চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

আন্দোলন করতে হয় সম্মানের জন্য!

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের উপর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনায় শিক্ষকদের দিক থেকে আত্মসমালোচনার বিষয়টি তুলে ধরেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, সমাজত্ত্ববিদ এবং লেখক আমিনুল ইসলাম।

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে নিজের পেজে আমিনুল ইসলাম লিখেছেন: আজ শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পিটিয়েছে ছাত্রলীগ। ঘটনা হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়টির বেশ কিছু শিক্ষক, উপাচার্যের পদত্যাগ দাবী করে অবস্থান কর্মসূচী পালন করছিলেন; তখন ছাত্রলীগ কর্মীরা এসে ওই শিক্ষকদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়ার জন্য মারধর শুরু করে! আমি নিশ্চিত আজ দেশের সকল গণমাধ্যম ছাত্রলীগের সমালচনায় মেতে উঠবে! কোনো সংবাদ মাধ্যম দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্রদের নিয়ে জরিপ করবে না।

শিক্ষকদের সম্পর্কে বর্তমানে ছাত্রদের ধারণা সম্পর্কে তিনি লিখেছেন: আমি নিশ্চিত আপনি দেশের যে কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের গিয়ে যদি তাদের শিক্ষকদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন, তাহলে উত্তরগুলো পাবেন এই রকম

-এরা কিছু জানে নাকি? হয় রাজনীতি, নয়তো শিক্ষকদের পেছনে ঘুরে ঘুরে শিক্ষক হয়েছে! খুব বেশি হলে মুখস্থ করে!

-কিছু পড়ায় না, সারা দিন রাজনীতি, নীল-সাদা নিয়ে ব্যস্ত থাকে এরা! আমরা যা জানি সেটা নিজেরা পড়ে জানি। শিক্ষকরা কিছু পড়ায় না!

-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে টাকার জন্য ঠিকই হুজুর হুজুর করে পড়ায়, আর আমাদের এইখানে বছরে পাঁচটা ক্লাসও ঠিক মতো নেয় না।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের যোগ্যতা ও তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে তাদের ছাত্রছাত্রীদের মনে বিরূপ মনোভাব রয়েছে উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, এর অনেকগুলো হয়তো সত্য, আবার অনেক গুলো সত্য নাও হতে পারে। কিন্তু এই ধরণের মনোভাব আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি প্রায় ৯০ ভাগ ছাত্রছাত্রীর রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য এবং তার সমর্থক শিক্ষকদের নির্দেশে শিক্ষকদের লাঞ্চিত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি লিখেন, কারণ এরা পাশেই দাঁড়িয়ে এই ঘটনার মজা নিয়েছে। তবে এতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই! যেই শিক্ষকরা আজ মার খেলো; তারাও দেখবেন দুই দিন পর নিজেদের প্রতিপক্ষ শিক্ষকদের নাজেহাল করার জন্য ওই ছাত্রদেরই আবার ব্যাবহার করবে!

শিক্ষকদের প্রতি ছাত্র-ছাত্রীদের সম্মানের জায়গাটি অনেকটাই নেমে এসেছে উল্লেখ করে তিনি লিখেন: শিক্ষকদের যখন এই অবস্থা, তখন কোন ছাত্র-ছাত্রী তাদের রেসপেক্ট করতে আসবে আমার ঠিক জানা নেই! এখন তো মার খাচ্ছে, ভবিষ্যতে ছাত্র-ছাত্রীরা রাস্তায় দেখা হলো তুই-তোকারি করে কিনা সেটা নিয়ে আমি সন্দিহান! শুনেছি দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নাকি নিজেদের মর্যাদা বাড়ানোর জন্য আন্দোলন করছে। হ্যাঁ, এখন এদের রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে হয় সম্মানের জন্য! নিচে নামতে নামতে নিজেরাই জানে না এদের অবস্থান এখন ঠিক কোথায়!