কে জানে কতদিনে এমন কোন টুর্নামেন্টের একটা ট্রফি উঠবে মাশরাফী-সাকিব-তামিমদের হাতে!