চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

‘আপনি তো করেই যাচ্ছেন, আমি তো আছি’

কৃষি ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব এবং চ্যানেল আইয়ের বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ ‘স্মার্ট ফার্মিং’ সংক্রান্ত ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন: আমি মনে করি শুধু কৃষি পণ্য রপ্তানি করে আমরা বিপুল অর্থ উপার্জন করতে পারবো। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে একদিকে আইসিটি অর্থ্যাৎ ডিজিটাল ডিভাইস রপ্তানি; আরেকদিকে কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাত করে তা রপ্তানি করা। তাহলে বাংলাদেশে আর কোনো আর্থিক অসচ্ছলতা থাকবে না। আর আপনি (শাইখ সিরাজ) তো করেই যাচ্ছেন, আপনার যদি কোন কিছু প্রয়োজন হয়- আমি তো আছি, সব রকম সহযোগিতা করবো।

সোমবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে অংশগ্রহণ ও সফর নিয়ে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

শাইখ সিরাজ প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন রেখেছিলেন: ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি সারাদেশে ছড়িয়ে আছে। সমগ্র পৃথিবী স্মার্ট ফার্মিং এর দিকে আলোকপাত করছে। আমাদের দেশেও এটার হাওয়া বইতে শুরু করেছে। স্মার্ট ফার্মিং এর দিকে চলে যাওয়া এই বিষয়টাতে আমি আপনার মনোযোগ প্রত্যাশা করছি….

জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন: দেশের বাইরে থেকে ফরমুলা আনার বিষয়টি যেমন ঠিক, আমরাও কিন্তু বসে নেই। আমরা ৯৬তে ক্ষমতায় এসে দেখি গবেষণায় কোনো বরাদ্দ নেই, আলাদা বাজেট নাই! সঙ্গে সঙ্গে আমি টাকা দিলাম। আমাদের গবেষণা করতে হবে, কারণ গবেষণা ছাড়া আমরা কোন কিছু আবিষ্কার করতে পারবোনা, উৎকর্ষ সাধন করতে পারবোনা। এখন যদি আমি খাদ্যনিরাপত্তার কথা ধরি, তাহলে আমাদের অবশ্যই গবেষণা করতে হবে। আর এই গবেষণার বিষয়টা কিন্তু এমন না যে, আমি আজকে একটা গবেষণা করে কিছু একটা আবিষ্কার করলাম; এটাই সারা জীবন চলবে; তেমনটা না। এইযে হাইব্রিড ধান- প্রথম যখন আমরা ব্যবহার করি ধীরে ধীরে এর ফলনটা কমে আসে। আমাকে সাথে সাথে নতুন আরেকটা আবিষ্কার করতে হয়, এটা কিন্তু নিয়ম।

তিনি আরও বলেন: আমরা প্রথমে শুরু করলাম লবণাক্ত সহিষ্ণু ধান, খরা সহিষ্ণু ধান। আমাদের দেশের যেহেতু বন্যা হয়- দীর্ঘস্থায়ী বন্যা হয়। তাই আমরা চিন্তা করলাম জলমগ্ন সহিষ্ণু ধান আমরা কিভাবে করবো। সেই সঙ্গে সঙ্গে সবজিতে আমরা মনোনিবেশ করলাম। কবে শীতকাল আসবে, তখন টমেটো সিম এগুলো খেতে পারব; এর অপেক্ষায় থাকতাম। আজকে কি হচ্ছে. আজকে তো আপনি সবকিছুই সবসময় পাচ্ছেন। এটা কিন্তু আমাদের গবেষণার ফল। আজ দেশে ফলমূল তরি-তরকারি সবকিছুই হচ্ছে এগুলো গবেষণার ফসল।

এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শাইখ সিরাজকে কৃষি উন্নয়নে ভূমিকা রাখার জন্য ধন্যবাদ জানান।বলেন: আমি নিজেও আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। আপনি যেভাবে কৃষির ওপর কাজ করেন, শুধু আমাদের দেশ নয়; অন্য দেশে গিয়ে যেভাবে তাদের কৃষির কাজগুলো আমাদের সামনে নিয়ে আসেন, তাতে আমরা উপকৃত হই।

উন্নত গবেষণার দেশ গুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখাটা জরুরি মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন: আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। যারা গবেষণায় সফল হয়েছে, তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখাটা জরুরি; আর আমরা সেটা চেষ্টা করে যাচ্ছি। এই যে খরা সহিষ্ণু ধান- এটা কিন্তু আরেকটি দেশ থেকে আমাদের আনতে হয়েছে , চেয়েও আনতে হয়েছে- কিছুটা না চেয়েও আনতে হয়েছে।

কৃষিতে প্রক্রিয়াজাতকরণ আর রপ্তানির গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন: আমরা কৃষিজাত পণ্য রপ্তানির দিকে নজর দিচ্ছি। এটার জন্য যেটা দরকার, সেটা হচ্ছে- মাঠ থেকে ফসল তোলার পর সঠিক ব্যবস্থাপনা। এরজন্য একটা কার্গো ভিলেজ করতে হবে। প্রতিটা ফসলের জন্য আলাদা আলাদা চেম্বার থাকবে। আমাদের কার্গো লাগবে, এজন্য আমরা কার্গো কিনছি।

কার্গোতে সব ফসলের জন্য আলাদা আলাদা চেম্বার থাকবে বলে জানান তিনি।

এসময় নেদারল্যান্ডে স্মার্ট ফার্মিং এবং কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ স্বচক্ষে দেখার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।