দেশের টেলিযোগাযোগ নীতিমালায় আইটি ও আইটিএস যেখানে ২০২৪ সাল অবধি করমুক্ত রাখার কথা বলা হয়েছে, সেখানে দেশীয় কোনো প্রতিষ্ঠান সফটওয়্যার তৈরি করলে বা সেবা দিলেই এখনো চার শতাংশ বা কখনো কখনো আরো বেশি পরিমাণে অগ্রিম আয়কর প্রদান করে যেতে হচ্ছে আইটি প্রতিষ্ঠানগুলোকে। এখনো দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো সফটওয়্যার বা সেবা দিলে তাদের কাছ থেকে সাড়ে চার ভাগ অগ্রিম আয়কর কাটা হয়। যেখানে করমুক্ত রাখা হয়েছে আইটিকে সেখানে অগ্রিম আয়কর নেয়াটাকে ‘শুভঙ্করের ফাঁকি’ হিসেবেই অভিহিত করছেন অনেকে। এই ফাঁকির কারণে দেশী প্রতিষ্ঠানগুলোও অনেকখানি ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছে। উন্নয়নের পথেও আসছে অনেক বাধা। এমনটাই মনে করছেন দেশের আইটি বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সাবেক সভাপতি মোস্তফা জব্বার মনে করেন, আমাদের দেশীয় সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানগুলোর যেটা দেয়ার কথা না, সেই সম্পূরক শুল্কটাও তাদের প্রদান করতে হচ্ছে। এসব তো করমুক্তই রাখা হচ্ছে। তাহলে অগ্রিম আয়কর কেনো? এসব তো আর তেমন লাভজনক প্রতিষ্ঠান নয়। এর ফলে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় বেশ খানিকটা চাপ আসছে। এমনটা না হলে আইটিতে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হতো। দেশ আরো ভালো কিছু হয়তো পেতো আরো সহজে।
২০২৪ সাল অব্দি করমুক্ত রাখা হলেও, এখনও এই অগ্রিম আয়কর গ্রহণকে এনবিআরের ‘শুভঙ্করের ফাঁকি’ হিসেবেই উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, যেখানে আয়কর নাই, সেখানে আবার অগ্রিম আয়কর কেনো? কেনো ইন্টারনেটে ভ্যাট দেবো, কেনো সম্পূরক শুল্ক দেবো, কেনো ই-কমার্সে সাড়ে চার ভাগ ভ্যাট দেবো?
তবে এরই মধ্যে ব্যাপারটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে জানিয়েছেন বলেই জানান বেসিসের সভাপতি শামীম আহসান। তিনি বলেন, এটা আইটি প্রতিষ্ঠান বা সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বিশাল ভোগান্তি। একটি সফটওয়্যার কোম্পানীর সরকার থেকে যেসব সুবিধা পাওয়ার কথা সেসব থেকে অনেকটাই বঞ্চিত হচ্ছে। আইটি সেক্টরে এমনিতেই দেশের লাভের পরিমাণটা অনেক কম। সেখানে এই করের চাপ আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্থ করছে দেশকে ডিজিটাল হওয়ার পথে।
সমস্যাটা এখন আমরা এনবিআরে জানিয়েছি। আশা করি খুব দ্রুতই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
যোগাযোগ করা হলো জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়্যারম্যান নজিবুর রহমানের সঙ্গে। চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন, আমরা বিষয়টা দেখছি। তবে করের বিষয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবে বাজেট প্রণেতারা। তারা ঠিক যে সিদ্ধান্ত নেবে, এবং তারা যেভাবে আমাদের নির্দেশনা দেবে সেই অনুযায়ীই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড দ্রুত ব্যবস্থা নিবে।