এবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলার রহমান দাবি করেছেন তারা অর্থপাচারের সাথে জড়িত নন। বৃহস্পতিবার বিকেলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জিজ্ঞাসাবাদের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তারা এমন দাবি করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৯টায় তিনি দুদক কাযার্লয়ে এলে এম ওয়াহিদুল হককে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন কমিশনের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নের্তৃত্বাধীন একটি দল।
টানা ৭ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর বিকেল সাড়ে ৪ টায় দুদক কার্যালয় থেকে বের হয়ে এম ওয়াহিদুল হক বলেন: যা বলার দুদককে বলেছি। বিষয়টি তদন্তাধীন। এর বেশি কিছু বলতে চাই না।
আপনি অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন: না, আমি এর সাথে জড়িত নই।
বিকেল ৫টার কিছু সময় পর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুদক থেকে বের হন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলার রহমান। তিনিও সাংবাদিকদের প্রায় একই কথা বলেন। ফজলার রহমান বলেন: আমরা যা বলার দুদককে বলেছি। অর্থপাচারের সাথে আপনি সম্পৃক্ত কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
কত টাকা পাচারের অভিযোগে আপনাদের দুদক তলব করেছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন: টাকার পরিমাণ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাগজপত্রে উল্লেখ করা আছে, আপনারা সেখান থেকে জেনে নিতে পারেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে একটি অফশোর প্রতিষ্ঠান তৈরি করে ১৬৫ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে এবি ব্যাংকের এই দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে দুদক।
তারা বাদে আরো ৭ সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাকে তলব করা হয়। এরমধ্যে রয়েছেন ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামিম আহমেদ চৌধুরী, হেড অব ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউট অ্যান্ড ট্রেজারি আবু হেনা মোস্তফা কামাল, হেড অব কর্পোরেট মাহফুজ উল ইসলাম, হেড অব অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট (ওবিইউ) মোহাম্মদ লোকমান, ওবিইউ এর কর্মকর্তা মো. আরিফ নেয়াজ, ব্যাংক কোম্পানি সেক্রেটারি মাহদেব সরকার সুমন এবং প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তা এম এন আজিম।
গত ১০ ডিসেম্বর তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তথ্য চেয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে নোটিশ পাঠায় দুদক। এর আগে, বুধবার ওয়াহিদুল হকসহ এই ৯ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে চিঠি পাঠায় দুদক।
গত ১০ ডিসেম্বর তদন্ত সংশ্লিষ্ট তথ্য চেয়ে ব্যাংকটির এমডির কাছে চিঠি দেন দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল। এরপর ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর ওয়াহিদুল হক ফজলুর রহমান, শামিম আহমেদ এবং মোস্তফা কামালকে দুদকে হাজির হতে বলা হয়। কিন্তু তারা হাজির না হয়ে দুদকে উপস্থিত হতে সময়ের আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে আবারো তাদের হাজির হতে চিঠি পাঠানো হয় বুধবার।
ওই চিঠিতে ওয়াহিদুল হক ও ফজলুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বৃহস্পতিবার সকালে ডাকা হয়। আর শামিম আহমেদ ও মোস্তফা কামালকে ৩১ ডিসেম্বর হাজির হতে বলা হয়। বাকিদের আগামী ২ জানুয়ারি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে।
মালিকানা পরিবর্তনের গুঞ্জনের মধ্যে গত ২১ ডিসেম্বর এবি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব ছাড়েন ওয়াহিদুল হক।