ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে অাটক দুই বাংলাদেশি আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য বলে ধারণা করছে দেশটির গোয়েন্দারা। তাদের মধ্যে একজন নিজের নাম বদলে তুষার বিশ্বাস হয়েছেন। পুলিশের কাছে নিজেকে একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবেও দাবি করেন তিনি।
মঙ্গলবার কলকাতা রেলওয়ে স্টেশন থেকে আল-কায়েদা জঙ্গি সন্দেহে এ দুই বাংলাদেশিসহ তিনজন আটক করে ভারতীয় পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। তাদের মধ্যে একজন পশ্চিমবঙ্গে অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে পরিচিত।
আটক দুই বাংলাদেশির একজনের নাম সানসাদ মিয়া ওরফে তানভির ওরফে সাইফুল। তার বাড়ি সিলেটে। আরেকজন ২৬ বছর বয়সী রিয়াজ ওরফে রিয়াজুল ইসলাম ওরফে সুমন। তার বাড়ি খুলনায়।
গ্রেপ্তার হওয়া দুই বাংলাদেশিদের একজনের কাছে ভারত সরকারের দেয়া আধার কার্ডের মতো দেখতে একটি কার্ড উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় ফ্ল্যাশ ড্রাইভার, নানা কাগজপত্র এবং অন্যান্য জিনিসপত্র।
এসব দেখে এসটিএফের ধারণা, তারা বাংলাদেশে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য।
এই সংগঠনটির বিরুদ্ধে বাংলাদেশে কয়েকজন ব্লগার হত্যাকাণ্ড ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও আনসারুল্লাহ বাংলা টিম ভারতীয় উপমহাদেশের আল কায়েদা বা একিউআইএসের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে ধারণা করা হয়।
সানসাদ মিয়ার কাছে পাওয়া ভুয়া আধার কার্ডে তার নাম লেখা তুষার বিশ্বাস। তার দাবি তিনি একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার।
কলকাতা থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরত্বের উত্তর চব্বিশ পরগনার বশিরহাটের বাসিন্দা আটক হওয়া তৃতীয় জন। তার নাম মনোতোষ দে, বয়স ৪৬ বছর।
একটি ৩২ এমএম পিস্তল এবং ওয়ান শুটার বন্দুক এই তিনজনের কাছ থেকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে কিভাবে বিষ্ফোরক তৈরি করা যায় সেই বিষয়ক একটি বই, কেমিকেল বিক্রেতা দোকানের ভিজিটিং কার্ড, কোনো এলাকা কিভাবে প্রাথমিক পরীক্ষণ করা যায় সেই বিষয়ক বই এবং বাংলা ও ইংরেজিতে আল কায়েদা সংশ্লিষ্ট বক্তব্য, ল্যাপটপ ও ফ্ল্যাশ ড্রাইভ উদ্ধার করা হয়।
কলকাতার দুটি জায়গা ইডেন গার্ডেন ও ধর্মতলা লেখা কিছু পেপারও তাদের কাছে পায় পুলিশ।
এসটিএফের ডেপুটি কমিশনার মুরলিধর শর্মা বলেন, কলকাতা ও তার আশেপাশে কয়েকদিন থেকে আবার নজরদারি বেড়েছে। তাদেরকে চিহ্নিত করা খুব সহজ ছিলো না কারণ না তারা কোনো হোটেলে ছিলো, না থাকতো কোনো গেস্ট হাউজে। তারা রেল স্টেশন ও বাস স্টপেজেই থাকতো। ৪-৫ দিন আগে, আমাদের নজর ওই দুই বাংলাদেশির উপর পরে এবং তারা যখন অস্ত্র পাচারকারীর সঙ্গে দেখা করে তখনই তাদের ধরে ফেলি।
তাদের কাছ থেকে পাওয়া জিনিসগুলো পুলিশ পরীক্ষা করবে পরিপূর্ণ ধারণা পাওয়ার জন্য যে কি ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের পরিকল্পনা করছিলো তারা। তবে প্রাথমিকভাবে এটা নিশ্চিত যে, বাংলাদেশিরা গত ১৮ মাস থেকে ভারতে আছে কিন্তু কোনো পাসপোর্ট বা ভিসা তৈরি করতে পারেনি।