চলমান বিশ্বে দ্রুত বিকাশমান চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য গবেষণাই বিশ্ববিদ্যালগুলোর মুখ্য বিষয় হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্টজনরা।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত ‘গবেষণাই হোক বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ্য বিষয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ মন্তব্য করেন।
গবেষণা একটি দেশ ও সমাজকে টেকসই উন্নতির শিখরে আরোহন করতে মূল সহায়ক উল্লেখ করে গণতান্ত্রিক চেতনা সৃষ্টিতে গবেষণাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ্য বিষয়ে পরিণত করার জোর দাবি জানান বিশিষ্টজনরা।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), জনউদ্যোগ ও আইইডি নামক সংগঠন আয়োজন করে এই গোলটেবিল বৈঠক।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সংসদের রিসার্চ ডিরেক্টর ও কারাসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো কাজী সামিও শীশ।
পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আলী নকী, জনউদ্যোগ জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ডা. মুশতাক হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিভাগ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীমউদ্দিন, বাসদের কেন্দ্রীয় সাবেক ছাত্রনেতা রাজেকুজ্জামান রতন, জনউদ্যোগ জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব তারিক হোসেন মিঠুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদের তরুণ গবেষক তাহমিদুল ইসলাম প্রমুখ। এই সময় গবেষণা সংসদ ও বিভিন্ন পযায়ের তরুণ গবেষকরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, আমাদেরও সামগ্রিক অগ্রযাত্রা এমনকি টিকে থাকাও বহুলাংশে নির্ভর করবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মৌলিক ও প্রায়োগিক গবেষণা এবং গবেষণাভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যুগের এই চাহিদা পূরণে সক্ষমতা বৃদ্ধি খুবই ধীর গতিতে চলছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুফল পেতে হলে প্রয়োজন মৌলিক ও প্রায়োগিক গবেষণাভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা।
মূল প্রবন্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সংসদের রিসার্চ ডিরেক্টর কাজী সামিও শীশ বলেন, গবেষণার জন্য প্রয়োজন গবেষকের মতো চিন্তা করার দক্ষতা, গবেষকের মতো পাঠ করার দক্ষতা ও গবেষকের মতো লিখতে পারার দক্ষতা। এই ত্রয়ী দক্ষতা ব্যক্তির নিজস্ব চেষ্টা ও সুষ্ঠু শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে অর্জনযোগ্য। আর সম্মিলিতভাবে এই দক্ষতা অর্জন ও বৃদ্ধির জন্যে সবচেয়ে উপযোগী স্থান হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, সব শিক্ষার্থীর মাঝে সম্ভাবনা থাকে। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে প্রকৃত শিক্ষার্থী ও গবেষক তৈরি করতে হবে।
তিনি বলেন, গবেষণা প্রত্যেকটি মানুষের দৈনন্দিন কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত। পদ্ধতিগত জ্ঞান অর্জনে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণদের গবেষণায় উদ্ধুদ্ধ করার জরুরি। তরুণদের এই গবেষণায় সম্পৃক্ত করতে হবে।
এই ক্ষেত্রে তিনি তরুণদের গবেষণা সংগঠনগুলোর গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে তিনি প্রকৃত মানবিকগুণ সম্পন্ন সৎ মানুষ ও গবেষক তৈরির জন্য সামগ্রিক ইকোসিস্টেমের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।