রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে আইপিএল খেলতে ভারতে গিয়ে মুম্বাইয়ের একটি হোটেলে কোয়ারেন্টাইন সময় পার করছেন মোস্তাফিজুর রহমান। সঙ্গে আছেন স্ত্রী সামিয়া পারভীন শিমু। বিয়ের দুই বছরের মাথায় দুজনের প্রথম বিদেশ সফর। অথচ তাদের পালন করতে হচ্ছে কঠোর কোয়ারেন্টাইন।
মুম্বাই থেকে মুঠোফোনে চ্যানেল আই অনলাইনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে টাইগার পেসার শুনিয়েছেন এবারের আইপিএল নিয়ে নানা ভাবনার কথা।
নিউজিল্যান্ড থেকে ঢাকায় ফিরে বিমানবন্দর থেকেই বের হননি। মুম্বাই ছুটে যেতে হয়েছে। আইপিএল খেলতে যাওয়ার যে রোমাঞ্চ সেটি কি আদৌ টের পেয়েছেন?
মোস্তাফিজ: খুবই তাড়া ছিল। দেরি করে মুম্বাই এলে প্রথম ম্যাচে অ্যাভেইলেবল থাকতে পারতাম না। আমাদের প্রথম ম্যাচ ১২ এপ্রিল। আমার কোয়ারেন্টাইন শেষ হবে ১১ এপ্রিল। আজ চতুর্থ দিন চলছে। আগে যখন আইপিএল খেলতে আসতাম, সবার থেকে বিদায় নিয়ে আসতাম। অবশ্যই সেই পরিবেশটা মিস করি। বাবা-মা, ভাই, কাছের মানুষ, বন্ধু, সাংবাদিকদের থেকে বিদায় নিতাম, দোয়া চাইতাম। করোনা সবাইকে পর করে দিয়েছে (হাসি), এখন সে সুযোগ নেই। চাইলেও আগের মতো হবার সুযোগ নেই।
বিদেশ সফর মানেই তো কোয়ারেন্টাইন। নিউ নরমালের সঙ্গে কতটা মানিয়ে নিতে পেরেছেন?
মোস্তাফিজ: কোয়ারেন্টাইন সবসময়ই বিরক্তিকর। নিউজিল্যান্ডে ১৪দিন ছিল। এখানে ৭দিন। পার্থক্য শুধু সময়ে। কঠোর সব জায়গাতেই। রুমেই বন্দি থাকতে হয়। দরজার সামনে খাবার দিয়ে যায়, রুমে বসে খাই।
সময় কাটছে কী করে?
মোস্তাফিজ: নাটক দেখে। খেলা তেমন দেখা হয় না। সিনেমাও দেখা হয় না। দুজন বাংলাদেশের নাটক দেখেই সময় পার করছি।
বিয়ের পর তো প্রথম ভাবীকে নিয়ে দেশের বাইরে গেলেন…
মোস্তাফিজ: হ্যাঁ, এবারই প্রথম। ওর ভার্সিটির ক্লাস বন্ধ, অবসর সময়ই পার করছিল। এজন্য তাকে নিয়ে আসা।
বিশ্বকাপের সময় বলছিলেন, বল ভেতরে ঢোকানো রপ্ত করা জরুরি। এই স্কিল নিয়ে সম্প্রতি খুব পরিশ্রম করেছেন। কিছুটা প্রয়োগও দেখেছি। আইপিএলে এই স্কিল কতটা কাজে দেবে?
মোস্তাফিজ: খেলাটা টি-টুয়েন্টি। এখানে ইনসুইং কতটা কাজ করবে সেটি দেখতে হবে। খুব বেশি ট্রাই করলে হিতে বিপরীতও হতে পারে। পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে। এখনো টিম মিটিং হয়নি। নতুন বলে বল করলে তো বল ভেতরে ঢোকাতেই হবে। ডেথ ওভারে করলে আরেকরকম। ইনসুংই নিয়ে নিজেকে খুব বেশি পুশ করার ইচ্ছা নেই।
নিজের সেরা অস্ত্র কাটারেই তাহলে ভরসা রাখবেন?
মোস্তাফিজ: এখানকার কন্ডিশনে কাটার ভালো হয়। আর কাটারে সাফল্যও পেয়েছি অতীতে। এটাতে যদি ভালো হয় চেষ্টা করবো বৈচিত্র্য বাড়াতে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে হওয়া আইপিএলের গত আসর খেলতে পারেননি ক্রিকেট বোর্ড অনাপত্তিপত্র না দেয়ায়। একটা মৌসুম না খেলায় কি নতুন করে শুরু করতে হবে আপনাকে? আইপিএল খেলার জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে কতটা প্রস্তুত আপনি?
মোস্তাফিজ: টি-টুয়েন্টি সবসময়ই প্রেসার গেম। ইনটেনসিটি খুব হাই। যত তাড়াতাড়ি মানিয়ে নিতে পারবো তত ভালো। তার আগের তিনটা আসর খেলেছি। অভিজ্ঞতা কিছুটা হলেও হয়েছে। আর নিউজিল্যান্ডে যেহেতু সাদা বলের ক্রিকেট (ওয়ানডে, টি-টুয়েন্টি) খেলেই এসেছি, সমস্যা হওয়ার কথা না। যদিও ওখানকার কন্ডিশনে তেমন ভালো করতে পারিনি।
সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের পর এবার রাজস্থানের হয়ে খেলবেন। দলটা কেমন?
মোস্তাফিজ: টিম ভালো। সবধরনের খেলোয়াড়ই আছে।
শুক্রবার আইপিএল শুরু। যদিও আপনাদের ম্যাচ কয়েকদিন পর। দেড় মাসেরও বেশি সময় ২২ গজের লড়াই নিয়ে বিভোর থাকবেন। কী প্রত্যাশা করছেন নিজের পারফম্যান্স নিয়ে?
মোস্তাফিজ: ম্যাচ নিয়ে বেশি ভাবা উচিত না। পুরো আসর নিয়ে ভাবতে গেলে অযথা চাপ আসবে মাথায়। আমি ম্যাচ বাই ম্যাচ চিন্তা করবো। রাজস্থানের হয়ে আইপিএল মিশনে যেন সফল হতে পারি সেটি তো অবশ্যই চাইবো।