রাজধানীর মোহাম্মদপুরে কিশোরদের গ্যাং কালচারে নিহত স্কুলছাত্র মহসিন (১৬) হত্যায় জড়িত দুই আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের হাতে নানা তথ্য আসছে। পুলিশ বলছে, মহসিন ছিলেন কিশোর গ্যাং ‘ফিল্ম ঝির ঝির’ গ্রুপের সদস্য। একই এলাকার ‘আতঙ্ক’ নামে আরেক গ্রুপের সদস্যরা খুন করে তাকে।
বুধবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের সাত মসজিদ হাউজিংয়ের পাইওনিয়ার গলিতে ছুরিকাঘাত করে মহসিনকে খুন করা হয়। ওই ঘটনায় নিহতের বড়ভাই ইউসুফ আলী বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ১০/১৫ জনের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ জানায়, এজাহারভুক্ত প্রথম ও দ্বিতীয় আসামি আসিফ (১৮) ও রকিকে (১৮) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞাত নামা আসামিদের মধ্যে আরো দুজন গ্রেপ্তার আছে।
গ্রেপ্তার হওয়া আসিফের বাবা মাছ ব্যবসায়ী এবং রকির বাবা গার্মেন্টসকর্মী। মহসিন হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা পারভেজকে গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।
মামলার তদন্ত তদারকি কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ফারুক হোসেন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, বুধবার বিকেল তিনটার দিকে এক বান্ধবীকে নিয়ে ঢাকা উদ্যান এলাকায় ঘুরতে যান পারভেজ, ওই সময় সেখানে উপস্থিত হন মহসিন। সেই বান্ধবীকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে মহসিন পারভেজের মোবাইল ও এক হাজার টাকা রেখে দেন।
পরে পারভেজ তার সঙ্গীদের ডেকে মহসিনের এলাকা চাঁদ উদ্যান এলাকায় যান। সেখানে মহসিনকে পেয়ে ১৫/২০ জন মিলে প্রথমে মারধর এবং পরে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করা হয়। তখন মহসিনকে বাঁচাতে তার তিন বন্ধু এগিয়ে গেলে তারাও আহত হন।
ছুরিকাঘাতের পর গুরুতর আহত অবস্থায় মহসিনকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ৮ টার দিকে চিকিৎসকরা মহসিকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত মহসিন স্থানীয় চাইল্ড হ্যাভেন ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়তেন।
আহত সাব্বির (১৭) ও রাকিব (১৭) নিহত মহসিনের সঙ্গেই লেখাপড়া করতেন। আর রুবেল (২৩) প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে চাকরি করেন।
পুলিশ বলছে, মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান ও কাটাসুর এলাকার স্থানীয়রা জানায়, ‘ফিল্ম ঝির ঝির’ ও ‘আতঙ্ক’ দুটি কিশোর গ্রুপের বেশিরভাগই স্কুল পড়ুয়া। তারা মোহাম্মদপুর এবং আশেপাশের এলাকায় বসবাস করে।
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় এজাহারভুক্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও মূলহোতা পারভেজসহ সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তার পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।