চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ধর্ষকদের খুনি হারকিউলিস

গত কিছুদিনে ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত তিনজনকে হত্যা এবং রক্তাক্ত মরদেহের পাশে পাওয়া চিরকুট নিয়ে ব্যাপক আলোচনায় সরগরম দেশের গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো।

রাজধানীর অদূরে সাভার থেকে শুরু করে ঝালকাঠির ভাণ্ডারিয়ায় ধর্ষণে অভিযুক্ত এই তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে প্রায় একই কায়দায়। বিশেষ করে শেষের হত্যার ঘটনায় হত্যাকারী নিজের পরিচয় ‘হারকিউলিস’ উল্লেখ করায় দেশজুড়ে আলোচনা হচ্ছে এ নিয়ে।

তবে বাংলাদেশের এ ধরনের আলোচিত কোনো ইস্যুতে অন্যান্য সময়ের তুলনায় এবার এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তেমন কোনো কাভারেজ দেখা যাচ্ছে না। শুধু ভারত এবং যুক্তরাজ্যের ২/১টি গণমাধ্যমই এই বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম ‘দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ ‘Hercules’ goes after gangrape accused in Bangladesh; three killed’ শিরোনামে শনিবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।হারকিউলিস-হত্যা-ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত

প্রতিবেদনটির শুরু এরকম: ‘পুলিশ গত শুক্রবার বাংলাদেশের ঝালকাঠির রাজাপুর সদর ইউনিয়ন থেকে গণধর্ষণের মামলার এক সন্দেহভাজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। মরদেহের পাশে চিরকুটে হত্যাকারীর নাম লেখা ছিল হারকিউলিস।’

প্রকাশিত সংবাদে চিরকুটের পুরো বক্তব্য, এর আগে হওয়া দু’টি হত্যাকাণ্ড ও সেগুলোতে লাশের সঙ্গে থাকা চিরকুটের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

ভারতের আরেকটি গণমাধ্যম ‘দ্য স্টেটসম্যান’ও শনিবার এ নিয়ে রিপোর্ট করেছে। অভিযুক্ত ধর্ষকদের খুনিকে সিরিয়াল কিলার আখ্যা দিয়ে প্রতিবেদনটির শিরোনাম করা হয়েছে এভাবে: ‘Bangladesh: Serial killer ‘Hercules’ on the prowl, kills alleged rapists’হারকিউলিস-হত্যা-ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত

প্রতিবেদনটিতে দ্য স্টেটসম্যান বলেছে: ‘‘হারকিউলিস’ পরিচয় দেয়া এক সন্দেহভাজন সিরিয়াল কিলার বাংলাদেশের পুলিশদের দৌড়ের ওপর রেখেছে। দেশটিতে গত দু’সপ্তাহে তিনটি মরদেহ পাওয়া গেছে, যার প্রতিটিই ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের। প্রতিটি মরদেহের সঙ্গেই খুনি একই ধরনের একটি করে চিরকুট রেখে গেছে।’

এরপর নিহত তিনজনের পরিচয় ও চিরকুটের বার্তা উল্লেখের পাশাপাশি মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের মন্তব্য তুলে ধরা হয়েছে রিপোর্টটিতে।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘মিরর’ অবশ্য এই হত্যাকাণ্ডের ইস্যু নিয়ে রিপোর্ট করেছে এক সপ্তাহ আগে। সেখানে ঝালকাঠির হত্যার ঘটনাটি তাই নেই। ফলে ‘হারকিউলিস’ নামটিও আসেনি।

‘Two separate rape suspects found dead with ‘punishment’ notes tied around necks’ শিরোনামে সংবাদটিতে সাভার ও পিরোজপুরে হওয়া দুই ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি রিপন ও সজল সম্পর্কে তথ্য দেয়া হয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তাদের বরাতে মিরর জানায়, দু’টো হত্যাকাণ্ডই প্রায় একই পদ্ধতিতে ঘটানো হয়েছে।

তবে তৃতীয় হত্যাকাণ্ড এবং হারকিউলিসের আবির্ভাব নিয়ে আর কোনো প্রতিবেদন বা আপডেট প্রকাশ করেনি ব্রিটিশ এই গণমাধ্যম।হারকিউলিস-হত্যা-ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত

সাভারে নিহত রিপনের লাশের সঙ্গে পাওয়া চিরকুটে লেখা ছিল, ‘আমি ধর্ষণ মামলার মূলহোতা।’ অন্যদিকে নিহত সজলের লাশের সঙ্গে থাকা চিরকুটে লেখা ছিল, ‘আমার নাম সজল। আমি পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার রহিমার (ছদ্মনাম) ধর্ষক। ইহাই আমার পরিণতি।’

প্রথম দুই হত্যাকাণ্ডে হত্যাকারীর পরিচয় পাওয়া না গেলেও তৃতীয় হত্যাকাণ্ডে ধর্ষকদের সাবধান করে এ বিষয়ে ক্লু দেয়া হয়েছে। ঝালকাঠিতে পাওয়া তৃতীয় মরদেহের বুকে লেখা ছিল, ‘আমি পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার রহিমার (ছদ্মনাম) ধর্ষক রাকিব। ধর্ষণের পরিণতি ইহাই। ধর্ষকরা সাবধান। হারকিউলিস।’

আর এই ‘হারকিউলিস’র পরিচয় নিয়ে জল্পনা-কল্পনা করেই হইচই দেশজুড়ে।