ভুয়া এজেন্সি খুলে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ২০১০ সাল থেকে শিক্ষিত বেকার যুবকদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে একটি চক্র।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন এর বাসন থানাধীন আমতা এসএইচ টাওয়ারের চতুর্থ তলায় লাইফওয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট লিঃ (পিভিটি) নামক ভুয়া এজেন্সিতে অভিযান চালিয়ে প্রতারণা চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডির রমনা ইউনিট।
গ্রেপ্তারকৃতরা – ইসমাইল হোসেন (৩০), আরিফুল হক পলাশ (৩০), লিটন রনি (২৫), সাদ্দাম হোসেন (২৫), আব্দুল কাদের (৩৫), আব্দুস সালাম (২৬), মাসুদ রানা (৩১)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে সিটিসি এলইডি মনিটর ১০টি, রাইস কুকার একটি, একটি ডিনার সেট, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার মার্কেটিং লেখা একটি ক্রেস্ট, সাপ্তাহিক ইন্সেন্টিভ এর তালিকা, সিটি ব্যাংকের বিভিন্ন হিসাব নাম্বার টাকা জমা প্রদানের রশিদ বই, ট্রেনিংয়ের নামের তালিকা সম্বলিত খাতা, পূরণকৃত সদস্য ফরম ১০ টি, অফিসের টাকা লেনদেনের লেজার খাতা, অফিসে ব্যবহৃত ৩ টি ডিজিটাল সিল, অস্পষ্ট ও ঘষামাজা একটি সিল এবং একটি সিপিও।
মঙ্গলবার দুপুরে মালিবাগ সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার এনামুল কবির।
তিনি বলেন, ভিকটিমদের দেওয়া তথ্যমতে সোমবার গাজীপুর মেট্রোপলিটনের বাসন থানাধীন আমতা এস এস টাওয়ারের চতুর্থ তলায় লাইফওয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড’এর সিটি এজেন্সি অফিসে সিআইডি রমনা ইউনিটের একটি দল অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে।
এ সময় আসামিদের কাছ থেকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা সারা দেশে প্রায় এই প্রতারণার জাল বিস্তার করে আছে এবং তাদের টার্গেট শিক্ষিত বেকার যুবকরা। তারা চাকরি দেবার নাম করে এই যুবকদেরকে প্রলোভন দেখিয়ে এই প্রতারণার ফাঁদে ফেলে।
কবির এনামুল কবির জানান এ সময় তারা আরো জানায়, তার এই যুবকদেরকে ১৫-২০ দিনের একটা কর্মশালা করায় এতে “উন্নত জীবন কেমন হবে বা কেমন করে গঠন করতে হবে” এই সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিয়ে। তারা প্রতি জনের কাছ থেকে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করে থাকে চাকরি দেবার নাম করে।
তিনি জানান, আসামিরা আরো জানিয়েছে যে, তারা যখন চাকরি দিতে না পেরে ভিকটিমদের চাপের মুখে পড়ে। তখন তারা তাদেরকে আরও তিনজন এই কোম্পানিতে অ্যাড করিয়ে দিলে চাকরি হয়ে যাবে বা কমিশন পাবে এমন কথা বলে সদস্য সংগ্রহ করে। ২০১০ সাল থেকে এভাবেই তাদের এই প্রতারণা চলে আসছে।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার এনামুল কবির বলেন, গতকাল অভিযানের আগে আমরা এই চক্রের বিরুদ্ধে আরও দুটি অভিযান পরিচালনা করি। ২৫ সেপ্টেম্বর রাজধানী থেকে এই চক্রের ৩ সদস্য এবং ১৭ অক্টোবর এ চক্রের আরেক সদস্য কে গ্রেপ্তার করা হয়। এবং এই প্রতারণা চক্রের বিরুদ্ধে এটি আমাদের তৃতীয় অভিযান।
তিনি জানান, এই অভিযান প্রতারণা চক্রের বিরুদ্ধে আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। এই প্রতারণা চক্রকে নির্মূল না করা পর্যন্ত আমাদের অভিযান চালিয়ে যাব।