তাইজুলের পর সাকিবের জোড়া আঘাত একই ওভারে। পরে কিছু ক্যাচ-স্টাম্পিং সুযোগ হাতছাড়া আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যানদের রিভিউ নিয়ে বেঁচে যাওয়া। সফরকারীরা তাতে যখন একটু তল খুঁজে পাচ্ছিল, তখনই আবারও হামলে পড়েছে বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণ।
টপাটপ দুটো উইকেট তুলে অভিষিক্ত নাঈম হাসান আরও বিপদে ঠেলে দিয়েছেন ক্যারিবীয়দের। এই ১৭ বর্ষী অফস্পিনার সাজঘরে পাঠিয়েছেন সুনিল আমব্রিস (১৯) ও রোস্টন চেসকে (৩১)।
বাংলাদেশ-৩২৪, উইন্ডিজ-১৮৭/৬ (চা বিরতি)
অভিষিক্ত অফস্পিনার নাঈম নিজের তৃতীয় ওভারেই পান সাফল্য। তার প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেট রোস্টন চেস। লেগস্টাম্পের বল ডিফেন্স করতে গেলে চেসের ব্যাট-প্যাড ছুঁয়ে সেটি শর্ট লেগে ইমরুলের তালুতে জমা পড়ে।
পরের ওভারে নাঈমের অফস্টাম্পের বাইরে পড়ে ভেতরে আসতে থাকা বলে লাইন মিস করেন আমব্রিস। বল প্যাডে আঘাত হানলে আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেন। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি আগে দুবার জীবন পাওয়া এ ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
বাংলাদেশকে গুটিয়ে দেয়ার পর চট্টগ্রাম টেস্টে ব্যাটিংয়ে নেমেই টাইগার স্পিনারদের তোপে পড়ে উইন্ডিজ। তাইজুলের পর সাকিবের জোড়া আঘাতে রীতিমতো কাঁপতে থাকে সফরকারীদের ব্যাটিং লাইনআপ।
শুক্রবার জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় দিনের সকালে ৩২৪ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। ব্যাটিংয়ে নেমে ৩১ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে উইন্ডিজ।
মিরাজের বলে আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেয়ার পর রিভিউ নিয়ে বাঁচা কাইরেন পাওয়েলকে ফিরিয়ে ক্যারিবীয় ইনিংসে প্রথম আঘাত হানেন তাইজুল। বাঁহাতি এ স্পিনার পাওয়েলকে এলবিডব্লিউর ফাঁদেই ফেলেন। প্যাডেল সুইপ খেলতে যেয়ে তাইজুলের ভেতরে ঢোকা বলে লাইন মিস করা পাওয়েল (১৪) রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি।
চোট কাটিয়ে এ ম্যাচেই ফেরা সাকিব আল হাসান এরপর জোড়া সাফল্যে ভাসান টাইগারদের। আক্রমণে এসে নিজের প্রথম বলেই উইকেট পেয়েছেন। বোল্ড করেন শাই হোপকে (১)।
ইনিংসের ১২তম সেই ওভারের শেষ বলে ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে ফেরান সাকিব। ১২ রান করা ক্যারিবীয় ওপেনারকে স্লিপে সৌম্যর তালুবন্দী করেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক।
সকালে দুই টেলএন্ডার তাইজুল ইসলাম ও অভিষিক্ত নাঈম হাসানের প্রতিরোধ ২৮ বল পর্যন্ত গড়ায়। আগের দিনের সঙ্গে আর ৯ রান যোগ করে প্রথম ইনিংসে ৩২৪ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।
শুরুর চার ওভার দুই পেসার কেমার রোচ ও শ্যানন গ্যাব্রিয়েলকে দিয়ে করিয়েছেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক কার্লোস ব্র্যাথওয়েট। দুই পেসারকে ভালোই সামলাচ্ছিলেন তাইজুল ও নাঈম। কিন্তু ৯৩তম ওভারে স্পিনার জোয়েল ওয়ারিকেনকে আনতেই সর্বনাশ!
ওভারের প্রথম বলে ২৬ রান করা নাঈমকে স্লিপে শাই হোপসের ক্যাচে পরিণত করে ৬৫ রানের জুটি ভাঙ্গেন ওয়ারিকেন। তিন বল পর এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন মোস্তাফিজ। এই তিন বলের মাঝখানে একবার রিভিউ নিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন মোস্তাফিজ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অবশ্য বিপদ ঠেকান যায়নি।
ক্যারিয়ার সেরা ৩৯ রানে অপরাজিত থেকে অন্যপ্রান্তে দুই সতীর্থদের আসা-যাওয়া দেখেছেন তাইজুল।
জোড়া উইকেট শিকারে ওয়ারিকেন তার ইনিংস শেষ করেছেন ৪ উইকেট। আগের দিনে বাংলাদেশের হন্তারক গ্যাব্রিয়েলের শিকার সেই ৪ উইকেটেই।
মুমিনুল হকের ১২০ রানে ভর করে বৃহস্পতিবার ৮ উইকেটে ৩১৫ রানে দিন শেষ করেছিল বাংলাদেশ। চোট থেকে ফিরে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান করেন ৩৪। আর ওপেনার ইমরুল কায়েসের ব্যাটে আসে ৪৪ রান।