‘আদালতের আঙিনা’ থেকে আইনজীবী ইব্রাহিম খলিলকে ‘গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের’ অভিযোগে দায়ীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ প্রধানকে আহ্বান জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নব নির্বাচিত সভাপতি আব্দুল মতিন খসরু।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইব্রাহিম খলিলকে ‘গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের’ অভিযোগে আজ সমিতি ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত সাধারণ আইনজীবীদের প্রতিবাদ সভা থেকে তিনি এই আহবান জানান।
আব্দুল মতিন খসরু বলেন, ‘দেশের মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল এই সুপ্রিম কোর্টের বাউন্ডারিতে এসে আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী একজন আইনজীবীকে ধরে নিয়ে তার উপর নির্যাতন চালাবে, তা বরদাস্ত যায় না। যদি সে (আইনজীবী) অপরাধ করে থাকে, তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আইনজীবী সমিতিকে জানাতে পারত। মাননীয় প্রধান বিচারপতিকে জানাতে পারত। সে (আইনজীবী) তো চোর-ডাকাত না, সে তো ভেগে যাচ্ছে না, বাড়ি থেকেও তাকে গ্রেপ্তার করা যেত। যেটা করা হয়েছে সেটা বেআইনি ও ধৃষ্টতা, এটা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।’
আব্দুল মতিন খসরু আরো বলেন, ‘আমি আইজি সাহেব ও হোম মিনিস্টারকে অনুরোধ করতে চাই যে, প্লিজ তাদের চিহ্নিত করুন। তাদের বরখাস্ত করে বিচারের ব্যবস্থা করেন। তাদের এক সেকেন্ডও বাহিনীতে থাকার কোনো অধিকার নাই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অবশ্যই আইন অনুযায়ী কাজ করবে। তারাই যদি বেআইনি কাজ করে তাহলে অন্য দুর্বৃত্তরা কি করবে? আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তো দৃর্বৃত্ত হতে পারে না।’
আইনজীবীদের এই প্রতিবাদ সভায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ‘আইনজীবী ইব্রাহিম খলিলকে ‘নির্যাতন ও গ্রেফতারের’ ঘটনা নিয়ে প্রধান বিচারপতি এবং সমিতির সভাপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনের সাথে কথা বলেছি। তারপর ঢাকা কোর্টে আমারা ইব্রাহিম খলিলের জামিন শুনানিতে অংশ নিয়েছি। একপর্যায়ে আজ ইব্রাহিম খলিলের জামিন হয়েছে। তবে আমরা শুধু জামিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে চাই না। ইব্রাহিম খলিলকে যে নির্যাতন করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে আমাদের শক্ত অবস্থান নিতে হবে। ইব্রাহিম খলিলের মুক্তির পর তার বক্তব্যের ভিত্তিতে নির্যাতনের ঘটনায় যে বা যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ দেয়া হবে।’
আজকের এই প্রতিবাদ সভায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, নব নির্বাচিত সহসভাপতি অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন, সফিক উল্লাহসহ কয়েক’শ আইনজীবী অংশগ্রহণ করেন।
‘র্যাব সদস্যদের মারধর ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার’ অভিযোগে শুক্রবার র্যাব-১০ এর উপ-পরিদর্শক এনায়েত হোসেন বাদী হয়ে চকবাজার থানায় একটি মামলা করেন। সে মামলার এজাহারে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর লালবাগ এলাকা থেকে ইব্রাহিম খলিলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর শুক্রবার ইব্রাহিম খলিলকে ঢাকার অতিরিক্ত মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠান। আজ শুনানির পর ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন আইনজীবী ইব্রাহিম খলিলকে জামিন দেন।
এদিকে আইনজীবী ইব্রাহিম খলিলের একটি ভিডিও শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সে ভিডিওতে তিনি (ইব্রাহিম খলিল) র্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ আনেন এবং তাকে বুড়িগঙ্গা সেতু থেকে নদীতে ফেলে দিতে চায় হয়েছিল বলেও উল্লেখ করেন।’