চলতি আইপিএল আসরের ৫১তম ম্যাচে মঙ্গলবার রাতে নামছে মোস্তাফিজুর রহমানদের রাজস্থান রয়্যালস ও রোহিত শর্মার মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। দুদলের জন্যই ম্যাচটি মহা-মহাগুরুত্বপূর্ণ। যে দল হারবে, তার প্লে-অফের আশা শেষ হয়ে যাবে।
শারজায় রাতের এ ম্যাচের জয়ী দলেরও যে প্লে-অফের আশা খুব বেশি উজ্জ্বল হবে তেমনও নয়, কাগজে-কলমের হিসাবে একটা সম্ভাবনা থাকবে কেবল, আর থাকবে অন্য দলগুলোর জয়-পরাজয় ও রানরেটের দিকে নজরের ব্যাপার।
১৩ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে এমুহূর্তে টেবিলের শীর্ষে আছে দিল্লি ক্যাপিটালস। তাদের সেরা চারে খেলা নিশ্চিত হয়ে গেছে অনেক আগে। এখন টেবিলের শীর্ষস্থান নিশ্চিতের লড়াই। হাতে আছে এক ম্যাচ।
দুইয়ে ১৩ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট জমানো মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস, তাদেরও সেরা চার নিশ্চিত। তারা যদি নিজেদের শেষ লিগ ম্যাচে জয় তুলতে পারে, দিল্লির সমান ২০ পয়েন্ট হবে। আবার দিল্লি যদি নিজেদের শেষ ম্যাচে জিতে যায়, চেন্নাই জিতলেও তাদের শীর্ষস্থানে থেকে কোয়ালিফায়ারে খেলা নিশ্চিত।
কিন্তু দিল্লি যদি নিজেদের শেষ ম্যাচে হেরে যায়, আর চেন্নাই নিজেদের ম্যাচে জেতে, তাহলে দুদলেরই পয়েন্ট হবে ২০ করে। রানরেটে অনেকটা এগিয়ে থাকায় শীর্ষস্থানটি হবে চেন্নাইয়ের। দিল্লির রানরেটও অনেক ভালো। দুদলের নিজ নিজ শেষ ম্যাচটি তাই শীর্ষস্থান নিশ্চিতের লড়াই।
কে না জানে আইপিএলে শীর্ষ দুইয়ে থাকার বড় একটি সুবিধা আছে। এই দুদল খেলে প্রথম কোয়ালিফায়ারে। জয়ী দল সরাসরি চলে যায় ফাইনালে। পরাজিত দলেরও থাকে আরেকটি সুযোগ। তারা টেবিলের তৃতীয় ও চতুর্থ দলের এলিমিনেটর ম্যাচের মধ্যকার জয়ী দলের বিপক্ষে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে লড়ে ফাইনালের টিকেট কাটার আরেকটি সুযোগ পায়।
এতো গেল শীর্ষ দুইয়ের আলাপ। প্লে-অফে খেলবে শীর্ষ চার। এমুহূর্তে হাতে দু-ম্যাচ রেখে, তথা ১২ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিনে আছে বিরাট কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। এমনিতে তাদের সেরা চারে খেলা নিশ্চিত।
কিন্তু বেঙ্গালুরু যদি নিজেদের শেষ দুই ম্যাচে জিতে যায়, তাহলে পয়েন্ট হবে ২০। তারা রানরেটে অনেক পিছিয়ে উপরের দুদলের চেয়ে। কিন্তু চেন্নাই যদি শেষ ম্যাচে হেরে যায়, আর বেঙ্গালুরু দু-ম্যাচেই জেতে, তাহলে কোহলির দলেরও সুযোগ থাকবে সেরা দুইয়ে থাকার।
আবার চেন্নাই যদি শেষ ম্যাচে হেরে বসে, আর বেঙ্গালুরু শেষ দু-ম্যাচের অন্তত একটিতে জেতে, তখন দুদলের পয়েন্ট হবে ১৮ করে। সঙ্গে যদি কোহলির দল রানরেটে সমূহ অস্বাভাবিক উন্নতি করে ফেলে, তখনও ধোনির দলকে টপকে শীর্ষ দুইয়ে থাকার সুযোগ আছে বেঙ্গালুরুর।
পরিস্থিতি যাই-ই হোক, দিল্লির শীর্ষ দুইয়ে থাকা একরকম নিশ্চিত। দুইয়ের বাকি দলটি হতে চেন্নাই ও বেঙ্গালুরুর মধ্যে একটা প্রতিযোগিতা রয়ে গেছে ভালোমতো।
প্লে-অফের চতুর্থ দল হতে আপাতত লড়াই সবচেয়ে বেশি। এখানে সম্ভাবনা আছে অন্তত চার দলের। দুই ম্যাচ হাতে রেখে কেবল ৪ পয়েন্ট জমাতে পারা সানরাইজার্স হায়দরাবাদ সামনে যেমনই খেলুক, তাদের প্লে-অফের আশা মিইয়ে গেলে আরও আগে।
প্লে-অফের আরেকটি দল হতে এখন লড়াই- কলকাতা নাইট রাইডার্স, পাঞ্জাব কিংস, রাজস্থান রয়্যালস ও মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের মধ্যে। কলকাতা ও পাঞ্জাবের ১৩ ম্যাচে পয়েন্ট যথাক্রমে ১২ ও ১০ করে। কলকাতা যদি নিজেদের শেষ ম্যাচে জেতে, তাহলে পয়েন্ট হবে ১৪, তখন পাঞ্জাবের আশা শেষ, কলকাতা দৌড়ে টিকে থাকবে সেরা চারের।
আবার যদি কেকেআর শেষ ম্যাচে হারে, কিন্তু নিজেদের শেষ ম্যাচে জিতে যায় পাঞ্জাব, তাহলে দুদলের পয়েন্ট হবে ১২ করে। তখন দুদলই টিকে থাকবে সেরা চারের লড়াইয়ে। তবে নজর রাখতে হবে রাজস্থান ও মুম্বাইয়ের দিকে।
রাজস্থান ও মুম্বাই এখনো ভালোভাবেই প্লে-অফের লড়াইয়ে আছে। কঠিন, কিন্তু সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি তাদের। দুদলের আবার দুটি করে ম্যাচ হাতে। আজ তাই রাজস্থান ও মুম্বাইয়ের মধ্যকার রাতের ম্যাচে যে হারবে, সে ছিটকে যাবে, আর জয়ী দল টিকে থাকবে প্লে-অফের সম্ভাবনার দৌড়ে।
টিকে তো থাকবে, সেজন্য জয়ী দলটিকে যেমন নিজেদের শেষ ম্যাচে জিততেই হবে, সঙ্গে নজর রাখতে হবে কলকাতা ও পাঞ্জাবের পরের ম্যাচগুলোর দিকেও। তাতে চার দলের জয়-পরাজয়েও হয়ত প্লে-অফের আরেকটি দল নিশ্চিত হবে না। টেবিলে যা অবস্থা, হার-জিতের সঙ্গে শেষঅবধি রানরেট বড় বিষয় হয়ে দাঁড়াতে পারে।