বাংলাদেশে ‘মুসলিম ভিলেজ’ নামে একটি গ্রাম থেকে নিজেদের কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা করছিল নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্যরা।
আনসার আল ইসলামের জঙ্গিদের পরিকল্পনা ছিল, ‘সেখানে কথিত মানুষের তৈরি নীতি নয়, আল্লাহর আইনে সবকিছু চলবে। এমনকি কেউ সরকারকে কোনো খাজনা দিবে না।’
তবে মুসলিম ভিলেজ প্রতিষ্ঠা করতে গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তারের আশঙ্কা থেকে সশস্ত্র প্রতিরোধের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তারা। এজন্য অস্ত্র, বিস্ফোরক সংগ্রহ করে নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করছিলেন।
শনিবার পাবনা শহর থেকে আব্দুল্লাহ আকাশ (২৫) নামে আনসার আল ইসলামের এক সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এমন তথ্য জানায় র্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটালিয়ন (র্যাব-২)।
গ্রেপ্তার আকাশের কাছ থেকে ইমপ্রোভাইজড বোমা তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামসহ জঙ্গিবাদী বই, পিডিএফ ডক্যুমেন্টস ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, গত ২৯ জানুয়ারি মুন্সিগঞ্জ থেকে আনসার আল ইসলামের ৩ সদস্যকে বিস্ফোরক দ্রব্যসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাদেরকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগঠনটির সাতজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার পাবনার বিসিক শিল্প এলাকা সংলগ্ন কলাবাগান মাঠপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে আব্দুল্লাহ আকাশকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আকাশকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র্যাব-২ এর স্পেশালাইজ ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানির কমান্ডার পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকী চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: বাংলাদেশে ‘মুসলিম ভিলেজ’ নামে একটি গ্রাম থেকে তাদের কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা ছিল। মুসলিম ভিলেজের কনসেপ্ট হলো- সেখানে আল্লাহর আইন হবে, মনুষ্য কোন নীতিতে গ্রাম চলবে না, কেউ সরকারকে কোন খাজনা দিবে না।
গ্রাম পর্যায় থেকে আনসার আল ইসলামের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করার পরকল্পনা করছিলেন তারা। সে অনুযায়ী ‘মুসলিম ভিলেজ’ প্রতিষ্ঠা করতে গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনুমোদন দিবে না কিংবা গ্রেপ্তারের আশঙ্কা থাকে। তাই সশস্ত্র প্রতিরোধের জন্য অস্ত্র, বিস্ফোরক, ইমপ্রোভাইজড বোমা তৈরির সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করে নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করছিলেন।
আনসার আল ইসলামে যোগদানের ক্ষেত্রে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের কোমলমতি যুবকদের টার্গেট করে উদ্বুদ্ধ করে আসছিলেন তারা।
গ্রেপ্তার আকাশকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান এসপি মহিউদ্দিন ফারুকী।