মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপে সবার আগে সেমিফাইনালে খেলা নিশ্চিত করা অস্ট্রেলিয়াকে কোণঠাসা করে ফেলেছিল বাংলাদেশ। ১৩৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বিপর্যয়ে পড়ে অজিরা। ৭০ রানের ভেতর হারিয়েছিল ৫ উইকেট।
তবে বেথ মুনি ও অ্যানাবেল সাদারল্যান্ডের ৬৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটির কাছে আর পারেনি নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। দারুণ লড়াই করেও ৫ উইকেটের হার নিয়েই তাদের মাঠ ছাড়তে হয়।
শুক্রবার ওয়েলিংটনে চলমান ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে ৪৩ ওভারে নেমে আসে। অতি মাত্রায় বাতাসের কারণে পুরো ম্যাচ দুই ফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে স্টাম্পের উপর বেল না রেখেই খেলা সম্পন্ন হয়।
টসে হেরে আগে ব্যাট করা টিম টাইগ্রেস ৬ উইকেটে ১৩৫ রান করে। জবাবে ৩২.১ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে অজিরা জয় নিশ্চিত করে।
সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নামা অজিরা ২২ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায়। সালমা খাতুনের বলে ড্রেসিং রুমে ফেরেন অ্যালিসা হিলি। ১৫ রান করা এই ব্যাটার মারতে গিয়ে ডিপ স্কয়ারে জাহানারা আলমের হাতে ধরা পড়েন।
আগের ম্যাচে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা অধিনায়ক মেগ ল্যানিং রানের খাতা না খুলেই সালমার বলে বোল্ড হন। খানিক পর রাচেল হেইন্স ৭ রান করে আউট হন। সালমার বলে মিড অফে ফারজানা হকের তালুবন্দি হন।
এরপর তাহলিয়া ম্যাকগ্রা ৩ রান করে নাহিদা আক্তারের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে অস্ট্রেলিয়া বিপর্যয়ে পড়ে। অ্যাশলেইগ গার্ডনার ১৩ রান করে বোল্ড হন রুমানা আহমেদের বলে, পঞ্চম উইকেট হারিয়ে আরও চাপে পড়ে অজিরা। তাদের স্কোর তখন ৭০। গার্ডনারকে শিকার বানিয়ে প্রথম বাংলাদেশি নারী ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডেতে ৫০ উইকেট শিকার করেন রুমানা।
২১তম ওভারে অ্যানাবেল সাদারল্যান্ডের ফিরতি ক্যাচ নিতে পারেননি ঋতু মণি। এই সুযোগে বেথ মুনির সঙ্গে বেথ অ্যানাবেল কার্যকরী জুটি গড়ে তুলতে থাকেন।
দলীয় ৭৯ রানের পর ১২০ রানের মাথায় আবারো ফিরতি ক্যাচ দিয়ে জীবন পান সাদারল্যান্ড। এবার বোলার ছিলেন রুমানা। মুনি-সাদারল্যান্ড জুটি ভাঙতে না পারায় অবিশ্বাস্য জয়ের সুবাস তাই বাতাসে উড়ে যায়।
লাল-সবুজের দলের হয়ে ৯ ওভারে ২৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন সালমা খাতুন। একটি করে উইকেট দখল করেন রুমানা আহমেদ ও নাহিদা আক্তার।
আগে ব্যাট করা বাংলাদেশ ওপেনিং জুটিতে ৩৩ রান তুলতে পারে। মুর্শিদা খাতুন ১৩ রান করে গার্ডনারের বলে স্কয়ারে লেগে হেইন্সের হাতে ধরা পড়েন।
ওয়ানডেতে প্রথম বাংলাদেশি নারী ক্রিকেটর হিসেবে এক হাজার রানের মাইলফলকে পা রাখা ফারজানা হক ৮ রানের বেশি করতে পারেননি। সাদারল্যান্ড বলে অ্যালিসা হিলির গ্লাভসবন্দি হন।
ওপেনার শারমিন আক্তার সুপ্তা ধীরগতির ব্যাটিং করে ৫৬ বলে ২ চারে ২৪ রান করে আউট হন। জেস জোনাসেনের বলে তিনি লেগ বিফোরে কাটা পড়েন। টাইগ্রেস অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি ৭ রান করে জোনাসেনের শিকারে পরিণত হন।
৪৫ বল খেলে ১৫ রানের ধীরগতির ইনিংস খেলেন রুমানা আহমেদ। সাজঘরে ফেরার আগে গার্ডনারের বলে জোনাসেনের ক্যাচে পরিণত হন। এর আগে তিনি লতা মণ্ডলের সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে ৩৫ রানের জুটি গড়েন।
ষষ্ঠ উইকেটে সালমা খাতুনকে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে আরও ৩৬ রান যোগ করেন লতা। শেষ ওভারে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়ার আগে লতা ৬৩ বলে ২ চারে করেন ২২ রান। সালমা ১৫ ও নাহিদা আক্তার ৩ রানে অপরাজিত থাকেন।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দুটি করে উইকেট নেন অ্যাশলেইগ গার্ডনার ও জেস জোনাসেন। একটি করে উইকেট পান মেগান স্কাট ও অ্যানাবেল সাদারল্যান্ড।