দীর্ঘকাল পরে প্রবল নিরাপত্তা ও তালেবানদের হুমকির মুখেই অবশেষে আফগানিস্তানে সংসদীয় নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে। এবারের নির্বাচনে ২৫০টি আসনের জন্য অনেক নারীসহ ২৫০০ জনেরও বেশি ভোটপ্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বেশিরভাগ ভোটপ্রার্থীই তরুণ ও শিক্ষিত। সংঘাতময় দেশটিতে পরিবর্তন আনার বার্তা দিয়েছেন তারা। তবে অনেক আফগান মনে করেন সব রাজনীতিবিদনই দুর্নীতিগ্রস্ত ও অকার্যকর।
ভোটগ্রহণ শুরুর পরে নিরাপত্তার কারণে ৩০% এরও বেশি ভোটকেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ভোটের আগে আগে নির্বাচনী প্রচারণার সময়েই প্রাণ হারিয়েছে ১০জন।
তবে কান্দাহার প্রদেশের পুলিশ প্রধানের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সেখানে ভোটগ্রহণ ১ সপ্তাহ পেছানো হয়েছে। দেহরক্ষীর গুলিতে নিহত হন পুলিশ প্রধান জেনারেল আব্দুল রাজিক।
নির্বাচনকে সামনে রেখে নব্বই লাখ ভোটারের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেখানকার সময় সকাল সাতটার দিকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।
৭০০০টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে নিরাপত্তার উদ্বেগে খোলা রয়েছে ৫০০০ ভোটকেন্দ্র। তালেবান জঙ্গিরা এই ভোটকে ‘মিথ্যা’ নির্বাচন অ্যাখ্যা দিয়ে বয়কট করতে বলেছে সবাইকে। আইএসও এই বিষয়ে তাদের অনুসরণ করেছে।
ভোটকে কেন্দ্র করে অন্তত ৫৪,০০০ নিরাপত্তাকর্মীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে যেন নির্বাচন শান্তিতে অনুষ্ঠিত হতে পারে। নির্বাচনের ফলাফল জানানো হবে ২০ দিন পরে ১০ নভেম্বর।
বেশিরভাগ আফগান উন্নত জীবন, চাকরি, শিক্ষা এবং তালেবানদের সঙ্গে যুদ্ধের অবসান চায়। দেশটির বিদেশি সঙ্গীদের ধারণা, বছরের পর বছরের বিনিয়োগ, বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ক্ষতি আর এক দশকের যুদ্ধে হাজার হাজার প্রাণের বিনিময়ে দেশটিতে ভোটের মাধ্যমে অবশেষে গণতন্ত্র আসবে।
এর আগে ২০১৫ সালে সেখানে জাতীয় সংসদ শেষ হয়। কিন্তু ২০১৪ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পরে দেশে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। আগামী ২০১৯ সালে আবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে এটি একটি পরীক্ষামূলক নির্বাচন।
তবে শুধু নিরাপত্তার কারণেই ভোট হুমকির মুখে পড়ছে তা নয়। এর আগের নির্বাচনে দুর্নীতি ও প্রতারণার কারণেও ভোট বন্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটে। তার মধ্যে ব্যালট বাক্স ভরে ফেলা, বারবার ভোট দেওয়া এবং ভোটারের তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও উঠে।