মানব পাচার এবং অবৈধ অভিবাসন সমস্যা সমাধানে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের সম্মেলনের প্রথম পর্ব অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে।
মে মাসের শুরুতে থাইল্যান্ডের গভীর জঙ্গলে অভিবাসীদের বেশ কয়েকটি গণকবরের সন্ধান বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ায় পাড়ি জমানোর আশায় সাগরে ভাসতে থাকে আরো বহু মানুষ। এরই মাঝেই মালয়েশিয়ার থাইল্যান্ড সীমান্তের জঙ্গলেও উদ্ধার হয় ১৪০টি মৃতদেহ।
অভিবাসী সমস্যার সম্ভাব্য সমাধানের আশায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ান থাইল্যান্ডে বৈঠকে বসে। এতে যোগ দেন বাংলাদেশ, জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থা, উদ্বাস্তু বিষয়ক হাই কমিশন এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা। সম্মেলনে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ বলেছে, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা ইস্যুর সমাধান না হলে এই অঞ্চলে অভিবাসী সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে না। মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য অতিরিক্ত বোঝা বলেছে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা।
সম্মেলনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ দেশের প্রতিনিধিরা রোহিঙ্গা অভিবাসী সমস্যার জন্য মিয়ানমারকে দায়ী করেছে।
বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক হাই কমিশন বলছে, সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের মূল জায়গায় যেতে হবে। এর জন্য দায়িত্ব নিতে হবে মিয়ানমারকেই। এ সম্মেলনে রোহিঙ্গাদের কোনো প্রতিনিধি নেই। মিয়ানমার হুমকি দিয়েছিল, রোহিঙ্গারা থাকলে তারা সম্মেলন বর্জন করবে।
মিয়ানমারের কর্মকর্তারা অভিবাসী বিষয় নিয়ে জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের মন্তব্যকে ‘রাজনীতিকীকরণ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। মিয়ানমারের মতে, কিছু বিষয় দেশের আভ্যন্তরীণ।
ইউএনএইচসিআর সারাবিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই অভিবাসী সমস্যা এবং গৃহহীনতার মূল কারণ হিসেবে বিবেচনা করছে মিয়ানমারকে। তাদের সেই দাবির ব্যখ্যা দিতে গিয়ে বৈঠকে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিরেক্টর-জেনারেল এইচটিআইএন লিন বলেন, ‘অবৈধ ভাসমান মানুষের এই সমস্যাকে কেবল আমাদের দেশের সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করা ঠিক হবে না।’
মিয়ানমার ১.৩ মিলিয়ন রোহিঙ্গাকে তাদের নাগরিক হিসেবে গ্রহণই করতে চায়না, এমনকি তাদের অফিশিয়াল ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী হিসেবেও বিবেচনা করতে চায়না। রোহিঙ্গাদের তারা বাংলাদেশী হিসেবেই বিবেচনা করে আসছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো সমস্যা সমাধান এবং রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধে মায়ানমারকে চাপ প্রয়োগের আহবান জানিয়েছে।