মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাশেম আলীর আপিল খারিজ করে মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন সর্বোচ্চ আদালত।
প্রথমে সম্পূরক কার্যতালিকায় ভুলের কারণে বিভ্রান্তি থাকায় আজ (মঙ্গলবার) মীর কাশেম আলীর আপিলের রায় হচ্ছে না বলে মনে করা হলেও পরে প্রধান বিচারপতির নির্দেশে কার্যতালিকায় সংশোধনী এনে রায় ঘোষণা করা হয়।
সকালে আদালতে গিয়ে দেখা যায়, আপিল বিভাগের সামনে ঝুলিয়ে রাখা কার্যতালিকায় ১ নম্বরে আছে মীর কাশেমের আপিলের রায়। এর পরে অন্যান্য মামলা।
মীর কাশেমের আপিলের রায় দেয়ার জন্য আজ পাঁচজন বিচারপতির থাকার কথা ছিলো। কিন্তু আদালতের এজলাস কক্ষে প্রবেশ করে দেখা গেলো, সেখানে পাঁচজন বিচারকের জন্য পাঁচটি আসনের পরিবর্তে নয়টি আসন রাখা হয়েছে। বেঞ্চ অফিসারের কাছ থেকে জানা গেলো, আপিল বিভাগে বর্তমানে যে নয়জন বিচারপতি রয়েছেন তারা সবাই এক সঙ্গে বসবেন।
তখন একটি নতুন সংশোধিত কার্যতালিকা এনে আগের কার্যতালিকার ওপর ঝুলিয়ে দেয়া হয়। সেখানে শুধু লেখা, আপিল বিভাগ ফুল বেঞ্চ, আর নিচে আদেশের জন্য আদালত। আর কিছুই লেখা ছিলো না।
এরপর আদালত কক্ষে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে নয় বিচারপতি আসন গ্রহণ করলেন। এরা হলেন, বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার, বিচারপতি মো. নিজামুল হক ও বিচারপতি মোহম্মদ বজলুর রহমান।
এরপরই একটি সম্পূরক তালিকা করে প্রথমেই প্রধান বিচারপতি অন্য বিচারপতিদের সঙ্গে নিয়ে ওই দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন।
এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বের হয়ে জানান, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক একটি সংগঠনের আলোচনা সভায় গিয়ে যে বক্তব্য রেখেছেন তা ‘অশোভন’। এতে বিচারকরা স্তম্ভিত ও খুবই মর্মাহত। এটি আদালত অবমাননা। কেননা বিচার বিভাগ স্বাধীন। এটি স্বাধীন বিচার বিভাগের ওপর ‘নগ্ন হস্তক্ষেপ’ বর্ণনা করে বিচারকরা ওই দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে রুল জারি করে জানতে চান কেনো আদালত অবমাননার দায়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে না।
ওই রুল অনুসারে, আগামী ১৪ মার্চের মধ্যে মন্ত্রী দু’জনকে নিজস্ব বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে এবং ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের বিচারিক কার্যক্রমের শুরুতে সশরীর হাজির হতে বলা হয়েছে। এরপরই বিচারকরা এজলাস ত্যাগ করে চলে যান।