দ্বিতীয় সেটটা হারার পর চোখে পানি দেখা গেল। সেটা কী সেট হারার কারণে, নাকি ক্লান্তি আর চোটের জন্য বোঝা গেল না। কষ্ট ভুলে তৃতীয় সেটে ঠিকই দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ালেন নাওমি ওসাকা। দুই বছর পর কোর্টে ফিরেই ফাইনালে ওঠা পেত্রা কেভিতোভাকে হারিয়ে প্রথম জাপানি টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে তুলে ধরলেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের শিরোপাও।
মেলবোর্ন পার্কে শনিবার চেকোস্লোভাকিয়ার কেভিতোভাকে ৭-৬(৭-২), ৫-৭, ৬-৪ সেটে হারিয়ে প্রথম এশিয়ান হিসেবে টানা দুই গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের কীর্তি গড়লেন ওসাকা। গত বছরের শেষ গ্র্যান্ডস্লাম ইউএস ওপেনও উঠেছিল ২১ বছর বয়সী টেনিস কন্যার হাতেই।
ওসাকার দিনে রূপকথা লিখতে পারতেন দুবারের উইম্বলডন জয়ী কেভিতোভাও। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে সন্ত্রাসীর ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে দুবছরের জন্য চলে গিয়েছিলেন কোর্টের বাইরে। ফেরা হবে কিনা, ফিরলেও সেই আগের ফর্ম থাকবে কিনা, এমন সব শঙ্কা জেঁকে বসেছিল। ইংলিশ পত্রিকা গার্ডিয়ানকে জানিয়েছিলেন, ছুরিকাঘাতের পর ফিরে তার জীবনে এখন সবকিছুই নতুন। দ্বিতীয় জীবনে সবকিছুই উপভোগ করতে চান। কোর্টে যদি কিছু করতে পারেন সেটা হবে ‘বোনাস’!
এতটা বোনাস পাবেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের কোর্টে সেটা নিশ্চয় ভাবতে পারেননি কেভিতোভা। ২০১৬ সালে ছিলেন শীর্ষ বাছাই, দুই বছর পর অষ্টম বাছাই হয়ে প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম খেলতে নেমে সোজা উঠে গেলেন ফাইনালে। প্রথম সেটটা টাইব্রেকে হারলেন, দ্বিতীয় সেট পিছিয়ে থাকলেও ঠিকই ঘুরে দাঁড়ালেন।
তবে তৃতীয় সেটে কেভিতোভাকে আর ঘুরে দাঁড়াতে দেননি ওসাকা। সমানতালে চলতে থাকা সেটে একপর্যায়ে প্রতিপক্ষের সার্ভ ভেঙে শেষপর্যন্ত শিরোপাই জিতে নিলেন জাপানের নতুন সেনসেশন।
ওসাকা জিতলেন ঠিকই, কিন্তু মন জিতে নিলেন কেভিতোভাও। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের সময় দর্শক গ্যালারি থেকে উঠল ‘কেভিতোভা, কেভিতোভা’ রব। এশিয়ান নারীদের প্রথম গ্র্যান্ডস্লামজয়ী লি নার হাত থেকে শিরোপা তুলে ধরার সময় ওসাকা নিজেও স্বীকার করলেন তার প্রতিপক্ষ কোর্টে যা করতে পেরেছেন, সেটা নিয়ে সবারই গর্ব করা সাজে।
গ্র্যান্ডস্লাম জয়ী ও রানার্সআপকে ম্যাচ শেষেই সুখবর দিয়েছে ডব্লিউটিপি। শিরোপা জেতায় এখন থেকে নারীদের সেরা বাছাই হবেন ওসাকা। তার ঠিক পরেই অবস্থান কেভিতোভার।