অস্ট্রেলিয়ান ওপেন শুরুর বাকি দুইদিন। এখনও শেষ হচ্ছে না এক নম্বর তারকা নোভাক জোকোভিচকে নিয়ে চলতে থাকা নাটক। অস্ট্রেলিয়া সরকার দ্বিতীয়বার ভিসা বাতিলের বিপক্ষে জোকোভিচের করা আপিল উচ্চ আদালতে গড়ায়।
আগামীকাল রোববার এটির শুনানির আগে সার্বিয়ান তারকাকে আবারও আটক করা হয়েছে। জনসাধারণের জন্য ‘হুমকি’ অ্যাখ্যায়িত করে তাকে আটক করেছে অস্ট্রেলিয়ার কর্তৃপক্ষ।
রোববার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টায় অজি ইমিগ্রেশন মন্ত্রী অ্যালেক্স হকারের ‘নিজস্ব ক্ষমতাবল’ প্রয়োগে ভিসা বাতিলের বিরুদ্ধে করা সার্বিয়ান তারকার আইনি চ্যালেঞ্জের শুনানি শুরু হবে। অথচ শুনানির আগে জোকোকে আটকে রাখা হল।
পরদিন সোমবার মেলবোর্নে শুরু হবে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন। সেদিনই প্রথম রাউন্ডে জোকোভিচের সূচি অনুযায়ী কোর্টে নামার কথা। অথচ তাকে এখন আদালত ও ডিটেনশন সেন্টারের ঝামেলার ভেতর দিয়ে সময় পার কোর্টে হচ্ছে।
প্রসঙ্গত অস্ট্রেলিয়ায় থেকে যাওয়ার সুযোগ মেলার পর দ্বিতীয়বার ভিসা বাতিলের পর নোভাক জোকোভিচ এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে করা আপিল উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে।
বিচারপতি ডেভিড ও’ক্যালাগান আজ শনিবার বলেছেন, একক বিচারক কিংবা পূর্ণ আদালতের মাধ্যমে এই কার্যক্রমের শুনানি করতে হবে কি না- এই প্রশ্নে আদালত সকল পক্ষের সাথে যোগাযোগ করবে।
একইসঙ্গে ও’ক্যালাগান নির্দেশ দিয়েছেন যে, জোকোভিচ এবং অস্ট্রেলিয়া সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবীদের আজ দিনের পরে লিখিত যুক্তি জমা দিতে হবে।
প্রথমবার ভিসা বাতিলের পর গত সোমবার তার করা আপিলের প্রেক্ষিতে অজি আদালতের রায় এসেছিল, অস্ট্রেলিয়ার ভিসা পেতে কোনো বাধা নেই সার্বিয়ান তারকার। রায়ের পর তিনি টেনিস কোর্টে ফিরে অনুশীলনও করেছেন।
ঘটনার একেবারে শুরুটা গত ৬ জানুয়ারি। অস্ট্রেলিয়া সরকার জোকোভিচের ভিসা বাতিল করে দেয়। করোনা ভ্যাকসিনের তথ্য প্রকাশ না করার দায়ে মেলবোর্নের টুলামারিন বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তাকে আট ঘণ্টা আটকেও রাখা হয়। পরে সরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি আশ্রয়কেন্দ্রে রুমবন্দি রাখা হয়।
অজি প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন সেসময় জানান, ‘জোকোভিচ কোনো বিশেষ কেউ নন। প্রত্যেকের জন্য একই নিয়ম প্রযোজ্য।’
অস্ট্রেলিয়া সরকারের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাজধানী বেলগ্রেডসহ সার্বিয়াজুড়ে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে অস্ট্রেলিয়ায় জোকোকে রাখা হোটেলের সামনেও। সার্বিয়ান সরকার দাবি করে, অস্ট্রেলিয়া জোকোভিচের সঙ্গে অপরাধীর মতো আচরণ করছে।
পরে অস্ট্রেলিয়ার আদালতে করা আপিলে জোকোভিচের আইনজীবী জানান, করোনা আক্রান্ত হওয়ায় জোকোর পক্ষে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভ্যাকসিন নেয়া সম্ভব ছিল না। আদালত টেনিস তারকার পক্ষে রায় দেন। বলে দেন দেশটিতে থাকতে কোনো বাধা নেই। এরপর খুলতে থাকে মাঠে নামার দরজাও।
অনুশীলনে ফিরে জোকোভিচ যখন বললেন, এখন শুধু খেলায় মনোযোগের সময়, সেটির চব্বিশঘণ্টা পেরিয়ে অজি ইমিগ্রেশন মন্ত্রী অ্যালেক্স হকারের ‘নিজস্ব ক্ষমতাবল’ প্রয়োগে ফের ভিসা বাতিল করে দেন সার্বিয়ান তারকার।