চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

আক্রান্ত বাংলাদেশ

এমন হামলার শেষ কোথায়?

আমরা নিশ্চিত করেই বলতে পারি, এই হামলার উদ্দেশ্য শুধু অধ্যাপক জাফর ইকবালকেই হত্যা করা ছিল না, এটা ছিল দেশের প্রগতিশীল কণ্ঠস্বরগুলো চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়ার যে প্রক্রিয়া বেশ কয়েক বছর ধরে শুরু হয়েছে; তারই অংশ।

জঙ্গি, মৌলবাদী আর প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর ধারাবাহিক প্রাণনাশের হুমকির মধ্যে থাকা সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও দেশবরেণ্য লেখক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল শেষ পর্যন্ত হামলার শিকার হলেন। প্রাণ হারাতে হারাতে কোনো রকমে বেঁচে গেছেন তিনি। আমরা এরইমধ্যে জেনেছি, শনিবার বিকালে নিজের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই হামলার শিকার হন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এ অধ্যাপক। দেহরক্ষী বেষ্টিত অবস্থার মধ্যেই তার মাথাসহ শরীর একাধিক স্থানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে এক যুবক। হামলার সময় তিনি একটি পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। পেছন থেকে ওই যুবক তার ওপর হামলা করে। আমরা নিশ্চিত করেই বলতে পারি, এই হামলার উদ্দেশ্য শুধু অধ্যাপক জাফর ইকবালকেই হত্যা করা ছিল না, এটা ছিল দেশের প্রগতিশীল কণ্ঠস্বরগুলো চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়ার যে প্রক্রিয়া বেশ কয়েক বছর ধরে শুরু হয়েছে; তারই অংশ। আমরা মনে করি না এই হামলা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা। কারণ ব্লগার ও বিজ্ঞান বিষয়ক লেখক অভিজিৎ রায়কে হত্যার পর দেশে প্রগতিশীল আদর্শের ব্যক্তিদেরকে চিহ্নিত করে তাদের উপর ধারাবাহিক হামলা চালানো হয়েছিল। এমনকি কোনো ঘটনার আগে জঙ্গিগোষ্ঠী পূর্ব ঘোষণা দিয়ে হামলা করেছে। কিন্তু নির্মম হলেও সত্য সেইসব হামলায় জড়িতদের তেমন কোনো বিচার হয়নি। খুঁজে বের করা হয়নি তাদের মূল পরিকল্পনাকারী ও আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া গডফাদারদের। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ঘটনা ধামাচাপার দেয়ার চেষ্টাও দেখা গেছে। আর এরকম সংস্কৃতিতে সেই প্রতিক্রিয়াশীল চক্র আড়ালে, কখনো বা প্রকাশ্যে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এর পরিণতিতেই আজ ড. জাফর ইকবালের মতো দেশবরেণ্য ব্যক্তি তাদের হামলার শিকারে পরিণত হচ্ছেন। আজকের ঘটনা আবার প্রমাণ করল, ওই ভয়ঙ্কর গোষ্ঠীর অপতৎপরতা থেমে নেই, হিংস্র থাবা নিয়ে ঘাড়ের কাছে ওঁৎ পেতে আছে সুযোগের। আমরা মনে করি, তাদের প্রতি কঠোর না হলে এভাবে দিনের পর দিন তারা হামলা চালিয়েই যাবে।