চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

আফগানিস্তান ছেড়ে ইউক্রেনে আসা শরনার্থীর ‘খুবই মন্দ ভাগ্য’

‘আমি একটা যুদ্ধ থেকে বাঁচতে অন্য দেশে আশ্রয় নিয়েছি, এখন সেই দেশেও যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলো; খুবই মন্দ ভাগ্য’, বার্তা সংস্থা এএফপি’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন আজমল রহমানি।

এক বছর আগে আফগানিস্তান ত্যাগ করে ইউক্রেনে আশ্রয় নিয়ে আজমল রহমানি(৪০) ভেবেছিলেন এবার তিনি তার স্বর্গ খুঁজে পেয়েছেন। কিন্তু এই সপ্তাহে তাকে এবং তার পরিবারকে আবারও পালাতে হলো নিজেদের জীবন বাঁচাতে। এবার রাশিয়ার আক্রমণ থেকে বাঁচতে তাদের আশ্রয় নিতে হয়েছে প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ডে।

ইউক্রেন সীমান্তে গ্রিডলকের কারণে রহমানি তার স্ত্রী, ১১ বছর বয়সী সন্তান ওমর এবং ৭ বছরের কন্যা মারওয়াকে নিয়ে পায়ে হেঁটে পাড়ি দিতে হয়েছে ১৯ মাইল পথ।

পোলিশ প্রান্তের মেডিকাতে পৌঁছানোর পর তারা অন্যান্য শরনার্থী পরিবারের সাথে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলো যা তাদের পাশের শহর প্রজেমিসলে নিয়ে যাবে।

গত চারদিনের সংঘাতে হাজার হাজার মানুষ ইউক্রেন ত্যাগ করে পাশের দেশ পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি এবং রোমানিয়ায় আশ্রয় নিয়েছে। এসব শরণার্থীর মধ্যে শুধু ইউক্রেনের অধিবাসীই নয় রয়েছে শিক্ষার্থী, প্রবাসী শ্রমিক যারা আফগানিস্তান, কঙ্গো, ভারত এবং নেপালের নাগরিক।

আমি সব হারিয়ে ফেলেছি:

রহমানি বিগত ১৮ বছর ধরে আফগানিস্তানের কাবুল এয়ারপোর্টে ন্যাটোর হয়ে কাজ করেছে। যে কারণে তাকে নানান হুমকির সম্মুখীন হতে হয়, তার সন্তানদের স্কুল যাওয়া বন্ধ করে দেয়া হয়। এক সময় যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের ৪ মাস আগে তিনি আফগানিস্তান ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেন।

তিনি বলেন, আফগানিস্তানে আমার সুন্দর জীবন ছিলো। আমার নিজের বাড়ি, গাড়ির পাশাপাশি ভালো বেতনে চাকরি ছিলো। আমাকে আমার বাড়ি, গাড়ি সব বিক্রি করে দিতে হয়েছে। আমি সবকিছু হারিয়ে ফেলেছি। এসবকিছুর চেয়ে উত্তম আমার ভালোবাসা, আমার পরিবার।

রহমানি জানান, তাকে আফগানিস্তান ত্যাগ করার জন্য ভিসা পেতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে, তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ইউক্রেনে যাবেন, কারণ ইউক্রেনই এমন একটা দেশ যারা তাকে আশ্রয় দেবে।

এরপর ইউক্রেনে এসে তারা ওডেসায় বসবাস শুরু করে। যেখানে গত চারদিন আগে শুরু হওয়া আক্রমণের কারণে আবার তাদেরকে সব ফেলে ১১১০ কিলোমিটার ভ্রমণ করে অন্য দেশে আশ্রয় নিতে হয়।

পোলিশ কর্তৃপক্ষ জানায়, গত বৃহস্পতিবার থেকে ২ লাখ ১৩ হাজার মানুষ তাদের দেশে আশ্রয় গ্রহণ করেছে।

অভিবাসীদের জন্য দাতব্য সংস্থা ওকালেনিয়া’র আইনজীবী টোমাস পিটারজ্যাক বলেন, পোলিশ ভিসা ছাড়া রহমানি এবং তার পরিবারের মতো আশ্রয় নেয়া সকলের নিবন্ধনের জন্য ১৫ দিন সময় রয়েছে।

তিনি এটাও জানান, পোল্যান্ডের এই আইন দ্রুত সংশোধন করা খুব জরুরি।

রমহানি তার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত তবে পোল্যান্ডের উষ্ণ অভ্যর্থনায় তিনি অনুপ্রাণিতও। তিনি জানান, তাদের স্বেচ্ছাসেবক এবং কর্মকর্তাদের ব্যবহার আমাদের শক্তি যোগায়।