২০১৩ সালে মাতৃদুগ্ধ বিকল্প শিশু খাদ্য ও বিপণন নিয়ন্ত্রণ আইন হলেও এর প্রচার নেই। বিকল্প শিশু খাদ্য অবাধে প্রদর্শন নিষিদ্ধ হলেও উপঢৌকন দিয়ে গ্রামে ও শহরের বাজারে, দোকানে, শপিংমলে সব জায়গাতেই পাওয়া যাচ্ছে কৃত্রিম শিশু খাদ্য। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অবাধে কৃত্রিম শিশু খাদ্য প্রদর্শন এবং বিক্রয় নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণে দেশে শক্তিশালী কোনো ব্যবস্থাই নেই।
খাজা রাঈদের বয়স এখন সাত মাস। শিশুটির জন্ম হয়েছিলো গভের্র সাত মাসে। মাত্র দুই কেজি ওজনে জন্ম নেওয়ায় ইনকিউবিটরে বিশেষ পরিচর্যায় বেড়ে উঠা শিশুটি ছিলো ঝুকিঁতে। কিন্তু শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর কারণেই রাঈদের স্বাভাবিক ওজন ও বৃদ্ধি দ্রুত হয়েছে। কিন্তু সব শিশুই এরকম সচেতন যত্ন পায় না। শিশু খেতে চায় না, মায়ের বুকের দুধ পাচ্ছে না, এরকম নানা অজুহাতে অনেক শিশুকেই মায়ের বুকের দুধ না খাইয়ে কৌটার দুধ খাওয়াচ্ছেন মায়েরা।
চিকিৎসকদের মতে, জন্মের সময় শিশুর ওজন আড়াই কেজির নিচে হলে সেপটিসেমিয়াসহ বিভিন্ন জটিল রোগের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকে অপরিণত শিশু।
বাংলাদেশ পেড্রিয়াটিক এ্যাসোসিয়েশন-বিপিএর শিশু বিশেষজ্ঞ ও মহাসচিব, অধ্যাপক ডা. এম এ কে আজাদ চৌধুরী, বলেন, প্যাকেটজাত দুধগুলোতে নানা রকম জীবাণু থাকতে পারে, যে সমস্ত উপাদানের কথা বলা হয় তা না থাকতে পারে।এক্ষেত্রে আইনের প্রচারনা থাকা উচিত।বাংলাদেশ স্টান্ড্যাড এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউট-বিএসটিআইকে শক্তিশালী করার পরামর্শ দেন তিনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কৃত্রিম বিকল্প শিশু খাদ্যের ক্ষতি সম্পর্কে শক্তিশালী কোনো প্রচারণাই নেই। তবে দোকানীরা জানান, কুত্রিম দুধের ক্রেতা বাজারে রয়েছে। সেই সঙ্গে শিশু খাদ্য বিক্রি করলে উপঢৌকন, ও মাসিক টাকা মেলে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিকল্প কৌটাজাত শিশু খাদ্য কোনোটিই পুরোপুরি জীবাণুমুক্ত নয়। কোম্পানিগুলোকে এই তথ্যটিও প্রচারের নির্দেশনা রয়েছে।
জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক, ডা. কামরুল ইসলাম, জানান বিধি নেই এই অজুহাতে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না বলছে জনাস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান। তারা আরো জানায়, মাতৃদুগ্ধের বিকল্প খাবার বিপণনের সময় সম্পূর্ণভাবে আমরা তদারকি করবো।
শিশু খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ পেড্রিয়াটিক এ্যাসোসিয়েশন, বিপিএ।