জেন্ডার বিষয়ক কথিত ‘আপত্তিকর ছবি’ ব্যবহারের অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রিয়াজুল হককে সাময়িক বহিষ্কারের ঘটনার পরে বিশ্ববিদ্যালয়কে উকিল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। অ্যাডভোকেট জ্যোতির্ময় বড়ুয়ার মাধ্যমে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন ড. রিয়াজুল হক।
৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এই উকিল নোটিশের জবাব না দিলে রিট করা হবে বলেও জানানো হয়। উকিল নোটিশে রিয়াজুল হকের জন্য ন্যায়বিচার চেয়ে তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের দেওয়া বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়া বা পুনর্বিবেচনারও কথা বলা হয়েছে।
নোটিশটিতে আরো বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের নেওয়া এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে কোনোভাবেই ড. রিয়াজুল হককে লিখিতভাবে সচেতন করা হয়নি বা আত্মপক্ষ সমর্থনেরও সুযোগ দেওয়া হয়নি।
তবে এই আইনি নোটিশ পাওয়ার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী বলেছেন, যেহেতু আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে, সুতরাং এর জবাবও আমরা আইনিভাবেই দিবো।
শ্রেণিকক্ষে একটি প্রফেশনাল ব্যাচে জেন্ডার বিষয়ক একটি কোর্সে ‘আপত্তিকর চিত্র’ ব্যবহারের অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের এ অধ্যাপককে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।
অভিযোগ তদন্তে উপ-উপচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরিন আহমেদকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তিনি আবার নিজ পদে পুনর্বহাল হবেন নাকি স্থায়ী বহিষ্কার হবেন তা নির্ভর করছে তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর।
অধ্যাপক ড. রিয়াজুল হকের সাময়িক বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসির সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যর পাদদেশে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে অধ্যাপক রিয়াজের ওপর ‘অন্যায়ভাবে আরোপিত ভিত্তিহীন অভিযোগ, সাময়িক বহিস্কারাদেশ ও বিভাগীয় সকল ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদ জানায় শিক্ষার্থীরা। এসময় বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অচিরেই এ বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহারেরও দাবি জানান তারা।
এর আগে গত ৮ মার্চ অভিযুক্ত শিক্ষক অধ্যাপক রিয়াজুল হক চ্যানেল আই অনলাইনের কাছে দাবি করেছেন, তাকে কোন প্রকার সতর্ক না করেই একতরফাভাবে অভিযোগ তোলা হয়েছে। এ অভিযোগের বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না। তার সাময়িক বহিষ্কারের ব্যাপারটি তিনি জেনেছেন সংবাদমাধ্যমের খবর দেখে। এমনকি গত ২৭ ফেব্রুয়ারির সিন্ডিকেটে তার বিরুদ্ধে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও আজ পর্যন্ত তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বা চিঠি দিয়ে জানানো হয়নি। বিষয়টি নিয়ে পুরোপুরি অন্ধকারে রয়েছেন তিনি।