চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনের দাবি কক্সবাজারবাসীর

কক্সবাজার থেকে: বিশাল জলরাশির ঢেউ আছড়ে পড়ছে সৈকতে। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সাকিব-তামিম-মোস্তাফিজ-মাশরাফিরা পারফর্ম করছেন। সমুদ্রের গর্জনের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে টাইগার সমর্থকদের গর্জন। কক্সবাজারবাসীর এই মনছবি এখনো সত্যের ছোঁয়া পায়নি। আন্তর্জাতিক ম্যাচই যে হচ্ছে না এখানে। কবে নাগাদ হবে সেটিও নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) গ্রাউন্ডস অ্যান্ড ফ্যাসিলিটিজ কমিটির ম্যানেজার সৈয়দ আব্দুল বাতেন চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান এই স্টেডিয়ামকে ঘিরে ব্যাপক পরিকল্পনার কথা। তবে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কতদিনে হবে সে ধারণা দিতে পারেননি তিনি।

কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম নির্মাণের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল স্থানীয়দের। সৈকতের লাবনী পয়েন্টে ৪৯.৫ একর জমির ওপর ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্মাণ কাজ শেষে ‘শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম’ নামে উদ্বোধন করা হয়।

স্টেডিয়ামের ভেতরে তিনটি মাঠ, দুটি জলাধার ছাড়াও রয়েছে অবকাঠামো গড়ে তোলার মতো ফাঁকা জায়গা। সীমানা প্রাচীরের শেষাংশে ছোট-ছোট নারকেল গাছের সারি। দেয়ালের ওপারেই ঝাউবন। যা আবৃত করে রেখেছে ৪৯.৫ একরের বিশাল প্রাঙ্গণ।

২০১৪ সালের মার্চে টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচ হওয়ার কথা থাকলেও উইকেট নতুন থাকায় এ মাঠে খেলানোর ঝুঁকি নেয়নি বিসিবি। তবে ২০১৬ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের বেশ কয়েকটি ম্যাচ হয়েছে এখানকার পাশাপাশি দুটি মাঠে। অনুশীলন চলেছে একই আকৃতির একাডেমি মাঠে। এবার আট দেশের অংশগ্রহণে ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপের ‘বি’ গ্রুপের সবগুলো ম্যাচ হয়ে গেল। ‘বি’ গ্রুপে স্বাগতিক বাংলাদেশ থাকায় দর্শক উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ক্রিকেটের প্রতি সাগরপাড়ের মানুষের যে অকৃত্রিম ভালোবাসা সেটিই মাঠে এসে প্রমাণ করেছেন তারা।

মাঠে আসা দর্শকদের দাবি এখানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনের। সেটি আয়োজনের জন্য যা যা করা দরকার সেটি দ্রুত করার দাবি জানালেন তারা। উখিয়া উপজেলা থেকে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ দেখতে আসা সোহেল ইসলাম বলেন, ‘অনেকদিন হল স্টেডিয়াম হয়েছে। কিন্তু আমরা আন্তর্জাতিক খেলা দেখতে পারিনি। এখানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ হলে ভালো হবে। বিচের সঙ্গে এত বড় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দল খেলবে না এটা তো ভাবাই যায় না।’ কক্সবাজার সদর, কুতুবদিয়া, চকরিয়া উপজেলা থেকে আসা ক্রিকেটভক্ত মামুন, আমজাদ, দীপনসহ আরও কয়েকজন তরুণ জানালেন একই দাবির কথা।

স্টেডিয়ামের মূল মাঠের উত্তর দিকে করা হয়েছে প্যাভিলিয়ন। যার সামনের অংশটি দর্শকদের। আসন সংখ্যা ১৬০০। কবে হবে পূর্নাঙ্গ গ্যালারি? সৈয়দ বাতেন বললেন, ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ, বিসিবি, ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় যৌথভাবে কাজ করবে। একটু সময় তো লাগবেই। আমরা তাড়াহুড়ো না করে চাচ্ছি একবারে একটি ক্রীড়া কমপ্লেক্স আকারে রূপ দিতে। পানির স্তর উপরে হওয়ায় মাঠকে আরও কয়েক ফিট উঁচু করতে হবে। সুইমিংপুল হবে, ডরমিটরি হবে, সবুজ গ্যালারি হবে। যা যা দরকার সবই হবে। তারপর আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনের প্রসঙ্গ আসবে।’

স্টেডিয়ামকে পুঁজি করে পর্যটনে এগিয়ে যাচ্ছে অনেক দেশই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কথাই ধরা যাক না। গায়ানা, বাবার্ডোজ, জ্যামাইকা, সেন্ট ভিনসেন্টের স্টেডিয়ামগুলোর কোনটি সাগরের কোলঘেঁষা নয়তো পাহাড়ঘেরা। একেকটা দ্বীপ যেন নীরবে পর্যটকদের কাছে টানার চেষ্টা চালায়। এদিক থেকে পিছিয়ে বাংলাদেশ। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারকে বিশ্বের কাছে পরিচিত করার সুযোগ কাজে লাগানো যাচ্ছে না সংশ্লিষ্টদের দীর্ঘসূত্রিতায়।