নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনে সব চোখ যার দিকে ছিল তিনি প্রকাশ্যেই ভোট দিয়েছেন। তার দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে ব্যালট পেপারটি উঁচিয়ে ধরে সাংবাদিকদের দেখিয়েছেন শামীম ওসমান এমপি।
নগরীর বার একাডেমি ভোটকেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন আওয়ামী লীগের এ আলোচিত-সমালোচিত সংসদ সদস্য।
ব্যালট পেপারে গোপনে ভোট দেয়ার বিধান থাকলেও সেটা প্রকাশ্য করার বিষয়ে শামীম ওসমান বলেন: ‘আমি রক্তাক্ত হয়ে সাংবাদিক ভাইদের খুশি করলাম। কাল থেকে সাংবাদিক ভাইয়েরা নারায়ণগঞ্জে একটা ফুটেজ খুঁজছেন, আমি তার ব্যবস্থা করলাম।’
তিনি আরো বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ থেকে আওয়ামী লীগের শিক্ষা নেওয়ার সময় এসেছে। আমরা সব বিভেদ ভুলে এক হয়েছি নৌকার সঙ্গে। আমি পদত্যাগপত্র নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলাম। খালেদা জিয়া (নারায়ণগঞ্জে) আসলে আমি কারও কথা শুনতাম না, পদত্যাগ করে আইভির পক্ষে মাঠে নেমে যেতাম।’
গত মেয়র নির্বাচনে আইভীর প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন শামীম ওসমান। কিন্তু, নির্বাচনে হেরে যান তিনি। এবার প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকের নির্বাচনে শুরুতে তিনি আইভীর পক্ষে ছিলেন না। পরে প্রধানমন্ত্রীর ডাকে গণভবনে গিয়ে আইভীর উপস্থিতিতে তিনি দলীয় প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে থাকার ঘোষণা দেন।
শেষ পর্যন্ত তিনি প্রকাশ্যে ভোট দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করেন, আইভীর পক্ষেই ছিলেন শামীম ওসমান। নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীই জয়ী হবেন বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী জয়ের পর ডা. আইভী তাকে আইসক্রিম খাওয়াবেন বলেও শামীম ওসমান মনে করিয়ে দেন।
তবে, ভাট দেয়ার পর প্রচ্ছন্নভাবে তিনি আইভীর সমালোচনা করে বলেন: অামি আওয়ামী লীগের প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলতে চাই, তারা প্রমাণ করেছে প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়াই শেখ হাসিনার স্বার্থে, আওয়ামী লীগের স্বার্থে, কোন উস্কানিতে পা না দিয়ে তারা নৌকার পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
সেসময় একটি গণমাধ্যমের সমালোচনা করে শামীম ওসমান বলেন, গতরাতে অামি ঢাকা থেকে আসা সাংবাদিকদের আমার যতোটুকু সামর্থ্য সে অনুযায়ী আপ্যায়ন করেছি। সাংবাদিকদের থাকার জায়গা হচ্ছিলো না বলে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে আমার রুমটি ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু, একটি সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে, আমি নির্বাচনী কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেছি।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমের কেউ কেউ বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা করছেন।
ছবি: মাহবুব মোর্শেদ ও তানভীর আশিক।