চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

অমানবিকতার বিরুদ্ধে হাইকোর্টের জিরো টলারেন্স

দেশের বিচার ব্যবস্থায় সাধারণ মানুষের অন্যতম ভরসাস্থল হাইকোর্ট। বিভিন্ন সময় হাইকোর্টের রায়ে মানবিকতা পেয়েছে তার স্বকীয়তা। সম্প্রতি দুটি রায়ে হাইকোর্টের ন্যায়বিচারের আবারও জাতীয়ভাবে সামনে চলে এসেছে।

এই রায়ের মধ্যে অন্যতম হলো- ‘ভুল আসামি’ হয়ে ২৬ মামলায় প্রায় ৩ বছর কারাগারে থাকা পাটকল শ্রমিক জাহালমকে সব মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে আজই মুক্তির নির্দেশ দেয়া।

শুধু তাই নয়, ‘ভুল আসামি’ হিসেবে জাহালমের গ্রেপ্তারের ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে দুদক চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি, মামলার বাদী দুদক কর্মকর্তা, স্বরাষ্ট্র সচিবের প্রতিনিধি ও আইন সচিবের প্রতিনিধিকে ৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় সশরীরে হাইকোর্টে হাজির থাকার নির্দেশ দেন আদালত। তাদের উপস্থিতিতে হাইকোর্ট জাহালমকে আজই মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দেন।

এর আগেও ‘ভুল মামলা’, ‘ভুল আসামি’ কিংবা নিম্ন আদালতের ‘ভুল বিচারে’ অনেক নিরাপরাধ ব্যক্তির বছরের পর বছর কারাগারে থাকার খবর আমরা দেখেছি। পরবর্তীতে বিষয়গুলো হাইকোর্টের নজরে আসলে তারা ন্যায় বিচারও পেয়েছেন। হাইকোর্টের এমন কর্মকাণ্ড ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে আমরা আশা করি।

হাইকোর্ট শুধু মানুষের ক্ষেত্রেই মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন বিষয়টা এমন নয়। বরং প্রাণীর অধিকারকে ছাপিয়ে দেশের নদ-নদীগুলোকেও আইনি অধিকার পাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন একটি রায়ে। তুরাগ নদী রক্ষা সংক্রান্ত রিট মামলার রায়ে তুরাগ নদীসহ দেশের সব নদ-নদীকে ‘লিগ্যাল পার্সন’ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।

এই রায়ে হাইকোর্ট গণমাধ্যমের বিষয়েও কথা বলেছেন। হাইকোর্ট বলেছেন: ‌‘সংবাদপত্র সমাজের নানা অনিয়মের তথ্য তুলে না ধরলে আমরা সেসব অনিয়ম সম্পর্কে জানতেই পারতাম না। সাংবাদিকরাই হচ্ছেন সমাজের হুইসেল ব্লোয়ার (বংশীবাদক)। আমরা সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানাই। এবং সাংবাদিকদের কাছ থেকে আরো (ইফেকটিভ) কার্যকর সাংবাদিকতা প্রত্যাশা করি।’

হাইকোর্টের এ পর্যবেক্ষণ আমাদেরকে আশাবাদী করেছে। কারণ, ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণে নিরন্তর কাজ করে চলেছে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন। চ্যানেল আইয়ে প্রচারিত ধারাবাহিক প্রামাণ্য অনুষ্ঠান প্রকৃতি ও জীবন মানুষের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করেছে। তুলে ধরেছে নদী-সাগর, পাহাড়, বন, বন্যপ্রাণী সম্পর্কে গবেষণাধর্মী তথ্য এবং এসব সংরক্ষণেরও উপায়।

সংবাদমাধ্যমকে নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে কাজ করতে হয়। হাইকোর্টের এ স্বীকৃতি ও উৎসাহের ফলে অন্য গণমাধ্যমগুলোও আরও ব্যাপক আকারে কার্যকর সাংবাদিকতায় এগিয়ে আসবে বলে আমরা মনে করি। এছাড়া হাইকোর্টও সবসময় নির্যাতিত ও মানবিকতার পক্ষে স্বকীয় সত্ত্বা বজায় রাখবেন বলেই আমরা আশা করি।