ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন: অবৈধভাবে ডিএনসিসির বিভিন্ন স্থাপনা দখল করে রাখা কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। যে কোন সময়ে এসকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হতে পারে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মিরপুর সেকশন ১১ এর এভিনিউ ৩ এর ৪ নম্বর রোডে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ পরিদর্শন করেন ডিএনসিসি মেয়র।
এসময় তিনি বলেন: এটি দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত রাস্তা, কিন্তু আমরা এতদিন প্রশস্ত করতে পারেনি। আমরা কালশীর রাস্তা বেশ প্রশস্ত করে নির্মাণ করেছি। আজকে যে রাস্তাটিতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চলছে, এটি একটি সংযোগ সড়ক। অনেক আগেই এই সড়কটি প্রশস্ত করার কথা থাকলেও আমরা করতে পারিনি। আজকে এই এলাকার জনগণের সহায়তায় এই রাস্তাটি অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার করেছি। এই রাস্তার প্রশস্ততা ৬৫ ফুট থেকে ৭৫ ফুট। অবৈধ দখল থেকে উদ্ধার করে এটি আমরা প্রশস্ত করবো। এর ফলে মিরপুর থেকে এই রাস্তা দিয়ে খুব সহজে এয়ারপোর্টের দিকে যাওয়া যাবে। এটি হবে একটি কানেকটিং রোড।
মেয়র আরও বলেন: আপনারা দেখেছেন আমরা কিছুদিন আগে ভাষানটেক বাজার থেকে পকেট গেটের দিকে রাস্তার দুই পাশে বেশ কিছু বাড়িঘর ভেঙে রাস্তাটি প্রশস্ত করেছি। সেখানে এমনকি স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের বাড়িও রেহাই পায়নি। পকেট গেটে থাকা যে বাড়িটির কারণে দীর্ঘ যানযট হতো তা কিনে নিয়ে ভেঙে দিয়েছি। এর ফলে সেখানে যে দীর্ঘ যানজট থাকতো, এখন তা আর হচ্ছে না। আমাদের আজকের মেসেজ হচ্ছে, অবৈধ দখলদার যে-ই হোক না কেন কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। জনগণের জন্যই এই রাস্তায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে চওড়া করা হচ্ছে, কারো ব্যক্তি স্বার্থে নয়।
দখলদারদের নোটিস প্রদান প্রসঙ্গে মেয়র বলেন: সরকারের বৈধ জায়গা অবৈধভাবে দখল করে রাখলে নোটিস ছাড়াই উচ্ছেদ করা হবে। নোটিস দিতে গেলে ঢাকা শহরে কোন কাজ করা যাবে না। অবৈধভাবে দখল করে রাখলে সে জন্য আমি দায়ী না, সিটি করপোরেশন দায়ী না, বরং যে দখল করে রেখেছে সে-ই দায়ী”।
আতিকুল ইসলাম আরও বলেন: এই সড়কের পূর্ব ও পশ্চিমে – দুই দিকেই রাস্তা প্রশস্ত করা হয়েছে, মাঝখানের এই অংশটুকু বাকি ছিল। এই সড়কটি একটি বাইপাস। এটি ওপেন করা হলে খুব সহজেই মিরপুর থেকে উত্তরার দিকে যাওয়া যাবে। এই সড়কের শেষ প্রান্তে থাকা ট্রাক স্ট্যান্ডও সরানো হবে। ট্রাক স্ট্যান্ডের জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা করা হবে।
এই উচ্ছেদের পরপরই এই রাস্তা প্রশস্ত করার কাজ শুরু হবে এবং কালশীর প্যারালাল রোড হিসেবে এটি ব্যবহৃত হবে। এর ফলে বিমান বন্দরের দিকে খুব সহজেই যাওয়া যাবে বলে মেয়র জানান।
উচ্ছেদ অভিযান সফল করায় মেয়র স্থানীয় জনসাধারণ, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের ধন্যবাদ জানান।
ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (অঞ্চল ২) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এ এস এম সফিউল আজম ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ এই উচ্ছেদ অভিযানের নেতৃত্ব দেন। সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এই উচ্ছেদ অভিযানে ৪ নম্বর সড়কের দুই পাশে প্রায় চার শতাধিক স্থায়ী, অস্থায়ী, ভাসমান স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এর মধ্যে কোনটি টিনের আবার কোন কোনটি ইট-সিমেন্টের তৈরি পাকা ঘর, দোকান-পাট, তোরন, শেড ইত্যাদি ছিল। ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযানস্থলে উপস্থিত থেকে অভিযানে দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন।
উচ্ছেদ অভিযানে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিরুল ইসলাম, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হকসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।