চট্টগ্রামের একমাত্র দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের সঙ্গে দেশের মূলখণ্ডের যাতায়াত সমস্যা ও যাত্রী হয়রানী নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোকে বারবার অবহিত করা হলেও সমস্যার কোন সমাধান হয়নি। বরং সন্দ্বীপে আসা যাওয়ার প্রধান ফেরীঘাট কুমিরা-গুপ্তছড়া ঘাটের পরিচালনা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের নজিরবিহীন অব্যবস্থাপনা এবং উদাসীনতা সন্দ্বীপবাসীকে হতবাক করেছে।
প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী এই রুটে আসা যাওয়া করে। জেলা পরিষদের সব চেয়ে বড় বাজেটের এই ঘাট অব্যবস্থাপনা ও স্বেচ্ছাচারিতায় ডুবে আছে অনেক বছর ধরে। এই নিয়ে জেলা পরিষদ বা জনপ্রতিনিধি কারো মাথা ব্যথা নেই। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় সন্দ্বীপবাসীর।
অতিরিক্ত ভাড়া, খারাপ আচরণ, টিকেট কাউন্টারের অব্যবস্থাপনাসহ যাত্রীদের অভিযোগ অনেক। শীত মৌসুম আর বছরের শেষ দিক হওয়ায় ঘরমুখি যাত্রীদের ভীড় প্রচুর। পরিবার পরিজন নিয়ে বেড়াতে আসাদের তাই পড়তে হচ্ছে নানা সমস্যায়।
গুপ্তছড়া ঘাটের নিয়মিত একজন যাত্রী রাসেদ আবীর, চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ঢাকা থেকে আসা ১৬ জন অতিথি এবং তাদের সাথে ৩ জন বাচ্চার টিকেট নেয়ার পরও স্পীড বোটে উঠার পর তাদের সাথে থাকা লাগেজ বাবদ এক টিকেটের টাকা দিতে হয়েছে। বোট ছাড়ার পূর্ব মুহূর্তে অনেকটা ব্ল্যাকমেইল করে এভাবেই টাকা আদায়ের অভিযোগ মেলে নিয়মিত।
নুরনবী শাকিল নামের একজন যাত্রী নিজের ফেইসবুকে লিখেছেন, সকাল ৮ টায় ঘাটে গিয়ে নিয়ম মেনে টিকেট করতে যেয়ে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১২ টা পর্যন্ত। ৫০/১০০ টাকার বিনিময়ে সিরিয়াল ছাড়া টিকেট দেয়া হয়েছে অনেককে। তাদের দুই জনের সাথে থাকা ৪০ কেজি ওজনের জন্য দেড় টিকেটের চাপ দেয়ার কথাও লিখেছেন তিনি।
ঘাট কর্মচারিদের কাছে এক প্রকার জিম্মি সন্দ্বীপবাসী অতিরিক্ত টাকা আদায়ের সাথে সাথে পরিবার পরিজনের সামনেই অশোভন আচরণ বিব্রত করছে অনেককে।
দিনে হাজার হাজার যাত্রী চলাচল করলেও টিকেট কাউন্টারে নেই কোন সঠিক ব্যবস্থাপনা। সিরিয়াল আর টিকেট সংগ্রহে ভোগান্তি লেগে আছে সব সময়।
এই নিয়ে ইজারাদারসহ চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে একাধিক বার অবহিত করা হলেও পাল্টাইনি ভোগান্তির চিত্র। বিআইডব্লিউটিসি ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের ঘাট নিয়ে বিবাদ চলমান থাকায় অনেকটা অভিবাবক হীন এই রুট।
অভিভাবকহীন এই ঘাট সন্দ্বীপবাসির জন্য মাঝে মাঝে চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায় বিকল্প ঘাটগুলোতে ভালো সুবিধা না থাকায় সাধারণ যাত্রীরা এই ঘাটের বিকল্প পাচ্ছেনা আর এই সুযোগটা নিচ্ছে ইজারাদার।
অভিযোগ আছে সরকারি জেটি থেকে কৌশলে ইজারাদার বছরে হাতিয়ে নিচ্ছে অর্ধ কোটি টাকা। সে সঙ্গে স্পীড বোটের যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত মালের দোহাই দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে প্রতিদিন।
সন্দ্বীপবাসীর চাওয়া জনগুরুত্বপূর্ণ এই ঘাটে শৃংখলা আনতে জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।