আদালত থেকে বাসায় ফেরার অনুমতি পাওয়ার পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অসুস্থ অনুভব করায় বিশিষ্ট কলামিস্ট, কবি ও লেখক ফরহাদ মজহারকে রাজধানীর ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানকার মেডিসিন বিভাগের একজন অধ্যাপকের অধীনে ১১০৬ নম্বর কেবিনে রেখে তার চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
তার স্ত্রী ফরিদা আখতার রাতে চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, আদালত থেকে বাসায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রাস্তায় আমরা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করি। যেহেতু বারডেমে আমাদের পরিচিত চিকিৎসক রয়েছেন; তাই আমরা সেখানে যাই। সেখানে যাওয়ার পর তিনি (ফরহাদ মজহার) অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে অনেকগুলো শারীরিক পরীক্ষা দেয়া হয়েছে। সেগুলো করা হচ্ছে। এ অবস্থায় চিকিৎসক তাকে হাসপাতালে অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার জবানবন্দী শেষে সন্ধ্যার দিকে ফরহাদ মজহারকে নিজ জিম্মায় মুক্তি দেয় আদালত।
ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ঢাকার মহানগর হাকিম আহসান হাবীব তাকে মুক্তি দেন। অপহরণের বিষয়ে বিকেল সোয়া তিনটা থেকে হাকিম আহসান হাবীবের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেন ফরহাদ মজহার।
তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ফরহাদ মজহারকে নিজ জিম্মায় ১০ হাজার টাকার বন্ডে সাক্ষর নিয়ে মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর তাকে তার ভাগ্নের কাছে তুলে দেওয়া হয়।
সানাউল্লাহ মিয়া আরো জানান, আদালত বলেছেন, চাঁদার জন্য তাকে অপহরণ করা হয়েছিলো। মামলার নথি থেকে পরবর্তী মূল তথ্য দেয়া যাবে।
ফরহাদ মজহারকে মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর আদাবর থানা থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে দুপুরে তাকে নেওয়া হয় চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।
ফরহাদ মজহারকে গতরাতে যশোরের নোয়াপাড়া থেকে হানিফ পরিবহনের বাস থেকে উদ্ধারের পরে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর আদাবর থানায়। সেখানে তার সঙ্গে দেখা করেন তার পরিবারের সদস্যরা।
সোমবার ভোর ৫টা ২০ মিনিটে রাজধানীর শ্যামলী রিং রোডের ‘হক ভবন’ থেকে স্বাভাবিক পোশাকে, স্বাভাবিকভাবে হেঁটে বের হয়েছিলেন ফরহাদ মজহার। কিছুক্ষণ পরে তার স্ত্রী ফরিদা আখতারের মোবাইল ফোনে ফরহাদ মজহার নিজেই জানিয়েছিলেন, কেউ তাকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে।
সেসময় তাকে মেরে ফেলা হতে পারে বলেও আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। ফরহাদ মজহার নিয়মিত যে নম্বর ব্যবহার করেন তার বদলে মাঝেমধ্যে ব্যবহার করেন এমন নম্বর থেকে তার স্ত্রীর ফোনে ফোন আসে।
প্রয়োজন হতে পারে জানিয়ে ফোনে ফরহাদ মজহার নিজেই ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা প্রস্তুত রাখতে বলেছিলেন।
এরপর নিখোঁজ লেখক-কলামিস্ট ফরহাদ মজহারের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তার মোবাইল ট্রাকিংয়ের ম্যাধমে মোবাইলের লোকেশন সনাক্ত করে খুলনার কেডিএ অ্যাপ্রোচ রোড এলাকায় অভিযান চালায় র্যাব।
পরে রাতে যশোর থেকে উদ্ধার করা হয় ফরহাদ মজহারকে। মঙ্গলবার সকালে তাকে ঢাকা নিয়ে আসা হয়।